আমার ডান হাত পুরাটাই ব্যন্ডিস করা নামায পড়তে পারছি না ওযু+সিজদা কিছুই করতে পারছি না এখন কি করণিয়?
আপনি বাম হাত দাড়া পানি নিয়ে ওযু করতে পারলে করুন আর ডান হাতের কুনুই পর্যন্ত হাম হাত দিয়ে শুধু ব্যান্ডেজ এর উপর মুছে নিন ৩ বার এতেই হবে এবং ওযুর বাকি কাজ বাম হাত দিয়েই করুন। এবং সম্ভব হলে চেয়ারে বসে শুধু বাম হাত দিয়ে নিয়্যত বাধিয়ে ইশারা করে নামায আদায় করেন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহতালা কবুল করবেন।
আল্লাহ তালা পবিত্র কোরআন এ বলেন আমি অবশ্যই তোমাদেরকে কিছু না কিছু দিয়ে পরীক্ষায় ফেলবোই — আল-বাক্বারাহ ১৫৫। কাজেই হতে পারে এটি আল্লাহ্ পরিক্ষা করছেন আপনাকে কাজেই যেভাবে সম্ভব নামায আদায় করুন ইনশাআল্লাহ নামায কবুল হবে।
ধন্যবাদ।
অসুস্থ ব্যক্তির অবস্থার বিচার করে তার জন্য ইসলামী শরীয়তে কিছু বিধান নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
কেননা আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)কে ক্ষমাশীল সর্বোত্তম সঠিক ধর্ম দিয়ে প্রেরণ করেন, যা হচ্ছে সহজ ও সরলতার বৈশিষ্টে অনন্য।
আল্লাহ এরশাদ করেনঃ “তিনি তোমাদের জন্য ধর্মে কোন অসুবিধা রাখেননি।” (সূরা হাজ্জঃ ৭৮)
তিনি আরো বলেনঃ “আল্লাহ্ তোমাদের জন্য সহজতা চান, তোমরা অসুবিধায় পড় তিনি তা চান না।” (সূরা বাকারাঃ ১৮৫)
উল্লেখিত মূলনীতির ভিত্তিতে ওযর বিশিষ্ট লোকদের জন্য আল্লাহ তাআলা ইবাদতকে সহজ ও হালকা করে দিয়েছেন। যাতে করে তারা কোন অসুবিধা ও কষ্ট ছাড়াই তার ইবাদত শুয়ে, বসে, ইশারায় সম্পাদন করতে পারে।
অসুস্থ ব্যাক্তির উপর আবশ্যক হল ছোট নাপাকী থেকে প্রবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি দ্বারা ওজু করা এবং বড় নাপাকী থেকে পবিত্রতা হাসিলের জন্য পানি দ্বারা গোসল করা।
যদি পানি দ্বারা যদি পবিত্রতা অর্জন করতে না পারে-অপারগতার কারনে বা রোগ বেড়ে যাবে এই আশঙ্কার কারনে বা ভয় করে সুস্থ হতে দেরী হয়ে যাবে, তবে এহেন পরিস্থিতিতে সে তায়াম্মুম করবে।
তায়াম্মুমের পদ্ধতি হলঃ হাত দুটিকে পবিত্র মাটিতে একবার মারবে তারপর তা দিয়ে সমস্ত মুখমণ্ডল মাসেহ করবে, অতঃপর উভয় হাতকে কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করবে। আগে ডান হাত পরে বাম হাত।
ওজু বা গোসলের কোন অঙ্গে যদি জখম থাকে আর পানি দিয়ে ধৌত করলে তাতে ক্ষতি হওয়ার আশংকা হয়, তবে তার জন্য তায়াম্মুম করে নিবে।
ভাঙ্গা-মচকা ইত্যাদি কারনে যদি শরীরের কোন অঙ্গে পট্টি বা ব্যান্ডেজ থাকে তবে সে স্থান ধৌত করার পরিবর্তে পানির মাধ্যমে তার উপর মাসেহ করে নিবে। এক্ষেত্রে তায়াম্মুম করবে না। কেননা মাসেহ ধোয়ার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে।
আপনার হাত ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে বা অপারেশনের কারণে আপনার পুরো হাত ব্যান্ডিস করা। আপনি হাত নাড়াতে পারেন না। এক কথায় আপনি শরয়ী ওজর গ্রস্হ ব্যাক্তি। আপনার জন্য শরীয়তের হুকুম হল-
১/ আপনার জন্য ওযুর হুকুম হল মোজার ওপর মাসেহ করার বিধান।
অর্থাৎ- আপনার বাম হাত পানিতে ভিজিয়ে ডান হাতের ওপর মাসেহ করবেন।এভাবে তিনবার মাসেহ করবেন। ডান হাত ধৌত করতে হবে না।বাকি অঙ্গ গুলো স্বাবাভিক নিয়ম অনুযায়ী ধৌত করবেন।ধৌত করার সময় বাম হাত ব্যাবহার করবেন।না পারলে অন্য কারো সাহায্য নিতে পারেন।
২/ শরয়ী ওজর গ্রস্হ ব্যক্তিরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ীভাবে নামাজ আদায় করতে পারবে।
অর্থাৎ অসুস্হ ব্যক্তি দাড়িয়ে নামাজ পড়তে না পারলে বসে পড়বে,আর বসে পড়তে না পরলে শুয়ে শুয়ে ইশারায় নামাজ আদায় করবে।তবুও নামাজ পড়তে হবে। নামাজ মাফ হবে না।
আপনার হাতে যেহেতু সমস্যা আপনি দাড়িয়ে নামাজ আদায় করবেন। বসে নামাজ পড়বেন না। নামাজের যাবতিয় কাজ বাম হাতে করবেন। অর্থাৎ তাকবিরে তাহরিমা বাধার সময় বাম হাত উঠাবেন,রুকু যাওয়ার সময় বাম হাত ব্যবহার করবেন,সিজদায় ও বাম হাত ব্যবহার করবেন। সিজদা থেকে উঠার সময় বাম হাতে ভর দিয়ে উঠবেন।একটু কষ্ট হলেও করতে হবে। কেননা এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার উপর পরিক্ষা চলতেছে।মনে রাখবেন আপনার কষ্ট যত বেশি হবে তার সওয়াব তত বেশি হবে। আর যদি আপনি একেবারে অপারগ হন তাহলে বসে নামাজ আদায় করবেন।