মাসিকের সময় মূলত কোরআন মাজিদ তেলাওয়াত করার বিষয়ে আলিমদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। কিন্তু কোরআন ও হাদিসের আলোকে যতটুকু স্পষ্ট হয়েছে সেটা হচ্ছে, কোরআন তেলাওয়াত করার যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তিনি তেলাওয়াত করতে পারেন কিন্তু প্রয়োজন না হলে তেলাওয়াত না করাটাই হচ্ছে উত্তম এটি মুখস্থ তেলাওয়াত করার বিষয়ে। তবে কোরআন মাজিদ স্পর্শ করে পড়া যাবেনা। কেননা, কোরআন মাজিদের আদব হচ্ছে তাহারাতের সঙ্গে, অর্থাৎ পবিত্রতার সঙ্গে কোরআন মাজিদ স্পর্শ করা এবং তেলাওয়াত করা। কুরআন স্পর্শ যাবে না এর প্রমাণ পেশ করা হয় কুরআনের একটি আয়াত দ্বারাঃ যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না। (সূরা আল ওয়াকিয়াঃ ৭৯) তবে আপনি যদি মনে করেন যে আপনার প্রয়োজন রয়েছে, তাহলে আপনি তেলাওয়াত করতে পারেন তবে স্পর্শ করতে পারবেন না। জনাব! মাসিক চলাকলীন সময় জিকির-আযকার করা, দরুদ শরীফ পড়া, ওযীফা পড়া, বিভিন্ন দোয়া পড়া যায়। এমনকি এসময় পবিত্র কোরআন মাজিদের দোয়ার আয়াতগুলোও দোয়া হিসেবে পড়া যাবে। তবে পবিত্র কোরআন স্পর্শ করে পড়া যাবে না। এক বর্ণনায় এসেছে, মা‘মার (রহঃ) বলেন, আমি যুহরী (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, ঋতুমতী নারী ও যার ওপর গোসল ফরজ হয়েছে সে আল্লাহর যিকির করতে পারবে? তিনি বললেন, হাঁ, পারবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কোরআন তিলাওয়াত করতে পারবে? তিনি বললেন, না। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীসঃ ১৩০২) আবারো বলা হচ্ছে অধিকাংশ আলিমের মতে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মাসিক অবস্থায় কুরআন পাঠ করা জায়েয নেই। তবে বিশেষ প্রয়োজন হলে জায়েয রয়েছে। যেমন, কুরআন ভুলে যাওয়ার আশংকা, কুরআনের পরীক্ষা, কুরআন শিক্ষা দান যদি বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকে ইত্যাদি। যদিও শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া ও শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ) সহ একদল আলিমের মতে ঋতু অবস্থায় সাধারণভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েয রয়েছে। কিন্তু মতবিরোধ থেকে দূরে থাকার জন্য একান্ত প্রয়োজন ছাড়া না পড়াই উত্তম। তবে মোবাইল, ল্যাপটপ, ইন্টারনেটে কুরআন থাকলে তার উপর কুরআনের বিধান বর্তাবেনা। তাই ঋতু অবস্থায়ও সেগুলো স্পর্শ করা যাবে এবং একান্ত প্রয়োজন বোধে সেখান থেকেও পাঠ করা যাবে।