F.Rahman

Call

মহাশূন্যচারীরা মহাশূন্যযানে করে পৃথিবীকে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় বৃত্তাকার কক্ষ পথে প্রদক্ষিণ করে। এই বৃত্তাকার গতির জন্য মহাশুন্যযানের পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে ঐ উচ্চতায় g এর মানের সমান মানের আরো একটি ত্বরণ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় g-g=0 হয়ে যায়। ফলে মহাশূন্যচারীরা মহাশুন্যযানের উপর কোন বল প্রয়োগ করেন না। ফলে নিজেকে ওজনহীন মনে করেন।

আসুন আর একটু খোলাসা করি।

মহাকাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে যদি কোন বস্তু অন্য কোন বৃহত্তর বস্তুকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে তবে ঐ বস্তুটির দুই প্রকার গতি হতে পারে। যেমন নিজ অক্ষে পাক খাওয়া (লাটিমের মত) আর নিজ কক্ষপথের সম্মুখে গতি।

কিন্তু এর সাথে অবশ্যই দুটি বলের সৃষ্টি হয়। যথা কেন্দ্রমূখী বল। এই বলের জন্য বস্তুটি ঘুরতে ঘুরতে কেন্দ্রে পতিত হতে চলে এবং ক্রমান্বয়ে ব্যাসার্ধ ছোট হতে থাকে। অপরদিকে একই সাথে আরেকটি গতি সৃষ্টি হয় তা হচ্ছে কেন্দ্রবিমুখী বল।

আপনি ছোট একটি বস্তু দুই হাত লম্বা সুতা দিয়া বাধেন।তারপর সুতার অপর প্রান্ত হাতে ধরে বস্তুটি ঝুলান, এবার পাক দিয়া হাতের চারপাশে বস্তুটি ঘোরাতে থাকেন। তাহলে একটি বৃত্ত তৈরি হবে এবং আপনার হাতে যেখানে সুতাটি বাধা, সেটা হবে কেন্দ্র। বস্তুটি অভিকর্ষের কারনে ছিটকে দূরে চলে যাওয়ার কথা কিন্তু সুতা দিয়ে আপনার হাতের সাথে বাধা থাকার কারনে কেন্দ্র, অর্থাৎ আপনার হাতের দিকে একটি টান বা বল অনুভব করে। তাই এটি বৃত্তাকার পথে ঘুরতে থাকে।এই বলটি হচ্ছে কেন্দ্রমুখী বল।

এবার হঠাৎ সুতাটি ছেড়ে দিন। দেখবেন বস্তুটি কোন এক দিকে ছিটকে যেয়ে পড়ছে। কেন্দ্র বা আপনার হাতের দিকে আসেনি। এটি কেন্দ্রের বিপরীত দিকে ছিটকে যায়। একে কেন্দ্রবিমুখী বল বলে।

যখন কেন্দ্রমুখী বল এই কেন্দ্রবিমুখী বলের সমান হয় তখন বস্তুটি কেন্দ্রে পড়েনা। নিজ কক্ষপথে চলতে থাকে। মহাকাশ স্টেশন এমনই। ফলে তা পৃথিবীর দিকে চলে আসেনা। আর এখানে যখন নভোচারী যান তখন নভোচারীও সমান বলে ঘুরতে থাকেন। ফলে নিজেই কেন্দ্রমুখী ও কেন্দ্রবিমুখী উভয় বলের প্রভাবে লব্ধি বল বরাবর সম্মুখে কক্ষপথে চলতে থাকে। এ অবস্থায় ওজন হীন লাগে কারন অন্য কোন বস্তুর আকর্ষন বল, নিজের গতির বলের সমান হওয়ায় দুটি বল কাটাকাটি হয়ে নিরপেক্ষ বা শূন্য হয়ে যায় । অর্থাৎ, g-g = 0 হয়।

আশা করি বুঝতে পারছেন।

Talk Doctor Online in Bissoy App