ধন্যবাদ প্রশ্ন করার জন্য।
আপনি প্রশ্ন করলেন বিবাহের পর মেয়েদের জীবনে বাবা মায়ের গুরুত্ব বেশি নাকি স্বামীর গুরুত্ব বেশি?
আসলে এখানে এক একজনের মেন্টালিটি এক এক রকম হয়ে থাকে। আর এসব নির্ভর করে উক্ত বিবাহিত মেয়েটার উপর কেনো না। সমাজে অনেকেই আমার চোখে দেখা যে তারা বাবা মায়ের কথা সুনে স্বামীকে কোন গুরুত্ব দেয় না। স্বামির সাথে বাজে রকমের ব্যবহার করে।আবার অনেকেই আছে স্বামীর কথায় নিজের বাবা মায়ের সাথে খারাপ আচরন করে বা বাবা বাসা আশা বন্ধ করে। এটি হতে পারে বিভিন্য কারন বসত।
যাইহোক একজন বিবাহিতা মেয়ে তার স্বামীর প্রতি যে দ্বায়ীত্ব, কর্তব্য, স্বামীর হক আদায় ও ভালোবাসা রয়েছে সে সব মানতে হবে ও করতে হবে।পাশাপাশি নিজের বাবা মায়ের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা বজায় রাখতে হবে যা নিজের বাবা মা বা শশুর শ্বাসুরির সাথে সমান ভাবে। নিজের বাবা মাকে যেভাবে দেখতে হবে ঠিক তেমনি শশুর শ্বাসুরিকেও দেখবে।
তবে সব শেষে একটা কথাই বলতে চাই যে একজন বিবাহিতা মেয়ে তার স্বামীর কথা ব্যতীত বা স্বামীর আদেশ ব্যতীত সে কোথাও ১ পা এগোতে পারবে না। আর যে মেয়ে তার স্বামীর সাথে দুর ব্যবহার করবে ওই মেয়ের বাবাকে জবাব দিহি করতে হবে যে ওনার মেয়েকে কেমন শিক্ষা দিয়েছে যে তার স্বামীর কথাই সুনে না।
যাইহোক একটা ওয়াজে বলা ঘটনা শুনাই। এক মেয়ের স্বামী বিদেশে থাকে তার স্বামী তাকে বলেছে আমার আদেশ ব্যতীত বাসার বাহিরে যাবে না। এ ঈ বলে বিদেশ যায় এবং প্রতিদিন ফোনে একে অপরে কথা হতো, তো একদিন ওই মেয়ে বাবা অসুস্থ কিন্তু তার বাবার বাসা যেতে পারতেছে না কারন তার স্বামীর ফোন বন্ধ তাই স্বামীর আদেশ নিতে পারে নাই তাই তার বাবাকে দেখতে যায় নি। একদিন মেয়েটার বাবা মারা যান এর পর খবর সুনতে পারেন এবং আবার তার বাবার মৃত মুখ দেখতে যাবার জন্য স্বামীকে কল দেয় আদেশ নেওয়ার জন্য বাট তবুও ফোন অফ পায় কোন যোগাযোগ নাই।যার কারনে তার বাবাকেও দেখতে যেতে পারে নি। এর পর ওনার বাবার কবর হলে একদিন তার মেয়েকে স্বপ্নে ওর বাবা বলে যে মা তোমার স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা,ভালোবাসা ও আদেশ মেনে চলার কারনে আজ আমি জান্নাত এ সুখে আছি।
সুতারাং একজন স্ত্রীর সর্বদাই স্বামীর কথা কত স্বামীর আদেশে চলতে হয় বা হবে।পাশাপাশি স্বামীর কিছু কর্তব্য আছে যা স্ত্রীর প্রতি ওসব মেনে চলা স্বামীর গুরুত্ব।
আশা করি বুঝতে পারছেন।
কোনো সন্দেহ নেই মা-বাবার অসন্তুষ্টির সঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অসন্তুষ্টি সম্পৃক্ত। তাই মা-বাবাকে অবশ্যই সন্তুষ্ট করতে হবে। আবার স্বামীর অসন্তুষ্টি এবং স্বামীর আনুগত্যহীনতার সঙ্গে মূলত আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অসন্তুষ্টি জড়িত। তাই স্বামীকেও সন্তুষ্ট রাখতে হবে।
এর জন্য মূলত কোনো ধারাবাহিকতা নেই বা কোনো ক্রমবিন্যাস নেই। উভয়কে মুখোমুখি করার কিছু নেই। কারণ মা-বাবার সন্তুষ্টি একটা বিষয় আর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক বা স্বামীর সন্তুষ্টি আরেকটা বিষয়। দুটি বিষয় আলাদা।
মা-বাবার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু হক রয়েছে, সেগুলো তাঁকে অবশ্যই আদায় করতে হবে। তেমনি স্বামীর হকও আদায় করতে হবে। তবে স্বামীর সবচেয়ে বড় হক হলো, আল্লাহর নবী (সা.) যেটা বলেছেন, ‘তাঁর স্বামীর সে আনুগত্য করবে’। স্বামীর বিরুদ্ধাচরণ করবে না। স্বামীর সঙ্গে কোনো ধরনের অসদাচরণ এবং বিরুদ্ধাচরণ করলে তিনি সত্যিকার আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির পথ থেকে অনেক দূরে সরে যাবেন। এখানে কিন্তু কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করার বিষয় নেই।
আর মা-বাবার হকের ব্যাপারে তো আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারিমের মধ্যে স্পষ্ট করে উল্লেখ করে দিয়েছেন, ‘বাবা-মায়ের প্রতি সদাচরণ করবে, সুন্দর ব্যবহার করবে’। তাঁদের সঙ্গে কী আচরণ করতে হবে এগুলো কোরআনের মধ্যে সুস্পষ্ট অনেক নির্দেশনা রয়েছে। এগুলো মা-বাবার প্রতি করতে হবে।
এখানে ক্রমবিন্যাস অথবা ক্রমধারা না থাকলেও একটি বিষয় জানতে হবে, তা হলো স্ত্রীর ওপর মূলত সরাসরি যে হকটি আদায় করতে হবে, সে হকটি বিয়ের পর স্বামীর হক তাঁর ওপর বর্তাবে বেশি। স্বামীর হকগুলো তাঁর ওপর সরাসরি এসে গিয়েছে। বাবা-মায়ের হকও তাঁর জন্য থাকবে কিন্তু এই হকটা সরাসরি তাঁর ওপর বর্তায় না যেহেতু বিয়ের পর মূলত তাঁর ওপর অন্যদের হক সংশ্লিষ্ট হয়ে যায় এবং স্বামীর হকটা তাঁর ওপর বেশি এসে যায়। এ জন্য তিনি স্বামীর হকটা আদায় করার চেষ্টা করবেন এবং বাবা-মায়ের সন্তুষ্টির চেষ্টা করবেন। তবে এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট ক্রমবিন্যাস নেই। এখানে সমন্বয় করতে হবে। আগে মা-বাবাকে সন্তুষ্টি করবেন তারপর স্বামীকে সন্তুষ্ট করবেন অথবা আগে স্বামী তারপর মা-বাবা, ব্যাপারটি এমন নয়। দুটি কাজই করতে হবে এবং দুটি কাজই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশিত কাজ। দুইয়ের মধ্যেই সমন্বয় করে করার চেষ্টা করতে হবে।