মাইক দিয়ে কুরআন খতম করা কি ইসলামে জায়েজ আছে? আজকাল এটি খুব বেশি পরিমান দেখা যাচ্ছে। প্লিজ জানাবেন?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

না এধরনের প্রচলন নবীজির আমলে ছিল না বা এধরনের বিতর্কিত কাজ করার জন্য কোন নির্দেশনাও নেই তাই মাইক যোগে কোরআন খতমের তেলাওয়াত অন্যতম একটা বেদাত। কোরআনে বলা হয়েছে, "যখন কোরআন পাঠ করা হয় তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো, এতে তমাদের উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে"। অর্থাৎ কোরআন কারো সামনে পাঠ করা হলে বা কোরআন পাঠের আওয়াজ কারো কানে পৌছলে তার জন্য কোরআন তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শ্রবণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর নির্দেশ পালন করা ফরয। অর্থাৎ কেউ যদি কোরআন তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ না করে তবে সে ফরয ছেড়ে দিল যা শক্ত গোনাহ বা পাপ। কোরআনের যে আয়াত স্পষ্টভাবে কোনো কিছুর নির্দেশ দেয় তা ব্যাখ্যার দাবি রাখেনা। এর লঙ্ঘন করলে পরিণামে কী হবেঃ ১) মাইকে এই তেলাওয়াতের আওয়াজ অনেক দূর থেকে শোনা যায় বলে দুনিয়াবী অনেক ধরণের ব্যস্থতার কারণে প্রায় সব মানুষই এই কোরআন তেলাওয়াত শ্রবণে মনোযোগ দিতে পারেনা। এরা না শুনার কারনে গুনাহগার হবে। আপনি অনেক মানুষকে খামাখা পাপী বানালেন। এর দায়ভার সম্পূর্ণরুপে আপনার। ২) প্রশ্রাব-পায়খানার জায়গায় কোরআন তেলাওয়াত করা এবং শ্রবণ করা দুইটাই হারাম। মাইকের আওয়াজতো ওখানেও যায়। অতএব, এখানে আপনি মানুষকে পাপ করতে বাধ্য করছেন। ৩) এতে মানুষ বিরক্ত হলে কোরআনের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হলো, এর পেছনে আপনিই দায়ী। দ্বিতীয়তঃ একে যদি আমরা নাগরিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি তবে মাইক যোগে কোরআন খতম করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ, ১) আশে পাশে অনেক রুগী থাকতে পারে যাদের ভীষণ কষ্ট হবে মাইকের আওয়াজে। ২) আশ-পাশের বাড়ির মানুষের ঘুমের বা স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটবে। ৩) জোর করে মানুষের উপর ধর্মীয় একটা কাজ চাপিয়ে দেয়া হলো আর এই রকম চাপিয়ে দেয়াটা ইসলাম সমর্থন করেনা। ৪) আশ-পাশে অনেক শিক্ষার্থী-পরীক্ষার্থী থাকে যাদের পড়া-শোনায় ভীষণ ব্যাঘাত ঘটে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

কোরান তিলাওয়াত নিশ্চয় একটি সওয়াবের কাজ তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে বর্তমান সময়ে কোরান খতমের নামে হুযুররা যে ব্যাবসা শুরু করেছে তা অবশ্যই গর্হিত কাজ।

কোরান তিলাওয়াত শারীরিক ইবাদত। কিন্তু হুযুররা এখন টাকার বিনিময় সে ইবাদত করে দেয় অন্যের জন্য। তাও আবার যে টাকা দেয় সে চাই, তিনি যে হুযুর দিয়ে কোরান খতম করাচ্ছেন তা সবাই জানুক। তাই তার ইচ্ছাতেই লাগানো হয় মাইক। হুযুর টাকার বিনিময়ে নিজের কমন সেন্স বিক্রি করে দিয়েছে আগেই। অতএব, মাইক দিয়ে এইভাবে পুরো এলাকায় যে কোরান তিলাওয়াত হয় তাতে এলাকার মানুষ অসন্তুষ্ট হয়। চিন্তা করুন, দ্বীনি কাজে অসন্তুষ্ট হয় এমন ভাবে দ্বীনি কাজ করা হারাম ইসলামে।

অথচ তারা আল্লাহর দ্বীন থেকে মানুষকে বিমুখ করতেছে সেটার দিকে তাদের কোন লক্ষ্য নাই। টাকায় তাদের মূখ্য বিষয়।

অতএব, বলব ইসলামে এইভাবে মাইক দিয়ে কোরান খতম করা জায়েজ কি নাজায়েজ বুঝতে কোরান হাদিস লাগেনা। আল্লাহ যে কমন সেন্স তা দিয়ে নিরণয় করা যায়। অধিকাংশ হুযুর টাকার কাছে কিংবা এলাকার প্রভাবশালীর নিকট জিম্মি। তাদের কাছে বিশুদ্ধ উত্তর নাও পেতে পারেন। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ