এনটিভি এর "ধর্ম ও জীবন" অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে এই প্রশ্নটি করা হয়েছিল। সেখানে উত্তরে যা বলা হয়েছিল, নিচে সরাসরি সেটাই উল্লেখ করলাম। ==>ক্রিকেট খেলা ইসলামে হারাম নয়। তবে এ কথা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে খেলার সঙ্গে অনেক সময় এমন আনুষঙ্গিক বিষয় যোগ হয়ে যায়, যে বিষয়ের কারণে খেলাটা আপনি দেখতেও পারবেন না বা খেলতেও পারবেন না। এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় হলো, খেলাটা কীভাবে হচ্ছে, অর্থাৎ তার পদ্ধতিটা কী। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সে কারণে দেখা যাচ্ছে যে অনেকটা হারাম কিন্তু খেলার সঙ্গে জড়িত হয়ে যাচ্ছে। এখন আমি হারাম না বললেও আরেক ভাই এসে পরে আমাকে এ কথা বলতে পারেন যে, হারাম না, এ কথা বললেন কেন? সে জন্য বলতে চাই, এ খেলার সঙ্গে কোনোভাবে হারাম যুক্ত হয়ে গেলে খেলাটাও হারাম হয়ে যেতে পারে। আর হারাম কিছু যুক্ত না হলে তা দেখা বা খেলা হারাম হবে না। আর ক্রিকেট খেলার সঙ্গে অনেক বিষয় এসে যায়। সে ক্ষেত্রে নামাজের কী অবস্থা হবে বা অন্যান্য বিষয়ের কী অবস্থা হবে, তা-ও বিবেচ্য বিষয়। তাই এ ক্ষেত্রে অনেক সচেতনতার জরুরি।
নিম্নের প্রশ্নোত্তরটি দেখুন :
প্রশ্ন : ক্রিকেট, গলফ এই খেলাগুলোতে তো শারীরিক পরিশ্রম আছে। আমি যদি ইসলামিক বিধিবিধান মেনে এই খেলাগুলো পেশা হিসেবে গ্রহণ করি, তাহলে গ্রহণ করতে পারব কি না?
উত্তর : যে খেলাগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন, এগুলো হারাম নয়, বৈধ। আপনি ঠিকই বলেছেন। এই বিনোদনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার ব্যাপারে এ যুগের ওলামায়ে কেরামের দ্বিমত রয়েছে। আলেমরা এ বিষয়টিকে তাখরিজ করার সময় এ বিষয়ের শরায়েই যে দৃষ্টিভঙ্গি আছে, সেটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে এটাকে বাস্তবায়নের দিক থেকে, সেটি ব্যাখ্যা করার সময় আলেমরা একটু দ্বিমত করেছেন। সেটি হলো এই যে, এটি শুধু খেলা, তাহলে এর বাস্তবতা হচ্ছে শুধু বিনোদন। এর থেকে অতিরিক্ত কোনো ফায়দা নেই। এর মাধ্যমে কেউ বেনিফিটেড (উপকৃত) হচ্ছে না।
তাই এই কাজের মাধ্যমে অন্যকে যে বিনোদন দেওয়া হচ্ছে, সেটা একেবারেই নগণ্য, সামান্য। এটাকে পেশা হিসেবে নেওয়া যেতে পারে না। কারণ এর মাধ্যমে কেউ উপকৃত হচ্ছে না। এমন কাজ যার মাধ্যমে মানুষ কোনোভাবেই উপকৃত হয় না, এ ধরনের কাজের ব্যাপারে একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে এটাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। এর মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত ফায়দা হতে পারে, কিন্তু অন্যদের আপনি কিছুই দিচ্ছেন না সেখানে।
আরেক দল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, যেহেতু এ কাজটি বৈধ এবং বৈধ কাজগুলোকে যদি কোনো ব্যক্তি পেশা হিসেবে গ্রহণ করে, সেটা ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী বৈধ। তাই এটাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। এ বিষয়ে মূলত আমাদের যতটুকু তাহকিক, উত্তম হচ্ছে কোনো ব্যক্তি এটাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ না করা।
যেহেতু একদল ওলামায়ে কেরাম এটাকে জায়েজ বলেছেন, তাই কেউ যদি গ্রহণ করতে চান তাহলে তাঁদের বক্তব্য গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আসলে শক্তিশালী কোনো অবলম্বন নেই, যার ওপর নির্ভর করে এ কথা বলা যেতে পারে যে এটাকে আমরা পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারব। কারণ হচ্ছে, এটি একান্তই খেলা বা বিনোদন। যে বিনোদনের মাধ্যমে অনেকের উপকারের চেয়ে ক্ষতিই হয় বেশি। এ বিষয় নিয়ে আসলে আরো দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, যথেষ্ট পেশা তো আছে গ্রহণ করার মতো। বৈধ পেশাগুলোর মাধ্যমে নিজেও উপকৃত হওয়া যায়, অন্যেরও উপকার করা যায়। ntvbd.com