শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

পাদ্রির নাম ছিল : "বুহায়রা ।"

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

জারজিস নামক এক খ্রিষ্টান পাদ্রি ছিলেন যিনি বুহাইরাহ বা বহিরা নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি তার গির্জা হতে বাইরে এসে কাফেলার মুসাফিরদের মেহমানদারী করেন। এ সময় তিনি বালক মুহাম্মাদকে দেখে শেষ নবী হিসেবে চিহ্নিত করেন। আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) বলেনঃ কিছু প্রবীণ কুরাইশসহ আবূ তালিব 'ব্যবসার উদ্দেশে' সিরিয়ার দিকে রওয়ানা হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে রওয়ানা হন। তারা 'বুহাইরাহ' পাদ্রীর নিকট পৌছে তাদের নিজেদের সওয়ারী থেকে মালপত্র নামাতে থাকে, তখন উক্ত পাদ্রী 'গীর্জা থেকে বেরিয়ে' তাদের নিকটে এলেন। অথচ এ কাফিলা এর আগে অনেকবার এখান দিয়ে চলাচল করেছে কিন্তু তিনি কখনও তাদের নিকট (গীর্জা) বেরিয়ে আসেননি বা তাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপও করেননি। রাবী বলেন, লোকেরা তাদের বাহন থেকে সামানপত্র নামাতে ব্যস্ত থাকাবস্থায় উক্ত পাদ্ৰী তাদের ভেতরে ঢোকেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত ধরে বলেন, ইনি “সাইয়্যিদুল আলামীন” বিশ্ববাসীর নেতা, ইনি রাসূল রাব্বিল আলামীন বিশ্ববাসীর প্রতিপালকের রাসূল এবং আল্লাহ তাআলা তাকে রহমাতুল্লিল আলামীন করে 'বিশ্ববাসীর জন্য করুণা স্বরূপ' পাঠাবেন। তখন কুরাইশদের বৃদ্ধ লোকেরা তাকে প্রশ্ন করে, কে আপনাকে জানিয়েছে? তিনি বলেন, যখন তোমরা এ উপত্যকা হতে নামছিলে, (তখন আমি লক্ষ্য করেছি যে,) প্রতিটি গাছ ও পাথর সিজদায় লুটিয়ে পড়ছে। এই দুটি নাবী ব্যতীত অন্য কোন সৃষ্টিকে সাজদাহ করে না। এতদভিন্ন তার ঘারের নীচে আপেল সদৃশ গোলাকার মোহরে নবুওয়াতের সাহায্যে আমি তাকে চিনেছি। খাদ্যদ্রব্যসহ যখন তাদের নিকটে এলেন তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটের পাল চরাতে গিয়েছিলেন। পাদ্রী বলেন, তোমরা তাকে ডেকে আনার ব্যবস্থা কর। অতএব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এলেন, তখন একখণ্ড মেঘ তার উপর ছায়া বিস্তার করেছিল এবং কাফিলার লোকেরা যারা তার পূর্বেই এসেছিল তাদেরকে তিনি গাছের ছায়ায় বসা অবস্থায় পেলেন। তিনি বসলে গাছের ছায়া তার দিকে ঝুকে পড়ে। পাদ্রি বলেন, তোমরা গাছের ছায়ার দিকে লক্ষ্য কর, ছায়াটি তার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। রাবী বলেন, ইত্যবসরে পাদ্রী তাদের মাঝে দাঁড়িয়ে তাদেরকে শপথ দিয়ে বলেছিলেন, তোমরা তাকে নিয়ে রোম সাম্রাজ্যে যেও না। কেননা রূমীয়রা যদি তাকে দেখে তাহলে তাকে চিহ্নগুলোর দ্বারা সনাক্ত করে ফেলবে এবং তাকে মেরে ফেলবে। এমতাবস্থায় পাদ্রী লক্ষ্য করেন যে, রূমের সাতজন লোক তাদের দিকে আসছে। পাদ্রী তাদের দিকে অগ্রসর হয়ে প্রশ্ন করেন, তোমরা কেন এসেছ? তারা বলে, এ মাসে আখিরী যামানার নাবীর আগমন ঘটবে। তাই চলাচলের প্রতিটি রাস্তায় লোক পাঠানো হয়েছে, তাই আমাদেরকে আপনাদের পথে পাঠানো হয়েছে। পাদ্রী রোমীয় নাগরিকদের প্রশ্ন করেন, তোমাদের পেছনে তোমাদের চেয়েও ভাল কোন ব্যক্তি আছে কি (কোন পাদ্রী তোমাদেরকে এই নাবীর সংবাদ দিয়েছ কি)? তারা বলল, আপনার এ রাস্তায়ই আমাদেরকে ঐ নাবীর আসার খরব দেয়া হয়েছে। পাদ্রী বলেন, তোমাদের কি মত, আল্লাহ তাআলা যদি কোন কাজ কারার ইচ্ছা করেন তবে কোন মানুষের পক্ষে তা প্রতিহত করা কি সম্ভব? তারা বলল, না (অর্থাৎ শেষ যামানার নাবীর আগমন ঘটবেই, কোন মানুষ তা ঠেকাতে পারবে না)। রাবী বলেন, তারপর তারা তার নিকট আনুগত্যের শপথ করে এবং তার সাহচর্য অবলম্বন করে। তারপর পাদ্রী (কুরাইশ কাফিলাকে) আল্লাহর নামে শপথ করে প্রশ্ন করেন, তোমাদের মধ্যে কে তার অভিভাবক? লোকেরা বলল, আবূ তালিব। পাদ্রী আবূ তালিবকে অবিরতভাবে আল্লাহ তাআলার নামে শপথ করে তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত আবূ তালিব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে (মক্কায়) ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এবং আবূ বাকর (রাযিঃ) বিলাল (রাযিঃ)-কে তার সাথে দেন। আর পাদ্রী তাকে পাথেয় হিসেবে কিছু রুটি ও যাইতুনের তৈল দেন। (সূনান আত তিরমিজি, হাদিস নম্বরঃ ৩৬২০ হাদিসের মানঃ সহিহ)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ