আপনি যদি কোন ওষুধ ব্যবহার করতে চান তাহলে ফার্মেসী তে ট্রুগেইন বা এই জাতীয় কিছু হেয়ার স্প্রে পাবেন এটা ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
আর যদি প্রাকৃতিক উপায়ে উপকার পেতে চান তাহলে সপ্তাহে অন্তত পক্ষে ৩ থেকে ৪ দিন পেয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন, পেয়াজের রস চুল পড়া ও নতুন চুল গজানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে চুল আঁচড়াতে গিয়ে একরাশ চুলের জটলা। এ রকম অবস্থা দেখতে কার ভালো লাগে। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কতো রকমের চেষ্টাই না করেন ভুক্তভোগীরা। চুল পড়া রোধে হাজার হাজার টাকা খরচ করতে অনেকে কুণ্ঠাবোধ করেন না। এই সমস্যাটা এখন অনেক বেশি পরিলক্ষিত হয়। বিভিন্ন কারণে আপনার মাথা থেকে চুল পড়তে পারে। চুলপড়া রোধে সব রকম চেষ্টা করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। তাদের জন্য সুখবর হলো, একটি সাধারণ তেল আপনার মাথায় চুল গজাতে সাহায্য করবে। নতুন চুল গজাতে সাহয্য করা এই তেলের নাম ক্যাস্টর অয়েল। অনেকে জানেন না যে নতুন চুল গজাতে এই তেল কতোটা উপকারী। ক্যাস্টর অয়েলে আছে রিসিনোলেইক এসিড যা নতুন চুল, ভ্রু, চোখের পাপড়ি গজাতে অত্যন্ত সহায়ক। এছাড়াও চুলের রুক্ষ্মতা দূর করে চুলকে মোলায়েম করে তুলতে সহায়তা করে এই তেল। কীভাবে ব্যবহার করবেন : ক্যাস্টর অয়েল একটানা ব্যবহার করলে হবে না, করতে হবে নিয়ম মেনে। সপ্তাহে একদিন করে টানা ৮ সপ্তাহ ব্যবহার করুন এই তেল। ক্যাস্টর অয়েল মধুর মতো ঘন, প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হতেই পারে। ব্যবহার করার পদ্ধতি বেশ সোজা। ক্যাস্টর অয়েল নিন, এতে যোগ করতে পারেন একটি ভিটামিন’ই ক্যাপসুলের ভেতরকার তরল। চুল লম্বা হলে একাধিক ক্যাপসুল দিন। এরপর এই তেল রাতে ঘুমাবার আগে ভালো করে মাথায় মাখুন। বিশেষ করে চুলের গোঁড়ার ত্বকে ম্যাসাজ করে লাগান। সারারাত এই তেল চুলে থাকতে দিন। সকালে শ্যাম্পু করে ফেলুন। কোনো বাড়তি কন্ডিশনার লাগবে না। যেখানে পাবেন : যে কোনো ফার্মেসীতে ও সুপারশপে ক্যাস্টর অয়েল পাবেন আপনি। দেশি-বিদেশি দুই রকমই পাওয়া যায়। দেশি তেলগুলো দামে বেশ সস্তা। মোটামুটি ১০০ টাকার কমে আপনি এক বোতল পাবেন যা ব্যবহার করতে পারবেন ১ মাস! বিদেশি গুলোর দাম একটু বেশি। মানও একটু ভালো। তাহলে আর দেরি কেন, চুলের জন্য বাড়তি চর্চা শুরু করে দিন। পাতলা হয়ে যাওয়া চুলগুলো আবার হয়ে উঠুক ঘন। উল্লেখ্য, যাদের বংশগত কারণে বা কোনো অসুখের জন্য টাক পড়ছে, তাদের ক্ষেত্রে আসলে কোনো চিকিৎসাই কাজ দেবে না। প্রয়োজন আগে অসুখের চিকিৎসা। যাদের চুল পড়ছে স্ট্রেস, যত্নের অভাব, ভুল প্রসাধন ইত্যাদি কারণে; তাদের ক্ষেত্রে ক্যাস্টর অয়েল খুব ভালো কাজে দেবে।
চুল পড়া ও নতুন চুল গজানোর প্রাকৃতিক উপায়
চুল পড়া ও নতুন চুল গজানোর প্রাকৃতিক উপায়-
হ্যাঁ, রসুনেই গজাবে চুল! রসুনে আছে উচ্চমাত্রার সালফার, ভিটামিন সি, সেলেনিয়াম এবং হরেক রকম খনিজ উপাদান যারা নতুন চুল গজাতে অত্যন্ত সহায়ক। রসুনে উপস্থিত কপার নতুন চুল গজায়, চুল কালো করে ও চুলকে ঘন করে। রসুনের ব্যবহারে চুলে কোন সাইড এফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা একদম নেই।
আপনাকে করতে হবে দুটি কাজ। এক, রসুনের নির্যাস মেশানো অলিভ অয়েল তৈরি করতে হবে। এটা করার জন্য এক বোতল অলিভ অয়েলে কয়েক কোয়া রসুন ফেলে রাখুন সপ্তাহ খানেক। মোটামুটি ৭ দিন পার হয়ে গেলেই তৈরি আপনার তেল। মাথায় যখনই তেল দেবেন, এই তেলটি ব্যবহার করুন। চুল পড়া রোধ করতে ও মাথায় নতুন চুল গজাতে এই তেলটি অত্যন্ত সহায়ক। গার্লিক অয়েল প্রস্তুত হবার আগ পর্যন্ত চুল যেখানে কম সেখানে রসুনের কোয়া ঘষে পরে অলিভ অয়েল দিতে পারেন।
তাছাড়া মাথায় উঁকুন থাকলেও এটি কাজে দিবে। সেক্ষেত্রে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার, অলিভ অয়েল ও রসুন বাটা মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে অপেক্ষা করুন ২ ঘণ্টা। তারপর চুল ধুয়ে, শুকিয়ে সাদা ভিনেগার স্প্রে করুন চুলে। এরপর চিকন দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান। উঁকুন চলে যাবে। তবে উঁকুন তাড়ানোর আরও সোজা উপায়টি হচ্ছে, পুরো চুল ও মাথার ত্বকে বেশি করে মেয়নেজ লাগান। মাথা ভালো করে ম্যাসাজ করুন। ২ ঘণ্টা পর চিকন দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে ফেলুন। নিকি ও উকুন মরে যাবে।
এছাড়াও সপ্তাহে কমপক্ষে ৩ বার থেরাপি নিতে পারেন। কয়েক কোয়া রসুন নেবেন, এই রসুনের কোয়া একটু থেঁতলে নিয়ে চুল কমে যাওয়া স্থানগুলোতে ঘষে ঘষে লাগাবেন। আপনি চাইলে রসুনের রস বা রসুনের পেস্টও চুল কমে যাওয়া স্থানগুলোতে প্রয়োগ করতে পারেন। রসুন মাথায় লাগানোর পর এক ঘণ্টা অপেক্ষা করবেন। তারপর অলিভ অয়েল দিয়ে মাথার ত্বক খুব ভালো করে ম্যাসাজ করে নিবেন। তারপর একটি শাওয়ার ক্যাপ বা পলিথিন মাথায় লাগিয়ে ঘুমাতে যান। কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা চুলে এই মিশ্রণ রাখবেন। সকালে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন।
বাজারে এমন অনেক কিছুই আছে। নিজেও বানিয়ে নিতে পারেন!
যদি রসুন দেয়ায় মাথায় জ্বলুনি হয়, তাহলে সাথে সাথে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সেক্ষেত্রে আর কখনো এই থেরাপি পদ্ধতিতে যাবেন না। তবে তেল-রসুনের মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন সব সময়ই।
আমরা সবাই জানি, পেঁয়াজের রস নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে, চুলপড়া কমায় এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। কিন্তু অনেকেই জানি না কীভাবে মাথায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করবেন। এই রসের সঙ্গে অন্য প্রাকৃতিক উপাদান মেশালে এর কার্যকারিতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কীভাবে মাথায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করবেন সে সম্বন্ধে কয়েকটি উপায়ের কথা বলা হয়েছে বোল্ডস্কাই ওয়েবসাইটের লাইফস্টাইল বিভাগে। আপনি চাইলে এই পরামর্শগুলো একবার পরখ করতে পারেন। ১. পেঁয়াজ কেটে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এর রস বের করে নিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। ২. পেঁয়জের রসের সঙ্গে হালকা গরম পানি মিশিয়ে নিন। গোসলের পর এই পানি দিয়ে মাথা ভালো করে ধুয়ে নিন। একদিন পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এতে মাথা থেকে পেঁয়াজের গন্ধ আসতে পারে। তবে চুলের জন্য এই পানি বেশ উপকারী। ৩. পেঁয়াজের রসের সঙ্গে নারকেল তেল ও কয়েক ফোটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। ৪. দুই চা চামচ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত একদিন এই প্যাক মাথায় লাগান। ৫. পেঁয়াজ বেটে এর সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এবার শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।