সুদ কি? - আরবী রিবা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো বৃদ্ধি,অতিরিক্ত, প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি। ইবনে হাজার আসকালানী বলেন, পণ্য বা অর্থের বিনিময়ে প্রদেয় অতিরিক্ত পণ্য বা অর্থই হলো রিবা। সুদের প্রকারভেদ- ইসলামী শরীয়া অনুসারে রিবা দুই প্রকার- ১. রিবা আল-নাসিয়া- এর মানে সময়ের বিনিময়। 'নাসিয়া' শব্দের মূল হলো নাসায়া যার আভিধানিক অর্থ হলো বিলম্ব বা প্রতীক্ষা। উদাহরণ- ক- ১ বছরের জন্য , খ-কে ১০০-/ টাকা দিল এই শর্তে যে তাকে ১০০-/ টাকার সাথে অতিরিক্ত আরও ১০ টাকা দেয়া হবে। এই অতিরিক্ত ১০-/ টাকা হলো রিবা আল- নাসিয়া। ২. রিবা আল-ফদল- এর উদ্ভব হয় পণ্যসামগ্রী হাতে হাতে বিনিময়ের সময়ে। একই জাতীয় পণ্যের কম পরিমাণের সাথে বেশি পরিমান পণ্য হাতে হাতে বিনিময় করা হলে পণ্যটির অতিরিক্ত পরিমানকে বলা হয় রিবা আল ফদল। পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে সুদ: রিবার অবৈধতা আল-কোরআনের সাতটি আয়াত এবং ৪০ টিরও বেশি হাদিস এবং ইজমা দ্বারা প্রমাণিত। পবিত্র কোরআনের আয়াত- সূরা আল বাকারা-২৭৫,২৭৬,২৭৮,২৭৯,২৮০; সূরা আল- ইমরান-১৩০ এবং সূরা অার রূম-৩৯ কোরআনে আল্লাহপাক সুদকে হারাম ঘোষণা করেছেন-" এবং ব্যবসায়কে হালাল করা হলো ও রিবাকে করা হলো হারাম"। সূরা-বাকারা-২৭৬ ১. হাদিসে এসেছে-প্রখ্যাত সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন," তোমাদের মধ্যে যারা সুদ খায়, সুদ দেয়, সুদের হিসাব লেখে এবং সুদের সাক্ষ্য দেয় তাদের উপর আল্লাহর লানত এবং এ অপরাধের ক্ষেত্রে সবাই সমান।( সহীহ বূখারী, মুসলিম, তিরমিযী) ২. হযরত আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, রিবার গুনাহ সত্তর প্রকার, তার মধ্যে সবচেয়ে কম ভয়ংকরটি হলো একজন লোকের তার আপন মায়ের সাথে ব্যভিচারের সমান।( ইবনে মাজাহ, আল বাইহাকি) ৩. হযরত উবায়েদ রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন যে," কোন কর্জ হতে কোন ফায়দা নিলে ঐ ফায়দা এক ধরনের রিবা।( আল বায়হাকী) ৪.আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, " আল্লাহ চার প্রকার লোককে জান্নাতে যাবার অনুমতি দেবেন না। ১. যারা অভ্যাসগতভাবে মাতাল। ২. রিবা গ্রহনকারী। ৩. অন্যায়ভাবে ইয়াতেমের সম্পদ আত্মসাৎকারী। ৪. মাতা-পিতার প্রতি অমনোযোগী। আল্লাহ আমাদের সুদ থেকে বাচার তৌফিক দান করুন।