দেখি মানুষের চোখের মনি কালো,খয়েরি বিভিন্ন রং এর হয়ে থাকে। তো এই পার্থক্যের কারন কি ?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

একেক মানুষের চোখের রং একেক রকম হয়। কারো কালো, কারো নীল, কারো বা বাদামি। চোখের রং মূলত ৯টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। বংশগতভাবে চোখের রং নির্ধারণে ১৬টি জিন কাজ করে। চক্ষুর রং নির্ধারণে সবচেয়ে প্রভাবশালী জিন হলো ওসিএ২ এবং এইচইআরসি২। এদের অবস্থান ক্রোমোজোম ১৫-এ। সাধারণত নীল চোখের জন্যে এইচইআরসি২ জিনকে দায়ী করা যায়। আর ওসিএ২ সাধারণত চোখের নীল এবং সবুজ রং সৃষ্টিতে কাজ করে। আইরিশে মেলানিনের পরিমাণ, প্রোটিনের ঘনত্ব এবং আইরিশে স্ট্রোমার অস্বচ্ছ অংশে আলো কতটা বিচ্ছুরিত হচ্ছে ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে চোখের রং নির্ধারিত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, জীবন শুরুর প্রথম কয়েক বছরের মধ্যে চোখের রংয়ে নাটকীয় পরিবর্তন আসতে পারে। অনেক শিশুই নীল চোখ নিয়ে জন্মায়। কিন্তু পরে তা সবুজ বা বাদামি হয়ে যায়। তবে বিশ্বজুড়ে বাদামি চোখের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি। মানুব সভ্যতার প্রথম থেকেই এই রং দাপটের সঙ্গে টিকে আছে। অন্যদিকে, নীল চোখ মূলত বংশানুক্রমিকভাবে টিকে রয়েছে এবং দিন দিন বিরল হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেন, নীল চোখের সৃষ্টিতে জিনগত মিউটেশন ঘটেছিল ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার বছর আগে। নীল চোখের চেয়ে আরো বেশি গাঢ় দেখায় ধূসর চোখ। কারণ এ রংয়ের চোখে মেলানিন পিগমেন্ট অনেক বেশি থাকে। আইরিশে মেলানিন এবং প্রোটিনের পরিমাণের ওবেশি

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
JAShakil

Call

এটা চোখের আইরিসের মেলানিনের পরিমাণ এবং প্রোটিনের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে । সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে যে চোখের রঙ নির্ধারণ করে 16টি বিভিন্ন ধরনের জিন । চোখের রং নিয়ন্ত্রণকারি প্রধান দুটি জিন হচ্ছে OCA2 এবং HERC2 যা ক্রোমোজোমে 15 তে অবস্হান করে ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

যাদের চোখ নীল তাদের চোখের মণি এভাবেই আলোর প্রতিফলন ঘটায়। যদি তাদের চোখে সাদা রঙের আলো পড়ে, সাদা রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য মিশ্র হওয়ার কারণে সূর্যের আলোতে থাকা নীল রঙের প্রতিফলন বেশি ঘটে। ফলে যারা দেখে তারা চোখের রঙ নীল দেখতে পায়। ঘরের ভিতরে যথেষ্ট আলো না থাকায় নীল আলোর প্রতিফলন কমে যায়, এ কারণে ঘরের ভিতরে চোখের মণি থেকে প্রতিফলিত আলোর রঙ প্রান্তের দিকে কিছুটা লাল আলোর দিকে বেঁকে যায়। ফলে ইনডোরে বা ঘরের ভিতরে চোখের রঙ বদলে গেছে মনে হতে পারে।

বাদামি চোখে এটি আরো সরলভাবে ঘটে। বাদামি চোখের লোকদের স্ট্রমায় বা চোখের সামনের স্তরে প্রচুর পরিমাণে মেলানিন নামের হরমোন থাকে। মেলানিনের উপস্থিতির কারণেই গায়ের চামড়া কালো হয়ে থাকে। বাদামি রঙের চোখে যে আলো পড়ে তার বেশিরভাগই মেলানিনের কারণে শোষিত হয়ে যায়। যে অল্প আলো ফিরে আসে বা প্রতিফলিত হয় তা আমরা বাদামি হিসেবে দেখি।

হালকা বাদামি রঙের চোখে পুরাপুরি বাদামি চোখের চেয়ে আরো কম মেলানিন থাকে। বেশিরভাগ শোষিত হয়ে গেলেও যথেষ্ট পরিমাণ আলো প্রতিফলিত হতে পারে বা দর্শকের কাছে ফিরে আসতে পারে। এর ফলে নীল এবং বাদামির মিশ্রণে একটি রঙ তৈরি হয়। চোখের বিভিন্ন জায়গায় ঘনত্ব বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এ কারণে ড্যাপলিং এফেক্ট ঘটে, এবং এই ড্যাপলিং এফেক্টের কারণেই আমরা চোখের রঙ হালকা বাদামি দেখি।

সবুজ চোখের ক্ষেত্রে এটি অন্যভাবে ঘটে। সামান্য পরিমাণ মেলানিনের পরিবর্তনের ফলে প্রতিফলিত আলো নীলের বদলে সবুজ দেখা যায়। তবে প্রায় ক্ষেত্রেই চোখের মণির ক্ষুদ্র কালো অংশটি আলো প্রতিফলনের জন্য পিছনের স্তর বা রিয়ার লেয়ার হিসেবে কাজ করে।

ধূসর চোখের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি আরেকটু আলাদা। ধূসর চোখে মেলানিন কম তবে চোখের মণিতে কোলাজেন থাকে। ধূসর রঙের চোখে এই কোলাজেন বড় থাকার কারণে আলো বড় বড় তরঙ্গদৈর্ঘ্যে প্রতিফলিত হয়, ফলে মিশ্র রঙ দেখা যায়। এই প্রক্রিয়ার সাথে আকাশে অপেক্ষাকৃত কম ঘনত্বের মেঘের তুলনা করা যায়। ধূসর চোখের মণিতে যে পরিমাণ আলো প্রতিফলিত হয় তার থেকে বেশি আলো শোষিত হয়। এ কারণে যে মেঘগুলি থেকে বৃষ্টি হয় চোখের মণির রঙ সেই মেঘের মত ধূসর দেখা যায়।

অনেক শিশুর চোখে প্রাথমিকভাবে মেলানিনের পরিমাণ কম থাকে। এমনকি তাদের চোখ পরবর্তীতে যদি বাদামিও হয় তবুও শিশু অবস্থায় চোখে মেলানিনের পরিমাণ কম থাকতে পারে। শিশুদের চোখের রঙ যখন নীল হয় তা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তুলনায় অপেক্ষাকৃত গাঢ় নীল হয়। কারণ, নীল রঙের চোখ অলা বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চোখের মণিতে কিছু বস্তুকণা থাকে যেগুলির কারণে চোখের মণি থেকে একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত নীল রঙের প্রতিফলন ঘটে, ফলে নীল রঙের তীব্রতা কমে যায়।

আর চোখের রঙ কেমন হবে তা নির্ভর করে জিনগত বৈশিষ্ট্যের ওপর। মেন্ডেলিয়ান জেনেটিকসে বাদামি রঙের চোখকে প্রকট বৈশিষ্ট্য এবং নীল রঙের চোখকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চোখের অন্য রঙগুলিকে জিনগত বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।

একাধিক জিন চোখের রঙ ঠিক করে থাকে, বেত চোখের নীল রঙকে নিকটতম পূর্বপুরুষের বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরা হয়। OCA2 ও HERC2 নামের পাশাপাশি অবস্থিত জিন দুটি মেলানিনের পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকে। অন্যান্য জিনগুলি কোলাজেনের উপস্থিতির মত অন্যান্য ব্যাপারগুলি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ