এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে রাগারাগি মারামারির এক পর্যায়ে ৩ তালাক মুখে বলে ফেললো, কিন্তু বলার সময় স্ত্রী অন্যরুমে ছিল, স্ত্রী শুনেনি যখন ৩ তালাক বলা হয়েছে,,, কিন্তু একই রুমে থাকা ৪ জন শুনেছে, কিন্তু স্ত্রী শুনেনি, পরে আমরা স্ত্রী কে জানিয়েছিলাম,, তিনি বললেন আমিতো কিছুই শুনিনি, কিন্তু এই মুহূর্তে জামাই বউ একসাথেই থাকছে,  তাদের কি তালাক হয়ে গেছিলো???? 
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Habib96

Call

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উল্লেখিত ব্যাক্তির স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়েছে৷ কেননা তালাকের কথা স্ত্রী না শুনলেও তালাক হয়ে যায়৷  সুতরাং বর্তমানে তাদের পৃথক হয়ে যেতে হবে৷ একত্রে থাকা কোন ভাবেই বৈধ নয়৷

সূত্র: আলফিকহুলইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু ৯/২৯১, রদ্দুল মুহতার ৪/৪৫৮

দ্র: তালাকের মাসআলা খুবই জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই স্থানীয় ফতোয়া বিভাগ, বড় কোন মুফতি বা বড় কোন মাদরাসায় লিখিত প্রশ্ন দিয়ে লিখিত উত্তর নেয়া সবচেয়ে ভালো হবে৷

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

এক্ষেত্রে স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়েছে। আসলে তালাক তো দেওয়াই হয় রাগ হয়ে। কয়জন আছে, শান্তভাবে তালাক দেয়! মূলতঃ রাগের অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়, এমনকি হাস্যরস বা ঠাট্টাচ্ছলে তালাক দিলেও তা পতিত হয়ে যায়। আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি বিষয়ে প্রকৃতপক্ষে বললেও এবং ঠাট্টাচ্ছলে বললেও যথার্থ বলে বিবেচিত হবেঃ বিয়ে, তালাক ও রাজআত (তালাক প্রত্যাহার)। (সূনান আত তিরমিজী, হাদিস নম্বরঃ ১১৮৪ সহীহ, ইবনু মাজাহঃ ২০৩৯)। তালাক অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কেউ এই ক্ষমতার অপব্যবহার করলে কিংবা ভুল পন্থায় তা প্রয়োগ করলে সে একদিকে যেমন গুনাহগার হবে অন্যদিকে তালাকও কার্যকর হয়ে যাবে। তাই প্রতিটি বিবেচক স্বামীর দায়িত্ব হল, তালাকের শব্দ কিংবা এর সমার্থক কোনো শব্দ মুখে উচ্চারণ করা থেকে সতর্কতার সাথে বিরত থাকা। যেকোনো উপায়ে তিন তালাক দেওয়া হলে তিন তালাক কার্যকর হয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যায়। একসাথে তিন তালাক দেওয়া কিংবা বিভিন্ন সময় তালাক দিতে দিতে তিন পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া একটি জঘণ্য অপরাধ ও ঘৃণিত কাজ। আল্লাহ তাআলা এর শাস্তি হিসেবে এই বিধান দিয়েছেন যে, তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পুনরায় একসাথে বসবাস করতে চাইলে স্ত্রীর ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর অন্যত্র তার বিয়ে হওয়া এবং সে স্বামীর সাথে তার মিলন হওয়া অপরিহার্য। এরপর কোনো কারণে সে তালাকপ্রাপ্তা হলে কিংবা স্বামীর মৃত্যু হলে ইদ্দত পালনের পর এরা দুইজন পরস্পর সম্মত হলে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। হযরত নাফে (রহঃ) বলেন, যখন হযরত ইবনে উমর (রাঃ) এর কাছে এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া (রুজু করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো, তখন তিনি বলেন। যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। (সহীহ বুখারীঃ ২/৭৯২, ২/৮০৩)। হযরত হারুন ইবনে আনতারা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তার পিতা বলেছেন, আমি একদিন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর নিকট বসা ছিলাম। ইতিমধ্যে এক লোক এসে বলল, সে তার স্ত্রীকে এক বারেই একশো তালাক দিয়েছে। সে জানতে চাইল, এতে কি এক তালাক গণ্য হবে নাকি তিন তালাক গণ্য হবে? আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিন তালাক কার্যকর হয়ে তোমার স্ত্রী তোমার থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর বাকি সাতানব্বই তালাকের গুনাহ তোমার উপর বর্তাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা আসারঃ ১৮১০১)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ