শ্বাসকষ্ট আধুনিক চিকিৎসায় কি সম্পুর্ন ভাল হয়? যদি তা না হয় তবে কি ভবিষ্যতে এমন কোন চিকিৎসা আসবে যাতে হাপানী/শ্বাসকষ্ট সম্পূর্ন নিরাময় হবে?


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Unknown

Call

শ্বাসকষ্ট আধুকিন চিকিৎসায় ভালো হওয়া সম্ভব তবে জানতে হবে ঠিক কি কারনে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এজমা নাকি নিউমোনিয়া নাকি অন্যান্য কারন বসত।তবে যেকারনেই হোক না কেন শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসক এর কাছে যাওয়া উচিৎ এবং শুধু চিকিৎসা ও ঔষধ খেয়েই শ্বাসকষ্ট কে নিয়ন্ত্রণ এ রাখা হয় কিন্তু মূলত এর কারন কি অর্থাৎ আপনার ঠিক কি কারনে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এটা জানা জরুরী আর সেটি উপেক্ষা করেই চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী জীবন স্বাভাবিক জীবন যাপন করার মাধ্যমেই শ্বাসকষ্ট নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হবে। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

হাঁপানি বা অ্যাজমা একটি ফুসফুসজনিত রোগ। এর ফলে শ্বাসকষ্ট হয়। হাঁপানি অনেক সময় তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ফুসফুসে বায়ু প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হলেই হাঁপানির আক্রমণ ঘটতে পারে। অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট এমন একটা রোগ যার নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। এটা সাধারণত এলার্জি, বায়ু দূষণ, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, আবেগ, আবহাওয়া,  খাদ্য ও নির্দিষ্ট ওষুধের  কারণেও হতে পারে। এখন প্রকৃতিতে যেহেতু ধুলাবালির পরিমাণ বেশি তাই হাঁপানি রোগীদের একটু সাবধানে থাকতে হবে। কারণ হাঁপানি রোগীদের জন্য ধুলোবালি অত্যন্ত ক্ষতিকর। অ্যাজমা বা হাঁপানির অনেক চিকিৎসা রয়েছে। তবে এখন আপনি চাইলে খুব সহজে ওষুধ ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে পরিত্রাণ পেতে পারেন হাঁপানির হাত থেকে।

আদা : আদা হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগের জন্য একটি সুপরিচিত প্রাকৃতিক চিকিৎসা। গবেষকদের মতে, আদা শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে এবং শ্বাসনালী সংকোচন রোধে সাহায্য করে। এক কাপ ফুটন্ত পানির মধ্যে মেথি, আদার রস ও মধু দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে।

রোজ সকালে ও সন্ধ্যায় এই মিশ্রণটি পান করলে সমাধান পাওয়া যাবে। এছাড়া আপনি কাঁচা আদা লবণ দিয়ে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।

কফি : কফি হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত গরম কফি পান করলে শ্বাসনালী পরিষ্কার হবে। কিন্তু দিনে তিন কাপের বেশি ব্ল্যাক কফি খাওয়া উচিত না।

যদিও হাঁপানির নিয়মিত চিকিৎসা হিসেবে কফি ব্যবহার করা উচিত না।

সরিষার তেল : যখনই দেখবেন অ্যাজমা বা হাঁপানির আক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে তখনি একটি বাটি মধ্যে একটু কর্পূর এবং সরিষার তেল নিয়ে গরম করুন। এরপর আলতো করে বুকে এবং পিঠে ম্যাসেজ করতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত উপসর্গ প্রশমিত হয় ততোক্ষণ ম্যাসেজ করতে হবে। এর ফলে শ্বাসনালীর প্যাসেজ পরিষ্কার এবং স্বাভাবিক শ্বাস ফিরে পেতে সাহায্য করবে। ঘরোয়া উপায়ে হাঁপানি প্রতিকারের এটি খুবই কার্যকরি পদ্ধতি।

রসুন :  রসুন হাঁপানি প্রতিরোধে প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে কাজ করে। হাঁপানির একটি বিকল্প চিকিৎসা হিসাবে রসুন ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই অ্যাজমা রোগীদের বেশি করে রসুন খাওয়া উচিত।

ডুমুর : ডুমুর কফ ড্রেন এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা উপশমে সাহায্য করে। তিনটি শুকনো ডুমুর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে একটি পাত্রে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে খালি পেটে সে ডুমুর ভিজানো পানি এবং ডুমুর খেয়ে নিতে পারেন। কয়েক মাস বাড়িতেই এ চিকিৎসা চালিয়ে গেলে অবশ্যই ফল পাবেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

অ্যাজমার প্রধান উপসর্গ হচ্ছে শ্বাসকষ্ট। এ জাতীয় রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশির ভাগ সময় তারা মধ্যরাতে বা ভোরের দিকে ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসে থাকে। কারণ সে সময় তাদের শ্বাস টানতে এবং ছাড়তে ভীষণ কষ্ট হয়। বুকের মধ্যে আঁটসাঁটভাবে এবং বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ হয়। যারা রোগীর পাশে এ সময় থাকেন তাদের কানেও আওয়াজ যায়। রোগীর সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়। ছোট শিশুদের জন্য এটি অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। বাচ্চাদের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাবা, মা এবং পুরো পরিবারই সারা রাত জেগে থাকে। সাধারণত ভোরের দিকে এ রোগের আক্রমণ শুরু হলেও যারা এ রোগে নতুন আক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে দিনের যে কোনো সময় হাঁপানি হতে পারে। হাঁপানি বা অ্যাজমা শুরুতে অল্প পরিমাণের শ্বাসকষ্ট হয়, যা পরক্ষণে দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়। যে সব রোগী অনেক দিন ধরে হাঁপানি রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থা এক ধরনের। যারা হঠাৎ বা নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থা আলাদা, তবে নতুন এবং পুরানো রোগীদের ক্ষেত্রে ইনহেলারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনহেলার অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের জন্য একটি কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থা। এ যন্ত্রের সাহায্যে খুব সহজেই শ্বাসের সঙ্গে ওষুধ টেনে নেওয়া যায়। ইনহেলার ছাড়া এসব রোগীর মুখে সেবনের যে ধরনের ওষুধ রয়েছে সেগুলো সেবন করলে রোগীদের ঘুমের পরিমাণ কমে যায়। কোনো শ্বাসকষ্টের রোগীর যদি ইনহেলার ব্যবহার করেও শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, তবে তাকে মুখে সেবনের ট্যাবলেট বা ক্ষেত্র বিশেষে ইনজেকশন দেওয়া হয়। মনে রাখতে হবে এসব ক্ষেত্রে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম। তাই এ বিষয়ে অবহেলা না করে আমাদের সচেতন হতে হবে। তাই অবহেলা না করে ডাক্তার এর পরামর্শ নিন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Ovictg99

Call

সারা বিশ্বের প্রায় ১০ কোটি লোক শ্বাসনালীর সচরাচর সমস্যা-হাঁপানি বা এ্যাজমায় আক্রান্ত। এদের ৯০% এরও বেশি অত্যাধুনিক চিকিৎসা পায় না এবং প্রতি বছর অনেক রোগী মারা যায় । যদিও এ মৃত্যুর ৮০% প্রতিরোধ করা সম্ভব, যদি আধুনিক চিকিৎসা ও ডাক্তারের তদারকির মাধ্যমে এ্যাজমা নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দেয়া যায় । 

এ্যাজমা ব্যাপারটা কি : এ্যাজমা বা হাঁপানি আসলে শ্বাসনালীর অসুখ। যদি কোন কারনে শ্বাসনালীগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীন (হাইপারসেনসিটিভ) হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত হয় তখন বাতাস চলাচলের পথে বাধার সৃষ্টি হয়, ফলে শ্বাস নিতে বা ফেলতে কষ্ট হয় । 
এ্যাজমা রোগের প্রধান উপসর্গ বা লক্ষনগুলো হলোঃ বুকের ভেতর বাশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ, শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট, দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা, ঘন ঘন কাশি, বুকে আঁটসাট বা দম বন্ধ ভাব, রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকা, বছরের বেশির ভাগ সময় ঠান্ডা সর্দি লেগে থাকা, নাকে চুলকানি এবং অসহনীয় হাঁচি।
কেন হয়? : জেনেটিক ও পরিবেশগত এলার্জির কারনে কারও কারও বেশি হয়ে থাকে। ঘর-বাড়ির ধুলো ময়লায় মাইট, জিবানু, ফুলের বা ঘাসের পরাগ রেণু, পাখির পালক, জীব-জন্তুর পশম, ছত্রাক, কিছু কিছু খাবার, কিছু কিছু ওষুধ, নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি থেকে এলার্জি জনিত এ্যাজমা হয়ে থাকে। 
কাদের হতে পারে এ্যাজমা বা হাঁপানি : যে কোন বয়সের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর যে কারো হতে পারে। যাদের রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের হাঁপানি আছে তাদের এ রোগ হবার আশঙ্কা প্রবল। আবার দাদা-দাদীর থাকলে (বাবা-মা’র না থাকলেও) নাতি-নাতনী বা তাদের ছেলেমেয়েরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। পিতৃকুলের চেয়ে মাতৃকুল থেকে হাঁপানিতে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে এ্যাজমা বা হাঁপানীর মূল কারণ কিন্তু এলার্জি ।
প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা: রক্তের বিশেষ বিশেষ পরীক্ষাঃ বিশেষত রক্তে ইয়োসিনোফিল ও সিরাম আইজিই। 
স্কিন প্রিক টেস্টঃ এই পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার উপর বিভিন্ন এলার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে (এ্যাজমার জন্য দায়ী) ধরা পড়ে। 
বুকের এক্স-রেঃ হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই বুকের এক্স-রে করে নেয়া দরকার যে অন্য কোন কারনে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা । 
স্পাইরোমেট্রি বা ফুসফুসের ক্ষমতা দেখাঃ এই পরীক্ষা করে রোগীর ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায় । 
সমন্বিতভাবে এ্যাজমা বা হাঁপানীর চিকিৎসা হলোঃ
এলার্জেন পরিহারঃ এ্যাজমা বা হাঁপানির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো, যে এলার্জি থেকে শ্বাসকষ্ট হয় তা যতদুর সম্ভব এড়িয়ে চলা। তাই এ্যাজমা রোগীদের প্রথমেই এলার্জি টেস্ট করে জানা দরকার কোন ধরনের এলার্জি দিয়ে শ্বাসকষ্ট হয় । 
ওষুধ প্রয়োগঃ নানা ধরনের এ্যাজমার ওষুধ আছে বাজারে। ডাক্তার দেখিয়ে প্রয়োজন মতো ওষুধ ব্যবহার করে রোগী সুস্থ থাকতে পারেন ।
এলার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপিঃ এলার্জি দ্রব্যাদি এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও এ্যাজমা রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি । এলার্জি ভ্যাকসিনের মূল উদ্দেশ্য হলো যে এলার্জেন দিয়ে এ্যাজমা বা হাঁপানীর সমস্যা হচ্ছে সেই এলার্জেন স্বল্পমাত্রায় প্রয়োগ করা হয়, যা পরবর্তিতে ঐ এলার্জেন দিয়ে রোগী শ্বাসকষ্টে বা এ্যাজমাতে যেন আক্রান্ত না হয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। আমেরিকান একাডেমী অব এলার্জি এ্যাজমা এন্ড ইমুনোলোজী, ইউরোপিয়ান একাডেমী অব এলারগোলজী এন্ড ক্লিনিক্যাল ইমুনোলোজী, ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব পেডিয়াট্রিক্স এলার্জি এন্ড ক্লিনিক্যাল ইমুনোলোজী, ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব এলারগোলোজী এন্ড ক্লিনিক্যাল ইমুনোলোজী, জাপানিজ সোসাইটি অব এলারগোলজী, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এলার্জি এন্ড ইনফেকসিয়াস ডিজিস একত্রিত হয়ে এলার্জি সৃষ্টিকারী দ্রব্যাদি বা এলার্জেনের বিরুদ্ধে প্রতিষেধকমূলক এলার্জেন ইমুনোথেরাপি বা ভ্যাকসিনের ব্যবহারের দিকনির্দেশনা তৈরি করেন।
এলার্জিজনিত এ্যাজমা বা হাঁপানির ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকারী বলে অভিমত প্রকাশ করেন বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে এলার্জিজনিত এ্যাজমা রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করেন। এটাই এ্যাজমা রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। 
আগে ধারণা ছিল এ্যাজমা একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত এ্যাজমা রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে। 
বর্তমানে এলার্জি জনিত এ্যাজমা রোগের ভ্যাকসিনসহ উন্নত চিকিৎসা আমাদের দেশেই হচ্ছে।

 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

শ্বাসকষ্ট বা ব্রংকিয়াল অ্যাজমার কারণ

হাঁপানি রোগের সঠিক কারণ আজও জানা যায়নি। তারপরেও পরিণতির জন্য যেগুলো পরিস্থিতি প্রতিনিধিত্ব করে সেগুলোর মধ্যে বংশগত কারণ (দাদা-দাদি, বাবা-মা, ফুপু, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে) অর্থাৎ যাদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক আছে সেসব পরিবারে এক জনের হাঁপানি রোগ থাকলে অন্যজনের হয়। তবে এটিও আবার সত্য নাও হতে পারে। হাঁপানি রোগের জন্য একাধিক কারণ থাকতে পারে। শিশুকে বুকের দুধ পান না করালে, মা যদি গর্ভাবস্থায় ধূমপান করে, জেনেটিক বা বংশগত এবং সর্বোপরি ট্রিগার ফ্যাকটর (সামান্য উস্কানিতেই সহিংস পন্থা অবলম্বন করে) ইত্যাদি।

এই ট্রিগার ফ্যাক্টর শরীরের মধ্যে থেকেই হতে পারে আবার বাইরের বেশকিছু অ্যালার্জেন আছে যার সংস্পর্শে এলেই বিপত্তি অর্থাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এই ট্রিগার ফ্যাক্টরগুলোর মধ্যে যেমন ফুলের রেণু, ত্বক, চুল, পাখির পালক, এমনকি কুকুর, বিড়াল, পাখি, ইঁদুরের বিষ্ঠা, কল-কারখানার ধুলা-বালি, ফাঙ্গাশজনিত কারণ ইত্যাদি। তেলাপোকা, ছাড়পোকা, লাকড়ির চুলা, গ্যাসের চুলা, স্টোভের ধোঁয়া, বডিস্প্রে, মশার কয়েল, উলেন কাপড়-চোপড়, লেপ, তোশক, কম্বল ইত্যাদি।

কিছু খাদ্যদ্রব্য (যা সবাইকে সমস্যা করে না) গরুর মাংস, হাঁসের মাংস, হাঁসের ডিম, চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, গজাল মাছ, পুঁটিমাছ, বোয়াল মাছ, চিনাবাদাম, কিছু শাকসবজি, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন ইত্যাদি।

যাদের বারবার ঠাণ্ডা-কাশি, হাঁচি হয় তাদের শ্বাসকষ্ট রোগ হতে পারে। যারা বেশি দৌড়াদৌড়ি করে তাদের শ্বাসকষ্ট হতে দেখা যায়। কিছু ওষুধ বিশেষ করে বিটা-ব্লকার (প্রেসারের ওষুধ), বেদনানাশক ওষুধ ইত্যাদি।

ঋতু পরিবর্তন (অমাবস্যা-পূর্ণিমা), আবহাওয়া পরিবর্তন আগের দিনের তাপমাত্রা থেকে পরের দিনের তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম অথবা বেশি হলে অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়।

কিছু ফাংশনাল কারণ। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে যেমন-স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, মানসিক উত্তেজনা, অপারেশনের রোগী, গর্ভবতী মহিলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

হাঁপানি রোগকে বিভিন্নভাবে শ্রেণী বিন্যাস করা হয়েছে। যেমন অ্যাটপিক, নন অ্যাটপিক অ্যাজমা, বিশেষ বিশেষ অ্যাজমা।

ইন্টারমিটেন্ট মাঝে মধ্যে শ্বাসকষ্ট রোগ হয়। চিকিৎসা বা চিকিৎসা ছাড়াই রোগ ভালো হয়ে যায়।

পার্সিস্টেন্ট অ্যাজমা অর্থাৎ প্রতি মাসে অন্তত দুই বার বা আরও বেশি বার শ্বাসকষ্ট হয় এবং আক্রান্ত হওয়ার আগে পরে শ্বাসকষ্ট থাকে না। এ ধরনের শ্বাসকষ্টকে আবার তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে যথা- মৃদু বা শান্ত প্রকৃতি, মাঝারি বা মধ্যপন্থী এবং তীব্র বা কঠোর প্রকৃতির শ্বাসকষ্ট।

জটিল প্রকৃতির শ্বাসকষ্ট যা চিকিৎসার আইন-কানুন মানে না। যে কোনো সময় অধিক তীব্র হয়ে মৃত্যু ঘটাতেও সক্ষম। প্রাণঘাতি ও মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হয়।

বিশেষ বিশেষ ধরনের শ্বাসকষ্ট : হাঁটা-চলা, দৌড়াদৌড়িতে হয়রান হওয়া। দীর্ঘমেয়াদি কাশির জন্য শ্বাসকষ্ট, ওষুধজনিত কারণ (আগেই উল্লেখ করা হয়েছে) পেশাগত কারণজনিত শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।

পেশাগত কারণ : যেমন- সর্বদা ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশ, ইট-বালির গুঁড়া, রাসায়নিক ধোঁয়া, সিমেন্ট কারখানা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, আটা ও মসলার মিল, জুটমিল, রাইসমিল, স্পিনিং মিল, রঙের কারখানা, রাসায়নিক সার কারখানা, ফটোকপি মেশিন, পোলট্রি ফার্ম, বেডিং স্টোর ইত্যাদি কারখানায় যারা কাজ করেন তাদের পেশাগত অ্যাজমা হতে পারে।

 

বিশেষ বিশেষ পরীক্ষার মধ্যে আটারিয়াল ব্লাডগ্যাস অ্যানালাইসিস, ডিএল সিও, অ্যাকসারসাইজ টলারেন্স টেস্ট, ব্রংকোপ্রভোকেশন টেস্ট, রিভারসিবিলিটি-টেস্ট ইত্যাদি। বয়স যদি ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে হয় রক্তের গ্লুকোজ টেস্ট, ইসিজি, ইকো ইত্যাদি করে হার্টের কার্যক্ষমতা বোঝা যায়। আরও বিশেষ পরীক্ষাগুলোর মধ্যে স্কিন প্রিক টেস্ট, রক্তের আইজিই!!

হাঁপানি বা অ্যাজমা : ১-৪০ বছরের মধ্যে হয়। ব্রংকিও লাইটিস-ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র শ্বাসনালির প্রদাহ সাধারণত ১-৪ বছরের শিশুদের হয়। নিউমোনিয়া আবালবৃদ্ধবনিতা সবারই যে কোনো বয়সে হতে পারে। সিওপিডি সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে শুরু হয়। যদি কোনো রোগী শ্বাসকষ্টের জন্য শেষরাতে ঘুম থেকে জেগে যায় সেটিকে হাঁপানি ধরা হয়। আর যাদের ঘুম ভাঙার পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সেটাকে সিওপিডি ধরা হয়।

হাঁপানি রোগীরা ওষুধ এবং ওষুধ ছাড়াও ভালো থাকে। সিওপিডির রোগীরা সাধারণত উপসর্গমুক্ত থাকতে পারে না এবং দিন যতই যাবে তাদের সমস্যা ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। ওষুধ তাদের চির জীবনের সঙ্গী হয়ে যায়।

হাঁপানি রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চললে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবেন। এমনকি রোগটি চলেও যেতে পারে। সিওপিডি রোগীদের ক্ষেত্রে সে সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ