আমরা জানি যে,আত্মহত্যা মহা পাপ।আমাদের সব কিছু আমাদের জন্মের সময় আল্লাহ্ ঠিক করে রাখেন।মানে মানুষের জন্ম,মৃত্যু বিয়ে,রিজিক,হায়াত,বরকত।অনেক ব্যক্তি আছেন যারা ভালোবাসার মানুষকে না পেয়ে এই কাজ করে থাকেন। আল্লাহ্ তো সব জানে যে কার সাথে কার বিয়ে হবে,কে কিভাবে মৃত্যুবরণ করবেন।আল্লাহ্ তো চাইলে সব কিছুই করতে পারেন।তবে এই অপমৃত্যু কি আল্লাহ্ সেই ব্যক্তির ভাগ্যে লিখে রাখেন?যদি লিখে রাখেন তবে এটা মহাপাপ হবে কেন?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

অপমৃত্যু আল্লাহ সেই ব্যক্তির ভাগ্যে আগেই লিখে রাখেন। কেননা, তিনি সকল মানুষের মনের খবর রাখেন। অর্থাৎ মানুষের প্রকাশ্য সহ অন্তরে যা উদ্রেক হয় তাও তিনি জানেন। তিনি অন্তরের সমস্ত খবর জানেন ও দেখেন। তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বল অথবা প্রকাশ্যে বল, তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত। যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি করে জানবেন না? তিনি সূক্ষজ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত। (সূরা মূলকঃ ১৩, ১৪) জনাব! একজন মানুষ কিভাবে মারা যাবে, সে কি আত্মহত্যা করে মারা যাবে না অন্য ভাবে তা আল্লাহ আগেই যানেন। আর তিনি অন্তরের সমস্ত খবর জানেন বলেই বান্দার তাকদীর আগেই লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। তাকদীর হলো নির্ধারিত ভাগ্য। এ মহাবিশ্বে যা কিছু ঘটবে আল্লাহ তার পূর্বজ্ঞান ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী সেসব কিছু নির্ধারণ করেছেন এই বিশ্বাসকে ইসলামে তাকদীর বলা হয়। যেমনটি তিনি বলেছেন, যমীনে বা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয়ই আসে তা সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই আমি তা কিতাবে লিপিবদ্ধ রেখেছি। নিশ্চয় আল্লাহর পক্ষে এটা খুব সহজ। (সূরা হাদীদ, আয়াতঃ ২২) এখানে আল্লাহ তাআলা মানুষ সৃষ্টির পূর্ব নির্ধারিত তাকদীরের বর্ণনা দিচ্ছেন। পৃথিবীতে যত বিপর্যয় ও বালা-মসিবত এবং মানুষের ব্যক্তিগত যে রোগ-ব্যাধি, কষ্ট- ক্লেশ ও অভাব-অনটনসহ ভাল-মন্দ যা কিছু আসে সব কিছুই সমস্ত সৃষ্টিকে সৃষ্টি করার পূর্বেই লিপিবদ্ধ আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আকাশ-জমিন সৃষ্টি করার এক হাজার বছর পূর্বেই আল্লাহ তাআলা তাকদীর নির্ধারণ করে রেখেছেন। (সহীহ মুসলিমঃ ২৬৫৩, তিরমিযীঃ ২১৫৬) যমীনের বুকে সংঘটিত বিপদাপদ বলে দুর্ভিক্ষ, ভূমিকম্প, ফসলহানি, বাণিজ্যে ঘাটতি, ধন-সম্পদ বিনষ্ট হওয়া, বন্ধু-বান্ধবের মৃত্যু ইত্যাদি এবং ব্যক্তিগত বিপদাপদ বলে সর্বপ্রকার রোগ-ব্যাধি, ক্ষত, আঘাত ইত্যাদি বোঝানো হয়েছে। মানুষ যেসব মুসিবতের শিকার হয় সেটা তার জন্য মঙ্গলজনক সে তা জানতে পারুক বা না পারুক। কেননা আল্লাহ যা তাকদীর বা নির্ধারণ করেছেন সেটা মঙ্গল ছাড়া আর কিছু নয়। আল্লাহ বলেন, আপনি বলুন! আমাদেরকে কোন কিছুই আক্রান্ত করবে না, কিন্তু আল্লাহ যা লিখে রেখেছেন সেটা ছাড়া; তিনি আমাদের কার্যনির্বাহক। অতএব, মুমিনদের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত। (সূরা তওবা, আয়াতঃ ৫১) আবারো বলা হচ্ছেঃ মানবজীবনে সুখ-দুঃখ, সফলতা ও ব্যর্থতা সবই তাকদীরের অন্তর্ভুক্ত। তবে তাকদীরে লিপিবদ্ধ আছে বলেই মানুষ ভালো অথবা মন্দ করে, বিষয়টি এমনও নয়। বরং মানুষ ভবিষ্যতে কী করবে আল্লাহ তায়ালা যেহেতু আগেই জানেন, তাই তিনি তা অনেক আগেই লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা মানুষের অবস্থা জানেন বলে সব আগেই লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। এ জন্য তার লিপিবদ্ধকরণ নীতি দায়ী নয়, বরং ভালো-মন্দ কাজের জন্য মানুষ নিজেই দায়ী হবে। এজন্য-ই আত্মহত্যা মহাপাপ হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

ধরুন, আপনি আপনার কোন বন্ধুকে আপনার খুব প্রিয় স্মৃতি বিজড়িত একটি কাচের জগ ধার দিলেন। এবং বললেন যে, আপনি এটি যত্ন করে রাখবেন এবং ৭ দিন পর ফেরত দেবেন। এখন আপনার বন্ধু যদি ৩ দিন পর এসে বলে যে, তিনি তার বউয়ের সাথে ঝগড়া করায় বউ রাগে তার দিকে জগ ছুড়ে মেরে জগ ভেঙে ফেলেছেন, তাহলে তখন আপনার কেমন লাগবে? বন্ধুকে তো ধমকাধমকি করবেনই এমনকি বন্ধুত্ব ত্যাগও করতে পারেন। তাহলে এত মোহাব্বত করে আমাদেরকে বানিয়েছেন আর আমরা যদি নিজেদের জেদের কারণে নিজেদের ধ্বংস করি তবে আল্লাহ কেন আমাদের উপর রাগান্বিত হবেন না? আর কেনই বা তা মহাপাপ হবে না?

দ্বিতীয়ত, আল্লাহ তায়া’লা দুনিয়াকে পরীক্ষাগার হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। এখন একটা ক্লাসের শিক্ষক কিন্তু খুব ভালো করে জানেন যে ক্লাসের কোন ছাত্র ভালো ও খারাপ, কোন ছাত্র ১০০ পাবে আর কোন ছাত্র ফেল করবে। এখন তিনি যদি পরীক্ষা না নিয়ে ছাত্রদের স্বভাবের উপর নাম্বার দিতে চান, তাহলে সে আপত্তি করবে(এমন সবচেয়ে দুর্বল ছাত্রটিও)। তেমনি আল্লাহু ভালো জানেন যে আমাদের কার প্রকৃতি কেমন(আর আত্মহত্যা করার ইচ্ছা আছে।) কিন্তু তিনি আমাদের কে সুযোগ দিয়েছেন। ধরুন, আপনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে আল্লাহ আপনাকে আগেই জাহান্নামে ভরে রাখলেন, তখন আপনিও নিশ্চয়ই অভিযপগ করবেন?
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ