আপনার সকাল শুরু করুণ লেবুর শরবৎ দিয়েঃ পেটের চর্বি কমানোর জন্য এটি হচ্ছে সবচাইতে উপযোগী চিকিৎসা। কিছু পরিমাণ লেবু চিপে এর রস গ্লাসে নিয়ে তাতে সামান্য পরিমান গরম পানি ও লবন মিসিয়ে সকালে পান করুণ। এভাবে প্রতিদিন চালিয়ে যান ফলে আপনর বিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবং মেদ কমেতে থাকবে।
সাদা চাল থেকে দূরে থাকুনঃ সাদা চাল খাবেন না। সাদা চালে প্রচুর চর্বি থাকে যা পেটে চর্বি জমাতে প্রধান ভূমিকা রাখে। বাদামী চাল, বাদামী রুটি, সবুজ সাক সবজী এসব আপনার খাদ্যা অভ্যাসে যোগ করুণ।
চিনিযুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলুনঃ আপনার যদি পেটে মেদ থাকে তবে আপনি চিনি ও অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাদ্য থেকে দূরে থাকুন। অতিরক্ত তেল সমৃদ্ধ খাদ্য থেকেও দূরে থাকুন। এসব খাবার আপনার আবডমেন ও উরুতে চর্বি জমাতে সাহায্য করে।
প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুনঃ আপনি যদি আপনার পেটের চর্বি কমাতে চান, তাহলে যথেষ্ট পরিমান পানি পান করুন। প্রচুর পরিমান পানি পান আপনার শরীরের মেটাবলিসমকে ঠিক রাখে এবং শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় ও বিষাক্ত জিনিস বের করে দেয়।
কাঁচা রসুন খানঃ প্রতিদিন সকালে দুই বা তিনটি করে কাঁচা রসুনের কোয়া দাতে চিবিয়ে খান। এর পরে এক গ্লাস লেবুর রস পান করুন। এর ফলে আপনার পেটের চর্বি দীগুণ হারে কমতে শুরু করবে এবং আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক ও সুন্দর করবে।
চর্বি যুক্ত খাবার পরিহার করুনঃ যতটা সম্ভব চর্বি যুক্ত বা আমিষ জাতীয় খাবার পরিহার করুন। এর ফলে আপনার শরীরে অযাচিত বেড়ে যাওয়া মেদ কমবে।
প্রচুর পরিমান ফলমূল ও সবজি খানঃ প্রতিদিন সকালে আপনি প্রচুর পরিমান ফলমূল ও সবজি খান এর ফলে আপনার শরীর হয়ে উঠবে সজিব অতিরিক্ত চর্বি মুক্ত এবং আপনার শরীরে অক্সিডেন্ট, মিনারেল, ভিটামিনের পরিমাণ বাড়াবে।
আপনার রান্নায় উপকারী মসলা যুক্ত করুনঃ দারুচিনি, আদা ও কালো মরিচ এসব মসলা দিয়ে তরকারী রান্না করার চেষ্টা করুন। এসকল মসলা সাস্থের জন্য এবং মেদ কমাতে অত্যন্ত উপকারী। এসব মসলা শরীরে ইনসুলিনের পরিমান বাড়ায় এবং চিনির পরিমান হ্রাস করে।
উপরের নিয়ম গুলো মেনে চললে আপনার অতিরিক্ত পেট কমতে বাধ্য। সঠিক উপায়ে খাবার হল পেটের মেদ বা চর্বি কমার আদর্শ উপায়।
সূত্রঃ ইন্ডিয়া টাইমস।
পেটের মেদ কমানোর সহজ উপায়
# প্রতিদিনের সকালটা শুরু হোক লেবুর সরবত দিয়ে। এই পদ্ধতি পেটের মেদ কমানোর সবচেয়ে কার্যকরী ১টি উপায়। ১ গ্লাসে হালকা গরম পানি নিয়ে তাতে লেবু চিপে সরবত করে সঙ্গে একটু লবণ মিশিয়ে নিন। ইচ্ছে হলে একটু মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু চিনি মিশাবেন না। প্রতিদিন সকালে পানীয়টি পান করুন। এই পানীয় আপনার বিপাক প্রক্রিয়া বাড়িয়ে পেটের মেদ কমায়।
# সাদা ভাত কম খান অথবা কিছুদিনের জন্য ছেড়ে দিন সাদা চালের ভাত খাওয়া। সাদা চালের ভাতের বদলে বিভিন্ন গম জাতীয় শস্য যুক্ত করে নিন আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। তাছাড়া লাল চালের ভাত, গমের রুটি, ওটস, অন্যান্য শস্য যুক্ত করে নিতে পারেন।
# চিনি জাতীয় খাবার থেকে দূরেই থাকুন অর্থাৎ চিনিকে না বলুন। এছাড়া মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন মিষ্টি, চকলেট, আইসক্রিম, ফিরনী, সেমাই ইত্যাদি থেকে কিছুদিনের জন্য বিদায় নিয়ে নিন।
# উচ্চ তেলযুক্ত খাবার এবং কোল্ড ড্রিঙ্কসগুলো শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চর্বি জমিয়ে রাখে। যেমন আমাদের পেট কিংবা উরু। সুতরাং বুঝেই ফেলেছেন যে এই খাবারগুলো তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে।
# প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন যদি আপনি আপনার পেটের মেদ কাটিয়ে উঠতে চান তবে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান আপনার শরীরের বিপাকের হার বাড়ানোর পাশাপাশি আপনার শরীরের বিষাক্ত উপাদান গুলোকে দূর করে দিবে। তাই পানিকে প্রাকৃতিক ক্লিঞ্জার বলা হয়।
# কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া সকাল বেলা চুষে খান। তারপরে লেবুর সরবত পান করুন। এই চিকিৎসাটি আপনার ওজন কমানোর জন্য সাহায্য করবে এবং শরীরের রক্ত প্রবাহ সহজ করবে।
# যতদিন পেটের মেদ না কমবে ততদিন নন-ভেজ খাদ্য অর্থাৎ মাংস, মাছ, ডিম, দুধ বাদ দিতে হবে। তবে মাছের টুকরোর চামড়া ফেলে খাওয়া যেতেই পারে।
# আপনার খাদ্য তালিকাটি ফল আর সবজি। প্রতিদিন সকাল এবং বিকাল এই দুই সময়ে ফল ও সবজি খান। তবে এক্ষেত্রে পানি জাতীয় ফল বাছাই করুন। এই অভ্যাসটি আপনার দেহে এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজলবণ এর ঘাটতি পূরণ করবে।
# ঝাল খাবার খান। অবাক হচ্ছেন? অবাক হবেন না। ঝাল খাবেন কিন্তু ঝাল গুলো আসবে দারচিনি, আদা, গোলমরিচ এবং কাঁচামরিচ থেকে। এগুলো রান্নায় ব্যবহার করুন। এই মশলা স্বাস্থ্যকর। এগুলো শরীরের ইনসুলিন সরবরাহ বাড়ায় এবং রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। তাই এগুলো ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী।
সবকিছু করার পরেও আপনাকে যেটা করতে হবে তাহলো ব্যায়াম। মেদ কমাতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। শরীরকে ঠিক রাখতে প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করতে হবে।
কিছু কার্যকরি ব্যায়াম মেদ কমানোর জন্য
০১. পেছনে বাঁকানোঃ
দু পায়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান। দুই হাত আঙ্গুলে-আঙ্গুলে এক করে পেছনের দিকে নিয়ে যান। এবার শ্বাস নিন, উপরের দিকে ঘাড়সহ পিঠটাকে বাঁকানোর চেষ্টা করুন, বুকের সামনের অংশ উপরে তুলুন এবং এই অবস্থায় কিছুক্ষণ স্থির থাকুন।
০২. সামনে বাঁকানোঃ
হাঁটু নরম রেখে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ুন, নাকটাকে হাঁটু বরাবর আনার চেষ্টা করুন। হাতের আঙ্গুল গুলো আগের মত একসাথে করে, দুই হাত সোজা রেখে হাত দুটিকে উপরে উঠান এবং মাথার উপর দিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন।
০৩. চেয়ারঃ
শ্বাস নিন এবং হাঁটু বাঁকা করুন (পিঁড়িতে বসার মত করে)। হাতের আঙ্গুল গুলো খোলা অবস্থায় রেখে সামনের দিকে মেলে ধরুন। আপনার উঁড়ু যখন মেঝের সমান্তরালে তখন হাত দুটিকে কান পর্যন্ত উঠান। সমস্ত ওজন যেন গোড়ালিতে পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। নিঃশ্বাস নিতে নিতে উঠে দাঁড়ান এবং দুই হাত দেহের পাশে নিয়ে আসুন। নিঃশ্বাস ছাড়ুন।
০৪. নিম্নগামী মুখ-ভঙ্গীঃ
একসাথে ৪ টাই করুন, হিপ উপরে উঠান এবং হাত ও পা সোজা রাখুন। যেমনটি ছবিতে আছে তেমনি ভাবে চেষ্টা করুন।
০৫. প্ল্যাঙ্কঃ
হাত সোজা রেখে পুশ-আপ এর মত ভঙ্গিতে নিঃশ্বাস নিন। এবার শ্বাস ছাড়ুন, কনুই বাঁকিয়ে এমন ভাবে আনুন যেন তা আপনার দেহের দিকে থাকে। এবার আস্তে আস্তে সমস্ত শরীর নিচে নামাতে থাকুন যতক্ষণ না বুক মেঝে বরাবর থাকে।
০৬. কোবরাঃ
পায়ের আঙ্গুল গুলো এমন ভাবে উল্টো করে রাখুন যেন কব্জিটি মেঝে স্পর্শ করে। নিঃশ্বাস নিতে নিতে মেঝেতে কনুই চেপে ধরুন, হাত সোজা রাখুন (সামান্য বাঁকানো থাকতে পারে)। এবার আস্তে আস্তে শরীরের উপরের অংশ মেঝে থেকে উপরে উঠাতে থাকুন। এমন ভাবে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আরামের সাথে শরীরকে মেঝে বরাবর আনুন। আবার শ্বাস গ্রহণ করুন, পায়ের আঙ্গুল বাঁকিয়ে নিচের দিকে নিয়ে হিপের উপর চাপ দিয়ে ৪ নং অনুশীলনটি করুন। শ্বাস ছাড়ুন।