প্রকৃতপক্ষে হিজড়া নারী-পুরুষের বাইরে আরেকটি লিঙ্গবৈচিত্র্যের মানবধারা। যৌন-বৈচিত্র্যের ভিত্তিতে আমরা ছয় ধরনের হিজড়ার অস্তিত্ব সমাজে পাই। হিজড়া মানববিশেষ লৈঙ্গিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিকশিত হয়, তার লিঙ্গ অনুপযোগী। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিকলাঙ্গ। ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী হিজড়া হচ্ছে সে, যার পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গ উভয়টিই রয়েছে অথবা কোনোটিই নেই। শুধু প্রস্রাবের জন্য একটি ছিদ্রপথ রয়েছে। একই দেহে স্ত্রী ও পুরুষ চিহ্নযুক্ত অথবা এই উভয় চিহ্নবিযুক্ত মানুষটি হলো হিজড়া। [সূত্র : মাওলানা ইসমাঈল মাহমুদ : ‘প্রসঙ্গ হিজড়া : ইসলামী দৃষ্টিকোণ’, বাতায়ন, ইসলামী গবেষণা সাময়িকী, বসিলা, ঢাকা, মে ২০১৫ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৭৬]
হিজড়া বলতে বোঝায়ঃ একই দেহে স্ত্রী ও পুং চিহ্নযুক্ত মানুষ। তারা আমাদের সমাজের-ই একটি অংশ; কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সামান্য কিছু ভুলেই জন্ম নিতে পারে হিজড়া সন্তান। আসুন! জেনে নেই, ইসলাম কী বলে হিজড়া সন্তান জন্মের ব্যাপারে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ হিজড়ারা জ্বীনদের সন্তান। কোন এক ব্যক্তি আব্বাস (রাঃ) কে প্রশ্ন করেছিলেন, এটা কেমন করে হতে পারে? জবাবে তিনি বলেছিলেন, আল্লাহ ও রাসুল (সঃ) নিষেধ করেছেন যে, মানুষ যেন তার স্ত্রীর মাসিক স্রাব চলাকালীন যৌন সংগম না করে।
আপনার প্রশ্নটি যদি বিস্তারিত ভাবে বলতেন তাহলে উত্তর দিতে সহজ হত। তবে আংশিকভাবে হিজড়া সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এ সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হলোঃ ইসলামে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গকে “মুখান্নাতুন” বা খুন্নাছ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরবি ভাষায় “মুখান্নাতুন” বলতে মেয়েদের মত আচরণকারী পুরুষদেরকে বোঝানো হয়। পবিত্র কোরানে কোথাও “মুখান্নাতুন” সম্পর্কে কিছু বলা হয় নাই। কিন্তু হাদিসে “মুখান্নাতুন” এর উল্লেখ পাওয়া যায়। একজন “মুখান্নাতুন” হচ্ছে সেই পুরুষ, যার চলাফেরায়, চেহারায় এবং কথাবার্তায় নারী আচরণ বহন করে। তারা দুই প্রকারেরঃ প্রথম প্রকারের হচ্ছে তারাই যারা এই ধরনের আচরণ ইচ্ছাকৃতভাবে করে না এবং তাদের এই ব্যবহারে কোনো দোষ নেই, কোনো অভিযোগ নেই, কোনো লজ্জা নেই যতক্ষণ পর্যন্ত তারা কোনো অবৈধ কাজ না করে এবং পতিতাবৃত্তিতে না জড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় শ্রেণির ব্যক্তি হচ্ছে তারাই যারা অনৈতিক উদ্দেশ্যে মেয়েলি আচরণ করে।