ভাই, ইসলামে এমন কোনো কথা নেই যে পীরের মুরীদ ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবেনা। আপনি ইসলাম ধর্মের ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস আনেন, ঈমান ঠিক রাখেন, নামাজ পড়েন রোজা করেন। আল্লাহ্ প্রেরিত পবিত্র আল-কোরানের নিষেধ,নিয়ম কানুন,বিধান মনে চলুন, সর্বদা সৎ পথে চলুন, পাপ কর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। তাহলে আর পীরের সরানাপন্ন হতে হবে না। আর এসব অমান্য করে যদি শুধু পীরবাবার মাজারে গিয়ে মাথা ঠোকান, কোনো কাজ হবেনা। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
পীর ছাড়াই জান্নাতে যাওয়া যাবে এতে কোন
সন্দেহ নাই,
কোন পীর কাউকেই জান্নাতে নিতে পারবেনা।
সেই পীর নিজে জান্নাতে যেতে পারবে কিনা
তা নিয়েই সংসয় থাকে।
অনেকে প্রায়ই প্রশ্ন করে থাকেন পীরের মুরীদ হওয়া নিয়ে। কেউ কেউ বলেন- তারা শুনেছেন পীরের মুরীদ হওয়া ছাড়া বেহেশতে যাওয়া যাবে না। এজন্য তাদের কাছে কুরআন ও হাদিস থেকে বিষয়টি আলোচনা করা দরকার। আসলে পীর শব্দটা আরবী ভাষার নয়। অতএব, এটা কুরআন হাদিসে নেই।
অনেকে প্রায়ই প্রশ্ন করে থাকেন পীরের মুরীদ হওয়া নিয়ে। কেউ কেউ বলেন- তারা শুনেছেন পীরের মুরীদ হওয়া ছাড়া বেহেশতে যাওয়া যাবে না। এজন্য তাদের কাছে কুরআন ও হাদিস থেকে বিষয়টি আলোচনা করা দরকার। আসলে পীর শব্দটা আরবী ভাষার নয়। অতএব, এটা কুরআন হাদিসে নেই। কুরআন হাদিসের কোথাও রাসুল [সা.] ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির নির্দেশ সর্বাবস্থায় বিনাপ্রশ্নে মেনে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।
পীরকে অনুসরণ কিংবা তার কথা শোনা যাবে ততটুকুই যতটুকু কুরআন ও হাদিসের অনুকুলে হয়। তবে, কোন পীর যদি ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানী হন তাহলে, শিক্ষাগ্রহণের জন্য তার কাছে যাওয়া যেতে পারে। কোন পীরের কাছে যাওয়ার পরিবর্তে অন্য কোন আলেমের কাছেও শিখতে যাওয়া যেতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা যদি না জেনে থাক তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর। [সুরা নাহল : ৪৩]
আর এ কাজটা যেকোন জ্ঞানী আলেমের কাছে গেলেই হবে। হোকনা সে পীর কিংবা অন্য কোন আলেম। তবে, যে পীর প্রকাশ্যে ইসলামবিরোধী কাজ করেন তাকে কস্মিনকালেও অনুসরণ করা যাবে না; এ কথাটা বলাই বাহুল্য। অনেকে বলে থাকে, যার পীর নেই তার পীর শয়তান। আসলে এ ধরণের কথা হয়ত কোন পীরভক্তের আবেগ প্রসুত কথা হতে পারে যার সাথে কুরআন হাদিসের কোন সম্পর্ক নেই।
অথচ, কুরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
অর্থাৎ, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল [সা.]-এর অনুগত্য করবে, তাকে আল্লাহ তায়ালা এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিচ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। আর এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। [সুরা নিসা: ১৩]
আল্লাহ আরো বলেন,
وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَالرَّسُولَ فَأُوْلَـئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَوَالشُّهَدَاء وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَـئِكَ رَفِيقاً
অর্থাৎ, যে আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করবে তারা নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীল তথা যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা পুরস্কৃত করেছেন তাদের সাথী হবে। এরা কতই না চমৎকার সংগী। [সুরা নিসা: ৬৯]
আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেন,
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ
অর্থাৎ যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের হুকুম মেনে চলে,আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকে,তারাই সফলকাম। [সুরা নুর: ৫২]
উপরের আয়াতগুলো থেকে আমরা শিক্ষাগ্রহণ করতে পারি যে, কারও মুরিদ হোক বা না হোক কুরআন ও হাদিসানুযায়ী আমল করলেই দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা পাওয়া যাবে, ইনশাল্লাহ।
কিয়ামতের দিনটা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ এটা আমাদের সবারই জানা। অনেক পীর সাহেব নাকি মুরিদদেরকে বলে থাকেন, আমার কাছে মুরীদ হও। তাহলে, আমি তোমাদেরকে হাত ধরে ধরে বেহেশতে নিয়ে যাব। প্রশ্ন হল- যে পীর সাহেব মুরিদকে বেহেশতে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন সে পীর সাহেব নিজে যে বেহেশতে যাবেন এর কোন গ্যারান্টি কি তার কাছে আছে? তিনি কোথায় এ ধরণের কথা বলার অথরিটি পেলেন? আসুন! দেখে নিই কুরআনের আলোকে পীর সাহেবের এ কথাটা কতটুকু সহিহ!
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন,
فَالْيَوْمَ لَا يَمْلِكُ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ نَّفْعاً وَلَا ضَرّاً وَنَقُولُ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذُوقُوا عَذَابَ النَّارِ الَّتِي كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
অর্থাৎ, আজকে (কিয়ামতের দিন) তোমাদের কেউ কাউকে উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারবে না। আর আমি অপরাধীদেরকে বলব- জাহান্নামের আগুনের স্বাদ গ্রহণ কর দুনিয়ায় যাকে তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছ। [সুরা সাবা: ৪২]
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يَوْمَ لَا يُغْنِي مَوْلًى عَن مَّوْلًى شَيْئاً وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
অর্থাৎ, সেটি এমন দিন যেদিন কোন নিকটতম প্রিয়জনও কোন নিকটতম প্রিয়জনের কাজে আসবে না। আর তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না। [সুরা দুখান:৪১]