অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ উপায় হলো সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং প্রচুর কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম করা। যারা কায়িক শ্রম বেশী করেন তাদের ব্যায়েমের প্রয়োজন নেই।
নিয়মিত হাটা খুব ভাল ব্যায়াম। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে হাটতে পারেন, সাইকেল চালানো, সাতার কাটা, ত্রিকোণ আসন উস্থান আসন, প্রভৃতি ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী।
চর্বি জাতীয় খাবার যেমন মাখন, তেল, গরু বা খাসির মাংস বাটার প্রভৃতি থেকে দূরে থাকতে হবে। শরীরের জন্য এগুরো প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণে যার কম বেশী হলে সমস্যার দেখা দেয়। এজন্য অনেক সময় দেখা যায় ওজন কমাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেকে। এজন্য প্রয়োজন খাদ্য গ্রহণ পরিমান সম্পর্কে সচেতন হওয়া। প্রচুর পরিমানে শাক-সবজি ও ফলমূল খাবেন এবং বেশি বেশি পানি পান করবেন। একবারে বেশী খাবেন না একটু পর পর অল্প অল্প করে খাবেন। ক্ষুধা লাগলে শশা বা ফল খেয়ে নেবেন। কারণ শশা ও টকফল ওজন কমাতে
কার্যকরি
দ্রুত ওজন কমাবার সহজ উপায় এর থেকে আর কিছু হতেই পারে না। ১. প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম লেবুর শরবত: এক গ্লাস গরম পানিতে অর্ধেকটা লেবু চিপে নিন, এতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে নিন। চিনি দেবেন না। এবার পান করুন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আর রাতে ঘুমুতে যাবার ঠিক আগে। এটি আপনার দেহের বাড়তি মেদ ও চর্বি কমাতে সব চেয়ে ভালো উপায়। ২. সাদা ভাতের বদলে লাল চালের ভাত: সাদা ভাতের বদলে বেছে নিতে পারেন লাল চালের ভাত, ব্রাউন ব্রেড, আটার রুটি। এতে আপনার দেহে ক্যালোরি অতিরিক্ত ঢুকবে না। পেটে জমা চর্বি কমে আসবে ধীরে ধীরে। ৩. চিনিযুক্ত খাবার একেবারেই না: মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার, কোল্ড ড্রিংকস এবং তেলে ভাজা স্ন্যাক্স থেকে দূরে থাকুন। কেননা এ জাতীয় খাবারগুলো আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশে, বিশেষত পেট ও উরুতে খুব দ্রুত চর্বি জমিয়ে ফেলে। তাই এগুলো খাওয়ার পরিবর্তে ফল খান। ৪. প্রচুর পানি পান করুন: প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করার ফলে এটা আপনার দেহের মেটাবলিজম বাড়ায় ও রক্তের ক্ষতিকর উপাদান প্রস্রাবের সঙ্গে বের করে দেয়। মেটাবলিজম বাড়ার ফলে দেহে চর্বি জমতে পারে না ও বাড়তি চর্বি ঝরে যায়। ৫. প্রতিদিন তিন কোয়া রসুন: প্রতিদিন সকালে উঠেই খালি পেটে ২/৩ কোয়া রসুন চিবিয়ে খেয়ে নিন, এর ঠিক পর পরই পান করুন লেবুর রস। এটি আপনার পেটের চর্বি কমাতে দ্বিগুণ দ্রুতগতিতে কাজ করবে। তাছাড়া দেহের রক্ত চলাচলকে আরো বেশি সহজ করবে এটি। ৬. মশলা খান: রান্নায় অতিরিক্ত মশলা ব্যবহার করা ঠিক নয়। তবে কিছু মশলা ওজন কমাতে সাহায্য করে ম্যাজিকের মতো। রান্নার ব্যবহার করুন দারুচিনি, আদা ও গোলমরিচ। এগুলো আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাবে ও পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে। ৭. প্রচুর ফল ও সবজি: প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এক বাটি ভর্তি ফল ও সবজি খাবার চেষ্টা করুন। এতে আপনার শরীর পাবে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ভিটামিন। আর এগুলো আপনার রক্তের মেটাবলিজম বাড়িয়ে পেটের চর্বি কমিয়ে আনবে সহজেই। ৮. মাংস থেকে দূরে থাকুন: অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এর বদলে বেছে নিতে পারেন কম তেলে রান্না করা । এবং প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।
ওজন কমানোর ১০ টি ধাপ।
১) সপ্তাহে অন্তত ২ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করে ঘাম ঝরিয়ে নিন।
২) কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, কোল্ড ড্রিঙ্ক, চিনি দেয়া জুস, মিষ্টি থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন।
৩) খাবারে লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন। ভাতের সঙ্গে আলাদা ভাবে লবণ খাবেন না।
৪) রাত ৮টার পরে কার্বোহাইড্রেট যুক্ত কোনো খাবার খাবেন না।
৫) রান্নায় আলু ব্যবহার করবেন না এবং দুধ খেলে ননিযুক্ত না খেয়ে ননীমুক্ত দুধ খাবেন।
৬) প্রতিদিন ১ চা চামচের বেশি তেল খাওয়া যাবে না কোনো ভাবেই। রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন।
৭) প্রতিদিন অন্তত আধা কেজি ফল ও আধা কেজি সবজি খান।
৮) প্রতিদিন অন্তুত ৮ গ্লাস পানি পান করুন।
৯) প্রতিদিন রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমান।
১০) প্রতি বেলা খাওয়ার পরে দুধ ও চিনি ছাড়া এক কাপ গ্রীন টি পান করুন।
নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে শরীরটাকে হালকা
রাখতে হিমসিম খেতে হয় প্রায় সবাইকে। চাকরিতে
ঢোকার পর কিংবা বিয়ের কিছুদিন পরই শুরু হয়ে যায়
দুশ্চিন্তা- “মোটা হয়ে যাচ্ছি!” আর মেয়েদের
ক্ষেত্রে সন্তান হওয়ার পর তো কথাই নেই,
ওজন বেড়ে দ্বিগুণ। কিন্তু কে চায় ওজন বেশি
নিয়ে ঘুরতে? অবশ্য না চাইলেও উপায় নেই, ওজন
যেন কিচ্ছুতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ডায়েট, ব্যায়াম
ইত্যাদি সবকিছুকে ব্যর্থ করে ওজন যেন দিন দিন
বাড়তে থাকে আর বাড়তেই থাকে!
জানেন কি, এই ওজন বাড়া কিন্তু আপনারই ভুল। আপনি
হয়তো সবই করছে নিয়ন্ত্রণ করতে, কিন্তু ভুল
উপায়ে। আসুন, আজ জেনে নেই এমন ২০টি
টিপস, যেগুলো মেনে চললে সারা জীবন
আপনার ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রণে। আপনি সবসময়
থাকবেন ফিট ও হিট!
১. ডায়েটিং রোজকার জীবনে নিশ্চয়ই জরুরি,
তবে খাবার খাওয়ার মধ্যে যেন বেশি সময়ের
ব্যবধান না থাকে। ডায়েট করতে গিয়ে কখনোই
না খেয়ে থাকবেন। দিনে অন্তত চার থেকে পাঁচ বার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। হ্যাঁ,
অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার।
২. যেহেতু আজকাল বেশিরভাগ চাকরিও সেই
ডেস্কে বসে, তাই মেয়েদের ক্ষেত্রে
দৈনিক ক্যালোরি গ্রহনের পরিমান দিনে ১০০০-১৫০০
বেশি না হওয়াই ভাল। পুরুষের শারিরিরক চাহিদা একটু
বেশি বিধায় তাদের জন্য ২০০০ ক্যালোরি বরাদ্দ।
এর বেশি হলেই ভুঁড়ি জমতে সময় লাগবে না!
৩. রোজ দিনে অন্তত একবার হালকা শরীরচর্চা
করা জরুরি। দৈনিক ২০ মিনিট দিন ব্যায়ামে। হয়তো
কোথাও হেঁটে গেলেন, কিংবা বারান্দায় দাঁড়িয়ে
সেরে নিলেন জগিং।
৪. রাতের খাবার খাওয়ার পর খানিকক্ষণ হালকা
শরীরচর্চা করা ভাল। খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর একটু
হেঁটে নিতে পারেন। এতে শরীর ঝরঝরে
থাকবে।
৫. এলোপাথাড়ি ব্যায়াম না করে নিজের শরীরের
সাথে মানানসই ব্যায়াম বেছে নেবেন। এবং দৈনিক
সময়মত করবেন ব্যায়ামটুকু। বাজার থেকে কেনান
সস খাওয়া বাদ দিন, এতে প্রচুর চিনি থাকে।
৬. প্রত্যেক সপ্তাহে একই দিনে ও একই সময়ে
ওজন মাপুন। এটা আপনাকে মানসিকভাবে সাহায্য করে
ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে, রাখবে সতর্ক।
৭. খাওয়াদাওয়ার সঠিক সময় মেনে চলুন। একদম ঘড়ির
কাঁটা ধরে। হজম ক্ষমতা গতিশীল রাখতে এটা খুব
জরুরী।
৮. সারাদিনের প্রত্যেকটা খাবার খাবেন, বাদ
দেবেন না। এমনকি ব্রেকফাস্ট খাওয়াও
প্রয়োজন অবশ্যই। পেট দীর্ঘক্ষণ খালি
রাখবেন না। এতে মেটাবলিজম কমে যাবে ও
ওজন বাড়বে।
৯. ভাজা-পোড়া খাবেন সপ্তাহে একদিন।
১০. নির্দিষ্ট বেলার খাবারের মাঝের সময়ে যদি
খিদে পায়,তাহলে প্রচুর পরিমানে পানি খান। খেতে
পারেন প্রচুর ফল।
১১. মিষ্টি, কোমল পানীয়, কেক ইত্যাদি খাবার
সপ্তাহে একদিন। বিস্কিট কিনতে হলে ডায়েট
বিস্কিট কিনুন।
১২. প্রাণীজ ফ্যাট, বিশেষত লাল মাংস ও ডালডা
খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিন। মাংস খেলে চামড়া
ও চর্বি বাদ দিয়ে খান অবশ্যই।
১৩. অতিরিক্ত দুধ জাতীয় খাবার যেমন মাখন বা চিজ
বেশি খাবেন না। সপ্তাহে দুদিন চলতে পারে।
১৪. দিনে দুইকাপ গ্রিন টি পানের অভ্যাস গড়ে
তুলুন।
১৫. মাদকজাতীয় দ্রব্যের নেশা ছেড়ে দিন।
মদ্যপান ছেড়ে দিন।
১৬. পর্যাপ্ত পরিমানে কার্বোহাইড্রেট জাতীয়
খাবার খান (যেমন – আলু, ভাত, রুটি)। এগুলো বেশি
খাওয়া মানেই শরীর মোটা হয়ে যাওয়া। লাল চালের
ভাত ও লাল আটার রুটি খেতে পারলে সবচাইতে
ভালো।
১৭. দুপুরে ও রাতে অবশ্যই এক কাপ করে সালাদ বা
কম মশলায় রান্না সবজি খেতে হবে।
১৮. খাবারের প্লেটের আকার ছোট করুন এবং
একবারের বেশি দুবার নিয়ে খাওয়ার প্রবণতা ত্যাগ
করুন। খাবার একবারেই প্লেটে তুলে নেবেন।
১৯. চেষ্টা করুন সকালে ভারী ব্রেকফাস্ট করার।
সামান্য ভারী লাঞ্চ এবং হালকা ডিনার করার। নাস্তা
হিসাবে খান বাদাম, মুড়ি, ফল, ডায়েট বিস্কিট।
২০. চিনি খাওয়া কমিয়ে নিয়ে আসুন দিনে দুই চামচে।
এর বেশি প্রয়োজন নেই।