শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
F.Rahman

Call

কত রকমের সাবমেরিন
===========================
১. হাইপার-সাব
.
সাবমেরিনের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে হাইপার-সাব নামের সাবমেরিন। এর সৌন্দর্যে অভিভূত সবাই। এর দামটাও নেহায়েতই কম নয়, ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার! বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ২৫ কোটি টাকারও বেশি। সুন্দর এ সাবমেরিনটির ডিজাইন করেছে মেরিওন এইচএসপিডি। সাবমেরিনটির দৈর্ঘ্য ৩১ ফুট। এতে রয়েছে বায়ু আর পানি নিরোধক কেবিন। এটি সর্বোচ্চ ৪০ নট গতিতে চলতে পারে। যেতে পারে সর্বোচ্চ ২৫০ ফুট পর্যন্ত পানির গভীরে।
.
২. ইয়োলো সাব
.
সাবমেরিনের মতো কোনো যান্ত্রিক জলহস্তীও যে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হতে পারে তা হয়তো সাধারণ মানুষের জানা নেই। তবে ইয়োলো সাবমেরিনটিকে বলা হয় ব্যক্তিগত সাবমেরিন। যারা শখের বশে সাগরতলে ঘুরতে যান, তাদের কথা মাথায় রেখে হলদে রঙের এই সাবমেরিনটি বানানো হয়েছে। তাই একে প্রমোদ সাবমেরিন বললেও ভুল হবে না। হাইপার-সাব থেকে এর দাম কিছুটা কম, তবে তা-ও নেহায়েত কম নয়। ২০ লাখ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ১৫ কোটি টাকা প্রায়।
.
৩. ইজি ও কমপ্যাক্ট সেমি-সাবমেরিন
.
ইজি ও কমপ্যাক্ট সেমি সাবমেরিনটি দেখতে বেশ নজরকাড়া। নাম সাবমেরিন হলেও এটিকে পুরোপুরি সাবমেরিন বলা যায় না। এটি মূলত সেমি-সাবমেরিন। অর্থাৎ সাবমেরিনের সব বৈশিষ্ট্য না থাকলেও অধিকাংশের উপস্থিতি রয়েছে এতে।
.
৪. সিব্রিচার-এক্স
.
সাগরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণী হিসেবে পরিচিত হাঙ্গর। কিন্তু তার পিলে যদি চমকে দেওয়া যেত, কেমন হতো? অবশ্য এমন ধারণা থেকেই তৈরি করা হয়েছে সিব্রিচার-এক্স। এটি দেখতে পুরোপুরি সত্যিকার হাঙ্গরের মতো। এই হাঙ্গরের পেটের ভিতর বসে থেকে সাগরের অসীম সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। হাঙ্গররূপী এই সাবমেরিনের রয়েছে শক্তিশালী একটি ইঞ্জিন, যা দিয়ে এটি পানির ওপর প্রায় ৫০ মাইল এবং পানির নিচে প্রায় ২৪ মাইল বেগে চলতে পারে।
.
৫. নটিলাস
.
প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমুদ্রে ভ্রমণ করতে যেতে চাওয়া অমূলক কোনো শখ নয় নিশ্চয়। সাগরেই যখন যাবেন তখন ‘নটিলাস ভিএএস লাক্সারি সাবমার্সিবল’ নামের সাবমেরিনে করে ঘুরে আসতে পারেন। সাগরতলে ভ্রমণের জন্য এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতেই পারে না। দেখতে কিছুটা সিলিন্ডার আকৃতির সাবমেরিনটির ভিতরে রয়েছে আরাম আয়েশের দারুণ সব ব্যবস্থা। এমনকি গানও শোনা যায়। এর দাম প্রায় ২০ কোটি টাকা।
.
৬. পারমাণবিক ডুবোজাহাজ
.
পারমাণবিক চুল্লিতে উৎপাদিত শক্তি দিয়ে পরিচালিত ডুবোজাহাজকে পারমাণবিক ডুবোজাহাজ বা পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ বলা হয়। ডিজেল-তড়িৎ ইঞ্জিনে চালিত ডুবোজাহাজের তুলনায় পারমাণবিক ডুবোজাহাজের অনেক সুবিধা রয়েছে। যেমন, পারমাণবিক ডুবোজাহাজ চালাতে বায়ুর দরকার নেই। ফলে ঘন ঘন সমুদ্রপৃষ্ঠে ফিরে আসতে হয় না। দীর্ঘ সময় দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারে। এ ছাড়া এসব ডুবোজাহাজে ঘন ঘন জ্বালানি সরবরাহেরও দরকার নেই। বর্তমানে প্রচলিত পারমাণবিক ডুবোজাহাজগুলো জ্বালানি পুনঃসরবরাহ না করেও ২৫ বছর ভালোভাবে কাটিয়ে দিতে পারে। তবে পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজের উচ্চমূল্যের কারণে অল্প কয়েকটি দেশের নৌবাহিনীতেই এমন ডুবোজাহাজ রয়েছে।
.
সাবমেরিন তথ্য
------------------------------
—সাবমেরিন পানিতে ভাসে, আবার নিচে চলে যায়। এটি মূলত কাজ করে প্রাচীন গ্রিক বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের ব্যালাস্ট ট্যাংক থিওরির ওপর ভিত্তি করে। কোনো বস্তুকে পানিতে ডুবালে তা নিজের আয়তনের সমপরিমাণ পানি অপসারিত করবে। অর্থাৎ অপসারিত পানির ভরের চেয়ে ডোবানো জিনিসটি যদি হালকা হয় তবে তা ভেসে থাকতে পারে। যেমন খালি প্লাস্টিকের বোতলে বাতাস ভরে পানিতে ছেড়ে দিলে বোলতটি ভেসে থাকবে। আবার পানি ভরে দিলে বোতলটি ভারী হয়ে ডুবে যাবে। কিন্তু অর্ধেক বাতাস বোতলে রাখা হলে সেটি অর্ধনিমজ্জিত অবস্থায় ভেসে থাকবে। এই সূত্র অবলম্বন করে সাবমেরিন পরিচালিত হয়। সাবমেরিনে কিছু ব্যালাস্ট ট্যাংকার থাকে। ট্যাংকারগুলোর ভিতর যন্ত্রের সাহায্যে পানি ও বাতাস ঢুকানো হয়।
.
— যখন সাবমেরিন ডুবানোর দরকার হয় ব্যালাস্ট ট্যাংকারে পানি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আবার ভাসানোর দরকার হলে ব্যালাস্ট ট্যাংকারের পানি বের করে যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুত বাতাস ঢুকানো হয়। ফলে সাবমেরিন পানির ওপরে ভেসে ওঠে।
.
— সাবমেরিনের ভিতরে অথবা বাইরে চাপের কোনো পরিবর্তন হয় না। কারণ এতে উন্নত মানের স্টিল, টাইটেনিয়ামের মতো ধাতু ব্যবহার করা হয়।
.
— সাবমেরিনের ভিতরে অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া হয়।
.
— বর্তমানের মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিন সবচেয়ে বেশি চাপ নিতে সক্ষম।
.
— মজুদ জ্বালানি ও ক্রুদের খাদ্যের ওপর নির্ভর করে সাবমেরিন কত দিন পানির নিচে থাকবে।
.
— ডিজেল সাবমেরিন কিছুদিন পরপরই জ্বালানি নিতে ওপরে আসে। তবে পারমাণবিক সাবমেরিন একটানা ২৫ বছরের বেশি সময় পানির নিচে থাকতে পারে।
.
— বর্তমানে সাবমেরিনগুলো প্রায় ৪৫০০ ফুট গভীর পর্যন্ত যেতে পারে! ঘণ্টায় গতি থাকে ৪৯ থেকে ৫২ মাইল।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ