শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call


                                    ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

জুমআর খুতবার পূর্বে ‘কাবলাল জুমুআহ’ বলে কোন নির্দিষ্ট রাকআত সুন্নত নেই। অতএব নামাযী মসজিদে এলে ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ ২ রাকআত সুন্নত পড়ে বসে যেতে পারে এবং দুআ, দরুদ তাসবীহ- যিকর বা তেলাওয়াত করতে পারে। আবার ইচ্ছা হলে নামাযও পড়তে পারে। তবে এ নামায হবে নফল এবং অনির্দিষ্ট সংখ্যায়।

মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন যথা নিয়মে গোসল করে, দাঁত পরিষ্কার করে, খোশবূ থাকলে তা ব্যবহার করে, তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পরে, অতঃপর (মসজিদে) যায়, নামাযীদের ঘাড় ডিঙিয়ে (কাতার চিরে) আগে যায় না, অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী নামায পড়ে। তারপর ইমাম উপস্থিত হলে নীরব ও নিশ্চুপ থাকে এবং নামায শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কথা বলে না, সে ব্যক্তির এ কাজ এই জুমুআহ থেকে অপর জুমআর মধ্যবর্তীকালে কৃত পাপের কাফফারা হয়ে যায়।” (আহমাদ, মুসনাদ, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, জামে ৬০৬৬নং)

প্রকাশ থাকে যে, “প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মাঝে নামায আছে।” (বুখারী, মুসলিম,  মিশকাত ৬৬২নং) এই হাদীস দ্বারা কাবলাল জুমআর সুন্নত প্রমাণ হয় না। কারণ, বিদিত যে, জুমআর আযান ও ইকামতের মাঝে থাকে খুতবা। আর মহানবী (সাঃ)-এর যুগে পূর্বের আর একটি আযান ছিল না। আর সুন্নত প্রমাণ হলেও মুআক্কাদাহ ও নির্দিষ্ট সংখ্য ক নয়।

তদনুরুপ “এমন কোন ফরয নামায নেই, যার পূর্বে ২ রাকআত নামায নেই।” (ইবনে হিব্বান, সহীহ, ত্বাবারানীরানী, মু’জাম, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩২, জামে ৫৭৩০নং)  এ হাদীস দ্বারাও জুমআর পূর্বে ২ রাকআত সুন্নত প্রমাণ হয় না। কারণ, জুমআর ফরয নামাযের পূর্বে খুতবা হয়। আর খুতবার পূর্বে ২ রাকআত নামায এ দ্বারা প্রমাণিত হয় না। (দ্র: সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩২নং)

সতর্কতার বিষয় যে, ইমামের খুতবা চলাকালে কেউ মসজিদে উপস্থিত হলে তাকে সেই অবস্থায় হাল্কা করে যে ২ রাকআত পড়তে হয়, তা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ নয়; বরং তা হল তাহিয়্যাতুল মাসজিদ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

জুমার সুন্নাত নামাজ নফল ছাড়া দশ রাকাত;জুমার ফরজের পূর্বে চার রাকাত কাবলাল জুমা;যা সুন্নাতে মুআক্কাদা এবং জুমার ফরজের পর ছয় রাকাত;এটিও সুন্নাতে মুআক্কাদা। ফিকহে হানাফিতে এটিই গ্রহনযোগ্য ফাত‌ওয়া। আসুন,সুন্নাহ ও আছারের মাধ্যমে বিষয়টি জানার চেষ্টা করি!

জুমার পূর্বে চার রাকাত সুন্নাত।
(১)ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমুআর (ফরয) সলাতের পূর্বে চার রাকআত সালাত আদায় করতেন এবং তাতে মাঝখানে সালাম ফিরাতেন না। ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১১২৯

হাদিসটির সনদ নিয়ে কিছু কথা থাকলেও হাফেজে হাদিস আবু যারা'আ ইরাকী বলেন,এর মূল পাঠ আবুল হাসান খালয়ী ফাওয়ায়িদ কিতাবে জায়্যিদ সনদে বর্ণনা করেছেন।(তরহুত তাছরিব,৩/৪১) অনুরূপ যায়নুদ্দীন ইরাকী ও সনদকে জায়্যিদ বলেছেন।(ফায়জুল কাদির শরহু জামিয়ীস সগীর,৫/৩১৬)

(২) জাবালা ইবনে সুহাইম রহঃ আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণনা করেন তিনি জুমার আগে চার রাকাত পড়তেন, মাঝখানে সালাম ফিরাতেন না।(শরহু মাআনিল আছার,তহাবী ১৬৪/৬৫)

আল্লামা নিমাভী রহঃ আছারুস সুনান গ্রন্থে এর সনদকে সহিহ বলেছেন।(৩০২) আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলি ফাতহুল বারী শরহু সহিহুল বুখারী গ্রন্থে ৫/৫৩৯ পৃষ্ঠায় এর সনদকে সহিহ বলেছেন।

ইবনে উমর রাঃ জুমার আগে দীর্ঘ সময় নামাজ পড়তেন, কিন্তু চার রাকাতকে আলাদাভাবে বর্ণনা করার কারণ হল তা সুন্নাতে মুআক্কাদা ছিল।
(২) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি জুমার দিন নিজ ঘরে চার রাকাত পড়তেন।এরপর মসজিদে আসতেন জুমার আগে আর কোন নামাজ পড়তেন না এবং জুমার পরেও না।
এই আছারটি মুহাদ্দিস হার্ব ইবনে ইসমাইল আলকিরমানী তার কিতাবে সনদসহ বর্ণনা করেছেন।ইমাম ইবনে রজব রহঃ বুখারীর ব্যখ্যা গ্রন্থে ৫/৫৮০ তা দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, এখানে জুমার পরে কোন নামাজ না পড়ার অর্থ হবে মসজিদে না পড়া।
(৪) আবু উবায়দা রহঃ বর্ণনা করেন,(আব্বাজান) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ জুমার আগে চার রাকাত পড়তেন।(মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা,৪/১১৪)
জুমার আগে পরে চার রাকাত।
তাবেয়ী কাতাদা রহঃ ও বর্ণনা করেন, ইবনে মাসউদ রাঃ জুমার আগে চার রাকাত পড়তেন এবং জুমার পরে চার রাকাত পড়তেন।(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৩/২৪৭
ইবনে মাসউদ রাঃ শুধু নিজেই কাবলাল জুমা চার রাকাত পড়তেন না বরং অন্যদেরকেও তা পড়তে আদেশ করতেন।
চার রাকাতের সঙ্গে আরও দুই রাকাত।
তাঁর বিশিষ্ট ছাত্র আবু আব্দুর রহমান আসসুলামী রহঃ বর্ণনা করেন,ইবনে মাসউদ রাঃ আমাদের কে জুমার আগে চার রাকাত এবং জুমার পরে চার রাকাত পড়ার আদেশ করতেন। যখন আলী রাঃ আগমন করলেন তখন জুমার পরে প্রথমে দুই রাকাত এরপর চার রাকাত পড়ার আদেশ করেন।(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৩/২৪৭) 
নফলের তো উৎসাহ দেয়া যায় কিন্তু আদেশ নয়। এখানে যেহেতু আদেশের কথা এসেছে তাই বলা যায় এগুলো সুন্নাতে মুআক্কাদা।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো,আলী রাঃ আগমন করার পর জুমার আগে পরে চার রাকাতের কোন পরিবর্তন হয়নি শুধু জুমার পরে দুই বেশি করা হয়েছে।এত্থেকে বুঝা যায় আলী রাঃ ও জুমার আগে পরে চার রাকাত করে পড়তেন এবং দুই রাকাত অতিরিক্ত পড়তেন।আর এর আদেশ থাকায় সুন্নাতে মুআক্কাদা হ‌ওয়া স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।
একারণেই তো পরবর্তীতে আবু ইউসুফ রহঃ ও অন্যান্য ইমামের নিকট জুমার পরে সুন্নাত ছয় রাকাত রাখা হয়। এবং আলেমগণ সতর্কতা বশত এই মতের উপর‌ই ফাত‌ওয়া প্রদান করে থাকেন।
যেখান থেকে নেয়া হয়েছে,http://www.darulifta-deoband.com/home/ur/Jumuah--Eid-Prayers/146772
https://www.alkawsar.com/bn/article/772/
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ