প্রথমতো আপনাকে যে বিষয়টা দেখতে হয় তা হলো-আপনারা স্বামী -স্ত্রী কি না?
উল্লেখ্য মোবাইলের মাধ্যমে যে বিবাহ হয়, তা শরীয়ত মোতাবেক বিশুদ্ধ হয় না। (ফাতওয়া হিন্দিয়্যাহ- ১/৩২২, হিদায়া- ২/২৮৬, ২৯১, তাবঈনুল হাক্বায়েক্ব- ৩/৪৫৩)।তবে হ্যা!সহিহ বা বৈধও হওয়ার উপায় রয়েছে৷এসম্পর্কে জানতে পুরো লিখাটা পড়েন৷
বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল, একই মজলিসে বর- কনে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে সাক্ষীগণের সম্মুখে বিবাহের ইজাব-কবুল তথা (প্রস্তাব- কবুল) গ্রহণ করবে। আর তারা উপস্থিত হতে না পারলে, তাদের পক্ষ থেকে বিবাহকার্য সম্পাদনের জন্য কোন প্রতিনিধি নিয়োগ করবে। তিনি স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে অপরের বিবাহের প্রস্তাব দিবেন বা কবুল করবেন। আর টেলিফোনের মাধ্যমে ইজাব-কবুল করা গেলেও বর-কনে বা তদের প্রতিনিধির উপস্থিতি পাওয়া যায় না। তাই শরীয়তের দৃষ্টিতে মোবাইল/ফোনে বিয়ে সহীহ হয় না।
তবে মোবাইল/ফোনের মাধ্যমে বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার একটা পদ্ধতি আছে, তা হলো- উভয় পক্ষের কোন এক পক্ষ থেকে ফোনের মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে নিজের উকিল বানাবে। তিনি উকিল হয়ে দু’জন স্বাক্ষীর সামনে প্রস্তাব করবেন। অপর পক্ষ তখন কবুল করবে। তাতে বিয়ে হয়ে যাবে। তেমনিভাবে কনে টেলিফোনে বরকে নিজের বিয়ের উকিল বানাতে পারে। তখন বর যদি দু’জন স্বাক্ষীর সামনে বলে যে, অমুক মহিলা তার বিয়ের জন্য আমাকে উকিল বানিয়েছে। আমি তাকে এত টাকার বিনিময়ে বিয়ে করলাম। এতেও বিবাহ সহীহ হয়ে যাবে। (দেখুনঃ খুলাসাতুল ফাতাওয়া, জাদীদ ফিকহী মাসায়িল)
এবার আপনি যদি বলেন উল্লেখিত শর্ত আমাদের বিবাহে পাওয়া গেছে,তাহলে আপনারা স্বামী স্ত্রী -আর যদি পাওয়া না যায়,তাহলে আপনারা কঠিন গোনাহ, যিনার গোনাহে লিপ্ত!এবং এর কঠিন শাস্তি৷
আপনার প্রশ্নমতে-কোন স্বামী যদি তার স্ত্রীর গোপনীয়তা প্রকাশ করে,তার শাস্তি!সাংসারিক সমস্যা নিয়ে অন্যদের সাথে আলোচনা না করাই শ্রেয়।এবং উচিত স্বামী-স্ত্রীর মাঝে উপভোগ্য বিষয়গুলো গোপন করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে সর্ব-নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে, যে নিজের স্ত্রীর সাথে মিলিত হয় এবং যার সাথে তার স্ত্রী মিলিত হয়, অতঃপর সে এর গোপনীয়তা প্রকাশ করে বেড়ায়। [মুসলিম : ২৫৯৭]
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। স্বামী স্ত্রী একজন আরেকজনের ইজ্জত রক্ষক ও দুর্গ। তাই স্ত্রীর গোপন বিষয় যেমন স্বামীর জন্য অন্য কারো কাছে প্রকাশ করা কোনো মতেই বৈধ নয়, ঠিক তেমনি স্ত্রীরও স্বামীর কোনো গোপন কথা বা গোপন বিষয় অন্যের কাছে প্রকাশ করবে না। একে অপরের গোপনীয়তা রক্ষা করা পবিত্র আমানত। এ আমানতের খিয়ানত করা সাংঘাতিক গোনাহর ব্যাপার। পারিবারিক জীবনে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোনো ব্যাপারে মতের মিল নাও হতে পারে, কখনও রাগ অভিমানও হতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থায়ই স্বামী -স্ত্রী তাদের গোপনীয়তা অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারবে না!!
আল্লাহ আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাওফিক দিন৷