শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
JunedAhmed3

Call

আজকাল এটা কল্পনা করা কোন ব্যাপারই না যে, একজন ম্যারাথন এর প্রতিযোগী ফিনিস লাইন উত্তরণ করছে শুধুমাত্র তার সিগারেটে আগুন ধরানোর জন্য। যারা জিমে যান, তারা নিজেদেরকে আরও সৌন্দর্যের অধিকারী করার জন্য সিগারেট পান করেন। তাদের জিম এর ব্যায়ামগুলো শরীরের সাথে মানিয়ে নিতে ধূমপান করে থাকেন। অনেকেই এখন ই-সিগারেট অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক সিগারেট পান করা শুরু করেছেন। সকলেরই ধারণা এতে শরীরের কোন ক্ষতি হচ্ছে না।


মারলবরস এর বিপদজনক প্রভাপ থেকে রক্ষা করার জন্য ই-সিগারেট তৈরি করা হয়েছে। নিকোটিন এর কারনে ক্যান্সার ও হৃদরোগ হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তা থেকে বাঁচবার জন্যই ই-সিগারেট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, ই-সিগারেট এর ধোয়ার কারনে ফুসফুসে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ হচ্ছে। আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন এর ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক বিষয়ক কনসালটেন্ট ডাক্তার নরমান এদেলম্যান বলেছেন, রাসায়নিকভাবে ই-সিগারেট তৈরি করার কারনে এটি স্বাস্থ্যের প্রতি ক্ষতিকর প্রভাপ ফেলে। এতে হার্টের সমস্যার সাথে সাথে আপনার শারীরিক কর্ম-ক্ষমতার প্রতিও মারাত্মক প্রভাপ পরতে পারে। এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিচে আলোচনা করা হল-


# ধূমপায়ীদের সংখ্যা বৃদ্ধি:


আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সেন্টার এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ সালে প্রায় ২,৫০,০০০ লক্ষ যুবক নতুন করে ধূমপান শুরু করেছেন। যারা কখনও সিগারেট এর স্বাদ নেয়নি, তারা ই-সিগারেট পান করা শুরু করেছেন। চারজন যুবকের মধ্যে ৩ জন যুবকই সিগারেট পান করছে, যেহেতু তাদের নিকোটিন এর উপর নেশা হয়ে গেছে।

স্বাস্থ্যবান ও কম বয়সী যুবকগণ ই-সিগারেট এর উপর দিন দিন আসক্ত হয়ে পরছে। অনেকেই ক্ষুধা কমাতে, মেজাজ ঠাণ্ডা রাখতে, হৃদস্পন্দন বাড়াতে ই-সিগারেট এর সংক্রমণে আসক্ত হচ্ছে।

ই-সিগারেট এর ধোয়া অনেক ধরনের রোগের সৃষ্টি করে। কিসব উপাদান দিয়ে ই-সিগারেট এর ভ্যাপোর তৈরি করা হয়েছে, তা এখনো জানা সম্ভন হয় নি।


# ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর:


বাস্তব সিগারেটের মত না হলেও ই-সিগারেট এও ধোয়া হয়। এদেলম্যান বলেছেন, “ই-সিগারেটের ফলে ফুসফুসে প্রদাহ এর সঞ্চালন ঘটে। যার ফলে কাশি ও বিভিন্ন ফুসফুসজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণ ব্যায়াম এর সময় ফুসফুসের সমস্যা বোঝা যায় না, কিন্তু যখন শক্তিশালী ব্যায়ামগুলো করা শুরু করবেন তখনি সমস্যাটি বুঝা যাবে। ই-সিগারেট এর ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়।

আমেরিকার এলারজি, হাঁপানি ও রোগের অনাক্রম্যতা কলেজের মতে, ই-সিগারেটের ফলে এস্থেমা ও এলারজি এর সমস্যা অধিক হারে বৃদ্ধি পায়।


# হার্টের জন্য ক্ষতিকর:


এদেলম্যান এর মতে, “ধূমপান ত্যাগ করার পর স্বাস্থ্যের উন্নতি, ফিটনেস বৃদ্ধি ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দূর হয়। তবে তারা নিশ্চিত নন যে ফুসফুসের উন্নতি হচ্ছে নাকি শরীরে রক্ত প্রবাহের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আসল কথা হল ধূমপান ত্যাগ করলেই ফিটনেস বৃদ্ধি পায়”।

ধূমপানের ফলে যদি রক্ত প্রবাহের কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে এতে নিকোটিনের কারনে হয়ে থাকে। ই-সিগারেট অন্যান্য সিগারেটের তুলনায় ফুসফুসের কম ক্ষতি সাধন করে। কিন্তু এতে অতিরিক্ত নিকোটিন এর ফলে শরীরে বিভিন্ন প্রদাহের সমস্যা শুরু হয়।


এছাড়াও এখন বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করা হচ্ছে, ই-সিগারেটের ভালো ও খারাপ প্রভাপ নিয়ে। সাধারণ সিগারেটের তুলনায় কম ক্ষতিকর হলেও ই-সিগারেটেরও বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাপ রয়েছে। তাই, সর্বক্ষেত্রে একটি কথাই নিশ্চিত যে, ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Yakub Ali

Call

ইলেকট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট ব্যাটারি চালিত এক ধরনের যন্ত্র। যারা ধূমপান ছেড়ে দিতে চান তারা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতেই এই ই-সিগারেট পান করেন। কিন্তু আদৌ এই ই সিগারেট ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে না বরং এটি মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর।


ইলেকট্রনিক সিগারেটের ভেতরে থাকে নিকোটিনের দ্রবণ যা ব্যাটারির মাধ্যমে গরম হয়। এর ফলে ধোঁয়া তৈরি হয়। এটি মস্তিষ্কে ধূমপানের মতো অনুভূতির সৃষ্টি করে। গত কয়েক বছর ধরে সারা বিশ্বে ইলেকট্রনিক সিগারেটের প্রচলন বেড়েছে। তবে ইউরোপসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে এই সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।


গবেষকরা বলছেন, যারা ই-সিগারেট সেবন করছেন তাঁদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। দি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ই-সিগারেটে আছে জীবাণুনাশক ফরমালডিহাইড,যেটি ক্যানসার তৈরির উপাদান।


জানুয়ারির ২৮ তারিখে ক্যালিফোর্নিয়া হেলথ ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ই-সিগারেট মানুষের জন্য হুমকি স্বরূপ এবং এটিকে আইনের আওতায় আনা উচিত। ই-সিগারেট কতটা নিরাপাদ এই বিষয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েবএমডিতে প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। আসুন জেনে নিই কী রয়েছে ই-সিগারেটে।


গবেষকরা বলছেন, ই-সিগারেটে কী রয়েছে এর কোনো সহজ উত্তর নেই। কারণ ই-সিগারেট তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ তত্ত্বাবধায়নের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। এর কোনো নির্ধারিত মান নেই। কী কী উপাদান দিয়ে এটি তৈরি হয় সে সম্বন্ধেও কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয় না।


ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)রিভিউর ফলাফলে দেখা গেছে, ১৮টি বিভিন্ন ই-সিগারেটের কয়েকটির মধ্যে টক্সিক এবং কারসিনোজেনিক ক্যামিক্যাল পাওয়া গেছ। কারসিনোজেন ক্যানসার তৈরিকারী উপাদান। এর মধ্যে নিকোটিন রয়েছে। ফলাফলে বলা হচ্ছে, ই-সিগারেট তৈরির মান নির্ণয়ের পদ্ধতিটি অসংগত।


এ ছাড়া ই সিগারেটে আরো কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো জানা উচিত :


ই-লিকুইড : ই-লিকুইড অথবা ই-জুস। এগুলো এমন এক ধরনের দ্রবণ যেগুলো তাপ উৎপাদন করে এবং অ্যারোসোলে রূপান্তর হয়। যেটা বাষ্পায়িত হয়ে বুকের ভেতরে প্রবেশ করে।


নিকোটিন : ই-সিগারেট এবং সাধারণ সিগারেট দুই ধরনের সিগারেটেই নিকোটিন ( নেশা জাতীয় দ্রব্য) থাকে। এটি মস্তিস্কের মধ্য স্নায়ুতে উদ্দীপকের কাজ করে। এটি রক্তচাপ, শ্বাসপ্রশাস এবং হৃদস্পন্দন বাড়ায়।


‘মানুষ সাধারণত ধূমপান করে নিকোটিনের কারণে’, বলে জানিয়েছেন গবেষক ডাক্তার মেসিজ গনিওইজ। তিনি নিউইর্কের রসওয়েল পার্ক সেন্টারের ইনস্টিটিউট ইন বাফেলো এর টোবাকো এবং ই-সিগারেট বিশেষজ্ঞ। ‘নিকোটিনের নেশা তৈরি করে। কিন্তু এটি ক্যানসার তৈরির কারণ নয়। কিন্তু ই-লিকুইডে থাকা অন্যান্য উপাদান বেশ উদ্বেগ জনক।’


ফ্লেভোরিংস : ডাক্তার গনিওইজ জানান, একশোরও বেশি স্বাদের ই-সিগারেট রয়েছে। চেরি, চিজ কেক, সিনামোন, টোবাকো ইত্যাদি। এগুলো সব গন্ধযুক্ত খাবারে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ডায়াসেটিল রয়েছে। এটি সাধারণত পপকর্নের মাখনযুক্ত গন্ধ তৈরি করে। এর সাথে ফুসফুসের রোগের একটি যোগসূত্র রয়েছে এবং এটি বেশ ক্ষতিকরও।


প্রোপাইলিন গ্লাইকোল (পিজি) : পিজি গবেষণাগারে বানানো লিকুইড যা খাদ্য, ওষুধ এবং কসমেটিক বানানোর জন্য নিরাপদ। এটি রক-কনসার্টে কৃত্রিম ধোঁয়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ফুসফুস এবং চোখে বিরক্তির উদ্রেগ করে। এটি ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের জন্য ক্ষতিকর। যেমন : অ্যাজমা ও এমপাইসিমা।


গ্লিসারিন : এটি গন্ধহীন এবং বর্ণহীন। তরল গ্লিসারিন অনেকটা মিষ্টি স্বাদের হয়। এটি বিভিন্ন পণ্যে পাওয়া যায়।


ধোয়া তৈরির তরল : ই-সিগারেটে ধোয়া তৈরির জন্য এক ধরনের ই-লিকুইড বা তরল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ধোয়া শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এমন ক্ষতি সত্যিকারের সিগারেটেও হয় না বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালোফোর্নিয়ার অধ্যাপক বেনোউইটজ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ