আমি আমার পরিবার ও আশেপাশে ধর্ম নিয়ে অনেক বেশি মতভেদ ,নিয়ম, বিশ্বাস ,বাড়াবাড়ি লক্ষ্য করছি। যা আমার মানসিকতাকে বাজে ভাবে প্রভাবিত করছে ইসলামের বিরুদ্ধে । আমি আল্লাহ , রাসুল , কোরান সবকিছুতে বিশ্বাসী কিন্তু পরিবেশ আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলছে । তাদের ধর্ম নিয়ে গোয়ার্তমি খুবই বিরক্তিকর। আমার কি কিরা উচিত? আমি কিভাবে বা কোন বই পড়লে ভালো করে ইসলামের সব ধারন বহন করতে পারবো যতটুকু সম্ভব?     
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীয় দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা হল ইসলাম। আমাদের জান্য জানা আবশ্যক যে, দ্বীন-ইসলাম হচ্ছে বিশ্বমানবতার জন্য আল্লাহ তা'আলার নিকট একমাত্র মনোনীত ও গ্রহণীয় জীবন ব্যবস্থার নাম। ইসলাম ছাড়া যত ধর্ম এবং মতাদর্শ রয়েছে সবই বাতিল-মিথ্যা।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) ইসলাম।” (সূরা আলে ইমরান: ১৯)


তিনি আরও বলেনঃ “যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য দ্বীন (ধর্ম, মতাদর্শ,জীবন ব্যবস্থা) অনুসন্ধান করবে তার নিকট থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং সে ব্যক্তি হবে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা আলে ইমরান: ৮৫)

সুতরাং আল্লাহ তা'আলার নিকট একমাত্র পছন্দনীয়, নির্বাচিত এবং গ্রহণযোগ্য দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থার নাম হচ্ছে ইসলাম। ইসলাম ছাড়া যত ধর্ম, মতামত ও মতাদর্শ আছে সবই বাতিল, ভ্রান্ত এবং মিথ্যা।


উত্তরঃ

কেউ যদি ইসলামের প্রতি সন্দেহ পোষণ করে বা ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করে সে নিশ্চিতভাবে কাফির হয়ে যাবে। আর কাফিরের পরিণতী চিরস্থায়ী জাহান্নাম।


মানুষের ঈমান হরণের দুটি ভয়ানক শত্রু এবং সেগুলো থেকে আত্মরক্ষার উপায়ঃ

১) শয়তানঃ আমাদেরকে এ বিষয়ে সর্তক থাকা অপরিহার্য যে, আমাদের ঈমান (বিশ্বাস) এর মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করার জন্য আমাদের প্রকাশ্য শত্রু বসে নেই। সে হল, আমাদের পরীক্ষিত দুশমন বিতাড়িত শয়তান। শয়তান মানুষের হৃদয় পটে নানা সংশয়-সন্দেহ ও ওয়াসওয়াসা (কুমন্ত্রণা) সৃষ্টি করে, যেন মানুষ আল্লাহর দ্বীন থেকে দূরে সরে যায়।

“(সেই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি) যে মানুষের হৃদয় পটে কুমন্ত্রণা দিয়ে আত্মগোপন করে।”

(সূরা নাস: ৫)

তবে এ ধরণের চিন্তা যদি এসে যায়, শয়তান যদি কুমন্ত্রণা দিয়েই বসে, তাহলে সেক্ষেত্রে এর সমাধান কি এবং কী করণীয় এটা আল্লাহ কুরআনে আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ তা'আলা বলছেনঃ
“আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে'আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করো।”

(সূরা আ’রাফ: ২০০)


অর্থাৎ আউযুবিল্লাহি মিনাশ শয়ত্বানির রাজীম (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি) পাঠ করো।


এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ সমস্যার সমাধান দিলে যে, যখনই আমাদের মনের মধ্যে কোনও কুচিন্তা জাগ্রত হবে, দ্বীন ইসলাম নিয়ে সংশয় এবং সন্দেহ সৃষ্টি হবে, আল্লাহ, নবী বা ইসলামের কোন বিষয়ে কোন ধরণের সংশয় তৈরি হবে আমাদেরকে তাৎক্ষণাৎ বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। যখনই আমরা আউজুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম পাঠ করবো, আমাদের মনের ভিতর থেকে এ ধরণের খারাপ চিন্তা দূর হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ।


২) নফসে আম্মারাহ বা কুপ্রবৃত্তি:

আমাদের মনে সংশয় সৃষ্টির আরেকটি গোপন শক্তি দায়ী। আর তা হল, নফসে আম্মারা বা কু প্রবৃত্তি। এই নফসে আম্মারা বা কু প্রবৃত্তি মানুষকে খারাপ কাজের দিকে প্ররোচিত করে এবং সংশয় ও সন্দেহের দিকে ধাবিত করে। এর কারণেও মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে বিপথে চলে যায়। তাই তো রাসূল ﷺ এই কু প্রবৃত্তির অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আমাদের নফস (কু প্রবৃত্তি) এবং কৃত কর্মের অনিষ্ট থেকে।"

সেই সাথে তিনি নিম্নোক্ত দুয়াটিও পাঠ করতেনঃ
“হে অন্তরের পরিবর্তনকারী, তুমি আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখো।” (তিরমিযী)

সুতরাং আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা ও দুআ করতে হবে, তিনি যেন আমাদের অন্তরগুলোকে তার দ্বীনের উপর সুদৃঢ় রাখেন, যেন আমাদের পরীক্ষিত শত্রু ইবলিস ওয়াসওয়াসা দিয়ে আমাদের হৃদয়ের রাজপ্রাসাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ঈমান হরণ করতে না পারে এবং কু প্রবৃত্তির প্রোরচনায় আমরা যেন দিগ্বিদিক জ্ঞান হারিয়ে বিপথে চলে না যাই।


বই সাজেশনঃ 

মনের সংশয় দূর করার অন্যতম উপায় হল কুরআন অধ্যয়ন করা। সব ধরণের সংশয়, সন্দেহ, কুচিন্তা ও কু প্রবৃত্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দুআ ও আশ্রয় প্রার্থনার পাাশাপাশি আমাদের উচিৎ, আল কুরআন গভীরভাবে স্টাডি করা। আমরা কুরআনুল কারীমের সাথে যত বেশি সুসম্পর্ক তৈরি করবো এবং কুরআন তিলাওয়াতের পাশাপাশি তার তরজমা ও ব্যাখ্যা বুঝার চেষ্টা করবো ততই আমাদের অন্তরগুলো আলোকিত হয়ে উঠবে। একটা একটা করে খুলে যাবে হৃদয়ের বদ্ধ তালা আর আলোকিত হয়ে উঠবে ভেতরের সকল অন্ধকার। এর মাধ্যমে ইনশা আল্লাহ আমাদের ভেতরটা আলোকিত হবে। সেখানে শয়তান বাসা বাঁধতে পারবে না এবং কোনো রূপ সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

এছাড়াও কোন বিষয়ে সন্দেহ বা প্রশ্ন সৃষ্টি হলে বড় আলেমদেকে জিজ্ঞেস করা এবং তাদের নকিট দ্বীনী ইলম অর্জন করা। নাস্তিক ও ধর্ম বিদ্বেষীদের নানা অভিযোগের উ্ত্তর সম্পর্কীত ইসলামী স্কলারদের বই পড়া এবং লেকচার শোনা।  ইসলাম সম্পর্কে পরিপক্ক জ্ঞান ছাড়া নাস্তিক, ধর্মদ্রোহী ও সংশয়বাদীদের বই-পুস্তক না পড়া বা তাদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকা।

* ইসলামিক স্কলার/লেকচারার যেমনঃ ডা. জাকির নায়েক, মুফতি কাজি ইব্রাহিম, মিজানুর রহমান আজহারী, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদি ইত্যাদি।


❐ কারো মনে যদি ইসলাম বা আল্লাহর সম্পর্কে খারাপ চিন্তা সৃষ্টি হয় তাহলে সে কি মুরতাদ বা দ্বীন থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে?

--- কেউ যদি মনে মনে ইসলাম, ঈমান, আল্লাহ, রাসূল বা দ্বীনের কোন বিষয়ে ধরণের কুচিন্তা অনুভব করে, অন্তরে দ্বীনের ব্যাপারে সংশয় ও সন্দেহ দেখা যায় কিন্তু পরক্ষণেই যদি এ থেকে মুক্তির জন্য মনে অস্থিরতা অনুভব করে বা এ ভয়ে আতঙ্কিত হয় যে, এতে করে সে পাপের মধ্যে ডুবে গেলো কি না,ইসলাম থেকে বের হয়ে গেল কি না, সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেল কিনা.. তাহলে বুঝতে হবে, সে একজন ঈমানদার। এই মনের অস্থিরতা ও পাপবোধ তার সুস্পষ্ট ঈমানের পরিচায়ক। আল হামদুলিল্লাহ।

যেমন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, 
 আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত,
“সাহাবীদের একদল লোক রাসূল ﷺ এর কাছে আগমন করে জিজ্ঞাসা করল, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূল ﷺ বললেন যে, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূল ﷺ বললেন, এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ”। (মুসলিম)



তবে তারপরও আপনার মনে যদি সন্দেহের দানা গুটেই থাকে তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন শুধুমাত্র পরামর্শের জন্য। আমি আরিফ আজাদের সাথেও আপনাকে কন্টাক্ট করিয়ে দিতে পারবো। ইনশাআল্লাহ কোন সন্দেহ থাকবে না।


যোগাযোগ এর জন্য - ফেসবুকঃ

facebook.com/mhisina

(মিরাজ হোসেন ইবনেসিনা)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাবধান! ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না। এতদ্বিষয়ে সীমা লঙ্ঘনের কারণে তোমাদের পূর্ববর্তী বহু জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে। মনে রেখো! তোমাদের সবাইকেই আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হতে হবে। তাঁর কাছে এসব কথার জবাবদিহি করতে হবে। সাবধান, তোমরা আমার পরে পথভ্রষ্ট হয়ে যেয়ো না, খোদাদ্রোহী হয়ে পরস্পরে রক্তপাতে লিপ্ত হয়ো না।

সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে পবিত্র কোরআন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ধর্মের ব্যাপারে জোরজবরদস্তি নেই। ভ্রান্ত মত ও পথকে সঠিক মত ও পথ থেকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। (সূরা বাকারাঃ ২৫৬)

সুতরাং তোমাদের ধর্ম তোমাদের জন্য, আমাদের ধর্ম আমাদের জন্য। ( সূরা কাফিরুনঃ ৫)

একে অন্যের ধর্ম পালন করতে গিয়ে কেউ কোনোরূপ সীমা লঙ্ঘন কিংবা বাড়াবাড়ি করবে না। অন্য কেউ যদি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেও ফেলে তবে ভুলেও যেন কোনো ইমানদার এ ধরনের হীন ও জঘন্য কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত না করে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যা অবলম্বন করলে তোমরা কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। তা হল আল্লাহর কিতাব এবং আমার সুন্নাহ।

আপনি কোরআন এবং হাদিস অবলম্বন করলেই ভালো ভাবে ইসলামের সকল বিধান ধারন বহন করতে পারবেন।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আপনার মনে এমন ধারনা জন্ম নিতেই পারে কেননা পৃথিবীর সকল জাতীই তার ধর্মকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে।আমি যখন ঠাকুরগাও ছিলাম আমারো এমন হয়েছিলো।আপনি "প্যারাডক্সিকেল"লেখক সাজিদ। এই বইটি পরতে পারেন তাহলেই আপনার সকল সংসয় দুর হয়ে যাবে। আর আপনি এই বইটি রকমারি থেকে অর্ডার করে কুরিয়ারের মাধ্যমে অথবা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এই বইটি পেতে পারেন। তাহলেই আপনি ইসলাম ধর্মের প্রতি ভালোবাসা জেগে উঠবে । আমি কখনই চাইনা একজন ব্যাক্তি কোন ধর্মের প্রতি অন্ধ বিশ্বাসি হোক সেটা হিন্দু ,খ্রিস্টান ,ইসলাম,বোদ্ধ যেকোন ধর্মই হোক না কেন ।ধন্যবাদ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ