কোনো বস্তুকে উপরের দিকে ছোঁড়া হলে অভিকর্ষের টানে বস্তুটি আবার ভূ-পৃষ্ঠে ফিরে আসে। মুক্তি বেগ এমন একটি বেগ যেখানে বস্তুটিকে উপরের দিকে ছোঁড়ার পরে তা আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না। সর্বনিম্ন যে বেগে কোন বস্তু উপরের দিকে নিক্ষেপ করলে তা আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না সে বেগকে মুক্তিবেগ ( Escape Velocity ) বলা হয় । অর্থাৎ, কোন বস্তুকে যে ন্যূনতম বেগে নিক্ষেপ করলে তা পৃথিবীর আকর্ষণ কাটিয়ে মহাশূন্যে চলে যাবে। একটি বস্তুকে পৃথিবী পৃষ্ঠ হতে অসীমে যেতে হলে ন্যূনতম পরিমাণের গতিশক্তি বস্তুটিকে অর্জন করতে হবে। কেননা, এই গতিশক্তির বিনিময়ে বস্তুটি কাজ করবে। অর্থাৎ, কোন বস্তুকে উপরের দিকে নিক্ষিপ্ত করলে তা যদি প্রতি সেকেন্ডে 11.2km অতিক্রম করে তা পৃথিবীর আকর্ষণ কাটিয়ে মহাশূন্যে চলে যাবে ও মহাশূন্যে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরতে থাকবে। তাই, রকেট উড্ডয়নের ক্ষেত্রে, রকেটকে মুক্তি বেগের চেয়ে বেশি বেগে ভূমি ত্যাগ করতে হয়। মুক্তিবেগ বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে না। বস্তু বড় বা ছোট যাই হোক না কেন বস্তুটি যদি প্রতি সেকেন্ডে 11. 2 কিলোমিটার অতিক্রম করে তা পৃথিবীর আকর্ষণ কাটিয়ে মহাশূন্যে চলে যাবে। আশা করি আপনাকে বুঝাতে পেরেছি।
মুক্তিবেগ (ইংরেজীঃ Escape velocity) বলতে এমন একটি বেগকে বুঝানো হয় মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে যে মানের বেগে নিক্ষিপ্ত কোন বস্তুর গতিশক্তি ও মহাকর্ষীয় বিভবশক্তির সমষ্টি শুন্য হয়। মুক্তিবেগে কোন বস্তুকে কোন মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র থেকে শুন্যে ছুড়ে দেয়া হলে তা আর ঐ মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে ফিরে আসে না। গোলীয় প্রতিসাম্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিম্নক্ত সমীকরন দ্বারা মুক্তিবেগের মান নির্ণয় করা হয়।
তথ্য ও বিস্তারিত →
যেখানে v মুক্তিবেগ, G হল মহাকর্ষীয় ধ্রুবক (G = ৬.৬৭×১০−১১ মি৩ কেজি−1 সেকেন্ড−২), M তারা, গ্রহ বা অন্য যেকোন বস্তুর ভর এবং r এর ব্যাসার্ধ।
পৃথিবীর ক্ষেত্রে মুক্তিবেগের মান প্রতি সেকেন্ডে ১১.২ কি.মি.। অর্থাৎ কোনো বস্তুকে প্রতি সেকেন্ডে ১১.২ কি.মি. গতিবেগে ওপরের দিকে ছূড়তে পারলে সেটা আর নীচের দিকে না পড়ে, মহাশূন্যে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরতে থাকবে। রকেটের ক্ষেত্রে মুক্তি বেগ প্রযোজ্য নয় কারণ রকেটের নিজস্ব জ্বালানি আছে। তাই রকেট মুক্তি বেগের অনেক কম বেগেই পৃথিবীর আকর্ষণ কাটিয়ে যেতে পারে