প্রিয় ভাই, বিবাহিত মহিলা যদি জেনায় লিপ্ত হয় ইসলামের দৃষ্টিতে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু যদি গর্ভবতী কোন মহিলা জেনায় লিপ্ত হয়, এবং তার এই গর্ভধারণ বৈধ হয়ে থাকে, তবে সন্তান জন্মের পূর্ব পর্যন্ত তাকে কোন শাস্তি প্রদান করা যাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন দশায় এমন একটি ঘটনা হাদিসে উল্লেখিত রয়েছে। একজন মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলেন, এবং বললেন হে আল্লাহর রাসূল আমি জিনা করেছি আমাকে শাস্তি দিন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমার গর্ভের সন্তান নিষ্পাপ, তার জন্ম পর্যন্ত তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর মহিলা পুনরায় আসলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তুমি ফিরে যাও, কেননা দুই বছর পর্যন্ত সন্তানকে দুধ পান করানো মায়ের জন্য ফরজ। দুই বছর পর মহিলা আবার আসলেন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওই মহিলাকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিলেন। যদি ও আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ওই মহিলার তওবা কবুল করেছিলেন। যেহেতু আমাদের দেশে মৃত্যুদন্ড এর কোন বিধান নেই। সেহেতু আপনার সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পূর্ব পর্যন্ত এবং সেই সন্তানকে দুগ্ধ পান করানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের দায়িত্ব আপনার। আপনি তার সঙ্গে শারীরিক মিলনে বিরত থাকুন, কিন্তু আপনার সন্তানের দায়িত্ব আপনাকে ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি তে নিতেই হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়া যায়। ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি তার স্ত্রীকে তার হায়েয অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। উমার (রাঃ) বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেনঃ তাকে বলো, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়, এরপর সে চাইলে তাকে তুহর অথবা গর্ভবতী অবস্থায় তালাক দেয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বরঃ ২০২৩ হাদিসের মানঃ সহিহ)। তবে গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকরী হবে না। এ ক্ষেত্রে ৯০ দিন এবং সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার মধ্যে যেদিনটি পরে হবে সেদিন থেকে তালাক কার্যকর হবে৷ অর্থাৎ স্ত্রী গর্ভবতী হলে, সন্তান প্রসব না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। তবে মনে রাখতে হবে এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্ত্রী পূর্ণ ভরণপোষণ পেতে আইনত হকদার। আল্লাহ কোরআন মাজিদে বলেন, আর যে স্ত্রীদের মধ্যে অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, মহান। আর তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশংকা করলে তোমরা স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিশ নিযুক্ত কর; তারা উভয়ে নিস্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থঅ সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত। (আন নিসাঃ ৩৪-৩৫)