কি খাবার খাওয়া উচিত? মা এবং শিশুর স্বাস্থ কি করা উচিত?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
ShiponChy

Call

মা হওয়ার আগে মেয়েদের বমি হয় এই জন্য যে... হিউম্যান কোরিওনিক গনাডোট্রোফিন (Human Chorionic Gonadotropin -hCG) নামক হরমোনটি গর্ভকালীন সময়ে শরীরে খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বমি বমি ভাবের ব্যাপারটি হয়ে থাকে। আবার মা যদি গর্ভে জমজ সন্তান ধারণ করেন তবে এর মাত্রা আরও বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এস্ট্রোজন নামক হরমোন বৃদ্ধিও বমি বমি ভাব বা মর্নিং সিকনেস হয়ে থাকে। গর্ভকালীন সময়ে নারীদের গন্ধ শোঁকা বা প্রবল ঘ্রানশক্তির ব্যাপারটি দেখা যায় এস্ট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় বলে। তখন গর্ভবতী নারীরা যেকোনো খাবারে অন্যরকম ঘ্রাণ পায় বলে খেতে সমস্যা হয়, বমি পায়। অনেক মায়েদের এমনিতেও খাবারের ব্যাপারে বাছ থাকে, অনেকে কিছুই খেতে পারেন না। আর সেই সমস্যা গর্ভকালীন সময়ে আরও বেশি প্রকটাকার ধারণ করে থাকে। এর ফলেই দেখা দেয় মর্নিং সিকনেস। কিছু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন মানসিক চাপের প্রভাবে এ সময় বমি করার প্রবণতা বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় সুস্থ মায়ের দেহ থেকে শিশু প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি গ্রহণ করে থাকে। এজন্য সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে আগে মায়ের সুস্থতা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। জন্মের পর বাচ্চা দরকারি সব পুষ্টি পায় মায়ের দুধ পানের ভেতর দিয়ে। তাই প্রসবের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে মা ও শিশুর যত্নে দরকার বিশেষ খাবার। যেমন- ক্যালসিয়াম গর্ভের শিশুর হাড় গঠনে এবং মায়ের হাড়ের ক্ষয় রোধে ক্যালসিয়াম খুব জরুরি। ক্যালসিয়াম মায়ের উচ্চ রক্ত চাপ প্রতিরোধেও সহায়তা করে। সেজন্য গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের পরবর্তী সময়ে মাকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০০ মি.গ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিৎ। ডিম, দুধ, মাছ, পালং শাক, বাদাম থেকে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। শর্করা শর্করা আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। শর্করার উৎস হিসেবে ভাত, রুটি, আলুকে বুঝি। সারাদিনে গর্ভবতী মাকে ৩ থেকে ৪ কাপ ভাত খেতে হবে। কর্মজীবী মায়ের সারাদিনে বেশি ক্যালোরি খরচ হয়, তাই তাদের ক্ষেত্রে দিনে ৪ থেকে ৫ কাপ ভাত খাওয়া দরকার। ভাতের সঙ্গে রুটি আর আলুও খাওয়া যেতে পারে। আমিষ আমিষ গর্ভের শিশুর শরীরের নতুন টিস্যু তৈরিতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মাকে দৈনিক অন্তত ৬০ গ্রাম আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। প্রতিদিনের আমিষের অভাব পূরণে ২ থেকে ৩ টুকরো মাছ, ৩ থেকে ৪ টুকরো মাংস ও কমপক্ষে একটি ডিম খেতে হবে। এছাড়া নিয়ম করে প্রতিদিন একগ্লাস উষ্ণ গরম দুধ পান করতে হবে। ভিটামিন সি ভিটামিন সি শরীরের চর্ম রোগ প্রতিরোধ করে। গর্ভবতী মায়ের উচিৎ প্রতিদিন ৭০ গ্রাম ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য খাওয়া। একটি করে ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেতে পারেন। কমলা,লেবু,পেয়ারা,ব্রকলি ও টমেটো থেকে অনেক ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আয়রন গর্ভের শিশুর স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য আয়রন এর ভূমিকা অপরিসীম। এছাড়া আয়রন শরীরের রক্ত বাড়াতেও সাহায্য করে। আয়রনের চাহিদা মেটাতে মাকে রোজ ২৭ গ্রাম আয়রন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ডিমের কুসুম, ডাল, কলিজা, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ থেকে আয়রনের চাহিদা পূরণ হতে পারে। ফলিক এসিড গর্ভবতী মায়ের শরীরে দৈনিক ০.৪ গ্রাম ফলিক এসিড প্রয়োজন থাকে। ফলিক এসিড নিউরল টিউবের কোষ অসংগতি থাকলে তা দূর করে। লেটুস পাতা, পালং শাক, কমলা ফলিক এসিডের দারুন উদাহরণ। ফ্যাট গর্ভবতী হওয়ার পর যথেষ্ট পরিমানে ফ্যাট জাতীয় খাদ্য খেতে হবে। ফ্যাট জাতীয় খাদ্য শিশুর মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে,তাই বেশি করে মাকে ফ্যাট জাতীয় খাদ্য খেতে হবে। দুধ, ঘি, মাখন ফ্যাট এর চাহিদা পূরণ করবে। পানি রোজ প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। পানি শরীরে রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। রক্তের মাধ্যমে বাচ্চার শরীরে পুষ্টি পৌঁছায়। এছাড়া পানি মূত্র থলির প্রদাহ ও অতিরিক্ত ঘাম রোধ করে। পানির সঙ্গে বিভিন্ন সুপ, টাটকা ফলের রসও খাওয়া যেতে পারে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ