ভাই এটা আপনাদের টেনশনের জন্য হচ্ছে।সাধারণত মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সাথে এমনটা হয়েই থাকে।যেমন আমার মৃত নানীকে আমার মামা,খালা,মা,ভাইবোনেরা সপ্ন দেখে নানি তাদের সাথে বিভিন্ন কথা বলে।তাই আপনি আপনার বাবার জন্য চিন্তা না করে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন যাতে আপনার বাবা জান্নাতে যেতে পারে।আর দিনে যেটা দেখেছেন সেটা মনের ভুল।মাথায় চিন্তা থাকলে এমন হতেই পারে।
এটা হয় আপনি ভুল দেখেছেন(কল্পনা /ঠিক মত খেয়াল করেননি) নয়তো কোনো জিন আপনাকে ভয় দেখাতে চাচ্ছে (ক্ষতি করবে তাই) আর আপনা বাবাকে স্বপ্ন দেখা এটাতো মনে হয় অবচেতনে দেখা কিছু যার কোনো অর্থ নাই!!!!! মানুষ মৃত্যু বরন করলে তার কোনো প্রভাব থাকেনা এবং তার অন্য জগত অর্থ্যাত সময় শুরু তাই এই জগত নিয়ে তার চিন্তা থাকবে না কারন তার কবরের জিবন নিয়ে তিনি থাকবেন। কিন্তু এই স্বপ্ন বারবার দেখলে সেটা অন্য কিছু।এই রকম স্বপ্ন আরো দেখলে জানাবেন, ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করবো ইনসাআল্লা।
আল্লাহ মানুষ ও জ্বীনকে শুধুমাত্র তার ইবাদাত করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন (আল-কুরআন)। সুতরাং, পৃথিবীতে মানুষ যেমন আছে, তেমনি জ্বীনও আছে। মানুষ মাটির তৈরি, জ্বীন আগুনের তৈরি। মানুষকে মাটি দ্বারা আঘাত করলে যেমন মানুষ ব্যথা পায়, ঠিক তেমনি জ্বীনকে আগুন দেখালেও জ্বীন ভয় পায়। মানুষ অন্য কোনো প্রাণী বা অন্য কোনো মানুষের রূপ ধারণ করতে পারেনা, কিন্তু জ্বীন যেকোনো মানুষ বা প্রাণীর রূপ ধারণ করতে পারে। মানুষ সবসময়ই দৃশ্যমান, পক্ষান্তরে জ্বীন সাধারণত অদৃশ্যমান হলেও সে তার রূপ নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে দেখাতে পারে এবং সে যেকোনো মানুষ বা প্রাণীর রূপ ধারণ করতে পারে। সাধারণত মানুষ, জ্বীনকে ভূত বা জ্বীনের ভয়কে ভূতের ভয় বলে মনে করে। জ্বীনরা সাধারণত সন্ধ্যা ও রাতে খুব বেশি বিচরণ করলেও অন্য সময়েও ভিন্ন রূপ ধারণ করতে পারে। আপনি যাকে বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখেছেন, হতে পারে সে কোনো জ্বীন, যে আপনার মায়ের রূপ ধারণ করে বিছানায় শুয়ে ছিলো। অনেক মানুষই মৃত মানুষকে স্বপ্নে দেখে। মৃত মানুষ জীবিত রূপে কারো স্বপ্নে আসলে সেটা অস্বাভাবিকের কিছু নয়। আপনার ছোট বোন আপনার বাবাকে অনেক বেশি ভালবাসতো এবং আপনার বাবা মারা যাওয়াতে সে অনেক বেশি দুঃখ পায়, যে কারণে বাবাকে নিয়ে মন খারাপ করে। তাই আল্লাহ তার স্বপ্নে তার বাবাকে দেখায়, যাতে করে তার কষ্টটা কমে যায়। প্রত্যেক মানুষ যেমন দুনিয়াতে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে, ঠিক তেমনি মৃত্যুর পর আখিরাতে চিরস্থায়ী প্রাণ লাভ করবে। যেহেতু মৃত্যুর পর মানুষ চিরস্থায়ী জীবন লাভ করে, সেহেতু প্রত্যেক মানুষই আখিরাতে জীবিত থাকে। যেহেতু আপনার বাবা দুনিয়াতে মারা গেছে এবং আখিরাতে জীবিত আছে, সেহেতু আখিরাতের দিক হতে স্বপ্নে 'আমি মরিনি, আমি বেঁচে আছি (আমি জীবিত)' কথাটি তিনি ভুল বনেননি। এবং যেহেতু আপনার বাবা স্বপ্নে বেড়ানোর কথা বলেছেন, সেহেতু হতে পারে তিনি জান্নাতে বা জান্নাতের বাগানে বেড়ানোর কথা বুঝিয়েছেন। অনেক মানুষই বাস্তবে জ্বীন-পরী তথা এদের মনুষ্য বা প্রাণীরূপ দেখে, আবার অনেক মানুষই স্বপ্নে মৃত মানুষকে দেখতে পায়। যেহেতু কুরআন সত্য, সেহেতু মানুষের পাশাপাশি পৃথিবীতে জ্বীন-পরী রয়েছে, সেটাও সত্য। কোনো মৃত মানুষ স্বপ্নে কিছু বললে বা দেখালে, প্রকৃতপক্ষে সেটি মিথ্যে নয়, কারণ মৃত মানুষ স্বপ্নে কখনো মিথ্যে বলতে পারে না, আবার জ্বীন বা শয়তান কখনো মৃত মানুষের রূপ ধারণ করতে পারে না। দুনিয়া বা দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী, পরকাল বা পরকালের জীবন চিরস্থায়ী। পরকালীন জীবনে মানুষ জীবিত থেকে জান্নাতের সুখ বা জাহান্নামের দুঃখ ভোগ করে। ধন্যবাদ।