ভাবছিলাম প্রশ্নটা জীবন নিয়ে করবো, কিন্তু কোনো বিভাগ পেলাম না বলে প্রেম ভালোবাসার নামেই শুরু করতে হলো।

শুরুতেই বলে রাখি, আমি সবসময় একা থাকি; কিন্তু একা থাকাটা আমার মোটেও পছন্দ না। কারো(মা-বাবা, ভাই-বোন অথবা নিজের সাথেই) আলিঙ্গনে থেকে নিজেকে মুক্ত করে ভাসিয়ে দেই। আশেপাশে কেউ না থাকলে আমার খুব কষ্ট হয়, আর আপন কাউকে জড়িয়ে ঘুমাতে না পারলে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। অবশ্য আমার কোল বালিশ কিংবা বালিশ জড়িয়ে ঘুমানোর কোনো অভ্যাস নেই। কাল্পনিকভাবে নিজেই নিজের কোলের মাঝে ডুবে থাকি এখন। 

আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি; ভালোবাসাটা আধুনিক না, সত্যিকারের ভালোবাসা। যে ভালোবাসার মাঝে চাওয়া-পাওয়া, আকাঙ্ক্ষা, কামনা, বাসনা কিছু নেই। পবিত্র ভালোবাসা যাকে বলে। ভালোবাসাটা আপনা-আপনি আসে নি, ইচ্ছে করে ভালোবেসেছি; ভালোবাসার অনুমতিও নিয়েছিলাম(আসলে ভালোবেসে ফেলেছিলাম)। অনেক ছোট থেকেই আমার কল্পনা-স্বপ্ন এর মাঝে একটা মেয়ের অস্তিত্ব সবসময় থাকে। যে মেয়েটা আমার সাথে গল্প করে, আমাকে বোঝায়, শান্তনা দেয়, শাসন করে। সেই মেয়েটাকে অনেক খুঁজেছি জীবনে। পচুর গল্প লিখতাম, হঠাৎ করেই গল্পের হাত ধরে একটা মেয়ের সাথে কথা শুরু হয়। সেই মেয়েটার সাথে কথা বলে বুঝতে পারি কল্পনার মেয়েটার সাথে প্রায় সবগুলো গুনে সে মিলে যায়। ভালো লাগা শুরু হয়, মেয়েটাকে জানতে থাকি; মেয়েটার সব বিষয়ে জানার পরে মেয়েটাকে ভালোবাসার কথা বলি, এতে মেয়েটা খুশি হয়। চলতে থাকে আমাদের কথাগুলো তবে সবার মতো রাত জেগে কথা বলা, চ্যাট করা আমাদের ছিলো না। আমরা কথা বলতাম জীবনের বিষয়ে, শেয়ার করতাম নিজেদের ভাবনা। প্রায় এক বছর পরে মেয়েটাকে গভীরভাবে ভালোবাসতে ইচ্ছে করলো। হঠাৎ করেই মেয়েটার অস্তিত্ব আমার কল্পনাতে চলে এলো। প্রায় দেড় বছরের দিকে একটা স্বপ্ন দেখলাম, মেয়েটার সাথে আমি ছাদে বৃষ্টির মাঝে জড়িয়ে ধরেছি। মেয়েটার শরীরের প্রতি একটা আকর্ষণ তৈরি হলো। মেয়েটাকে বললাম, আমার জীবনে তাকে চাই; সে না বলে দিলো। তাকে বললাম, আমি তার শরীরের প্রেমে পড়ে যাচ্ছি; তাই কথা আর বলবো না। এতে সে কাঁদতে লাগলো খুব। আমি জানতাম, মেয়েটা আমাকে আমার চেয়েও অনেক বেশি ভালোবাসে কিন্তু সে মেয়ে। অনেক ভালো মেয়ে তাই পরিবারের বিরুদ্ধেও যেতে চাইবে না আর আমিও চাই না সে তার পরিবারের বিরুদ্ধে যাক। আমরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নেই কথা না বলার; আর তার ইন্টার পরিক্ষা চলে আসলো। সে বললো, প্রতি সপ্তাহে একদিন ১০-১৫ মিনিট কথা বলবে; সেখানে আমি চেয়েছিলাম মাসে একদিন। তার কথাতেই প্রতি সপ্তাহে কথা বলতাম। কথা না বলে থাকাতে একটুও খারাপ লাগতো না। সন্দেহ মাঝে মাঝে হতো, আমরা সন্দেহের কথা খুলে বলতাম আর সঠিকটা জেনে নিতাম। তাই বিশ্বাসের মাঝে বাধ ভাঙ্গেনি কখনো। মেয়েটাকে মেসেজে এতো ভালোবাসি বলতাম যে, মেয়েটা বিরক্ত হয়ে কথা বলা বন্ধ করে দিতো। আমিও আনন্দ মেয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম। ওর কয়েকটা বান্ধবী জানতো শুধু আর আমাকে বন্ধুদের মাঝে বলতে নিষেধ করেছিলো। আমরা এমন কিছু করতে চাই না, যাতে সম্মানহানি হয়। শরীরের প্রতি কামনা জেগেছে বলেও আমার প্রেম করার কোনো ইচ্ছে নেই; সে এতে খুশি। তাকে অনেক জোর করেও ওর মুখ থেকে একবার ভালোবাসি কথাটা বের করতে পারি নি।

আমি ওকে বিয়ে করার কথা বলি; দুই-তিন বছর পরে বিয়ে করবো। আর বিয়ের আগে কোনো কথা বলবো না; কিন্তু সে কোনো ভাবেই আমার সাথে বিয়ে করবে না বলেও কোনো কারণে কথা বলা বন্ধ করতে চায় না। সে তার মায়ের সাথে কথা বলতে নিষেধ করতো, তাই তার মা ফোন রিসিভ করলেও আমি কথা বলতাম না। কিন্তু তার মা এ বিষয়টা জানার পরেও তার মেয়েকে কিছু বলতো না; কারণ তার মা আমাকে ভালোভাবে জানতো। একদিন রাগ করে, ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ওর মা এর সাথে কথা বলি; এবং বলি তার মেয়েকে বিয়ে করার কথা। তার মা সবকিছু আমার সিদ্ধান্তের উপর ছেড়ে দিলো। মেয়েটার সাথে আমার কথা প্রায় হতোই না আর; তার মা এর কাছ থেকে জানলাম, সে কারো সাথেই কথা বলে না আর খুব একটা। সারাক্ষণ দরজা, জানালা বন্ধ করে রুমে শুয়ে থাকে। এটা স্বাভাবিক ছিলো, কারণ সে একবার আমাকে বলেছিলো; সে আর কারো সাথেই কথা বলবে না, শুধু আমার সাথে ছাড়া। প্রায় মাসখানিক পর তার সাথে একদিন কথায় কথায় বের করে নিলাম, সে বিয়েতে রাজি; যদি কোনো সমস্যা না হয়। পরক্ষনেই সে কথার মোর অন্যদিকে নিয়ে নিয়ে কল কেটে দিলো। ভালোবাসার কথা জোর করে জিজ্ঞাসা করলে বলে, বাসি না ভালো; কল না দেওয়ার জন্য। তবুও বিশ্বাস করি, এটাই তার কাছে ভালোবাসা। শেষ তার সাথে কথাতে সে বলেছিলো, আপনি তো কোনো অন্যায় করছেন না; বিয়ে করতে চাইছেন, প্রেম করার কথা তো বলছেন না। আপনার কথায় কেন রাগ করবো? এরপরে সে অনার্স এর জন্য বাড়ি থেকে চলে যায়; আর আমার  নাম্বার তার ফোনে ব্লাক লিস্টে অনেক আগে থেকেই থাকতো। দরকার হলে সে নিজে থেকেই আমাকে ফোন দিতো, তবুও নাম্বার ব্ল্যাক লিস্টেই রাখতো। তার মায়ের সাথে মাঝে মাঝে কথা বলি; মেয়েটা তার মায়ের সাথে প্রতিদিন কথা বলে, অথচ আমার কথা যেন মনেই পড়ে না। একবার বাড়িতে আসে, আমি ফোনে জিজ্ঞাসা করি; আমার সাথে কি কথা বলতে ইচ্ছা করে না? সে একটু হেসেই বলে; করে না। পরে বলি, আমার তো ইচ্ছা করে তোমার সাথে কথা বলতে; সে বলে, ইচ্ছা করলে মনে মনে বলবেন। এরপরে সে নিজের ফোনটাও বন্ধ করে মায়ের কাছে রেখে পড়াশোনা করার জন্য কলেজ চলে যায়। মায়ের সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করলে রুম-মেট এর ফোন দিয়ে কথা বলে।

প্রায় আড়াই বছর হলো পরিচয়; এখন প্রতিটা দিন যন্ত্রণাময়। শুধু অপেক্ষা করছি, বিয়েটা কবে করবো। শরীরের প্রতি চাওয়াটা এতো তীব্র হয়, আগে জানতাম না। কিন্তু এখনো আমি মেয়েটাকে সামনে থেকে দেখি নি; আর দেখার ইচ্ছেও নেই। কিন্তু ব্যাকুলতা প্রচন্ড। মেয়েটার কেমন মনে হয়, আমি জানি না; তবে বিশ্বাস করি ওর মনেও এমনই ভাবনা। এরপরে আসে, মেয়েটার কথা অনুসারে; এই বছরের মধ্যেই মেয়েটার বিয়ে হয়ে যেতে পারে। মেয়েটার মা' এর কথা অনুসারে, সে মেয়ে বলে তার বিয়েটাও তাড়াতাড়ি দেওয়া প্রয়োজন। এটা আমিও মেনে নিয়েছি, একটা মেয়ের বিয়ে দিতে দেরি করা ঠিক না। এই নিয়ে মেয়েটার সাথে কথাও বলেছি। 

মেয়েটার কয়েকটা কথা ছিলো...

"হয়তো সারাজীবন কথা বলতে পারবো না, জানি। কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি কথা শেষ হয়ে যাবে; মানতে পারবো না।"
"কাউকে ভালোবেসে তার সুখের জন্য তার থেকে দূরে থাকাটা কি অন্যায়?" বলেছিলাম, না!
"আচ্ছা, আমার অন্য কারো সাথে বিয়ে ঠিক হয়; তবে আমার বিয়েতে আপনাকে আসতে বললে আপনি আসবেন না?" বলেছিলাম, আসবো।
"আমার বিয়ের পরে আমি যখন আমাদের বাড়িতে আসবো, আপনি দেখা করতে আসতে পারবেন; যদি বলি, আর আপনার কোনো সমস্যা না থাকে?", বলেছিলাম পারবো।
আসলে আমাদের মাঝে যা কথা হয়েছে... আমার কাছে এগুলো কখনো আবেগ থেকে বলা কথা না। এগুলো অনেক ভেবে, বিবেক থেকে বিবেকের কথা। 

সমস্যা একটাই; আর সেটা আমার। শরীরের প্রতি কামনা তৈরি হওয়া। এটাও আমি একভাবে স্বাভাবিক ধরে নিয়েছি; কারণ আমার বয়স ২০ ছুঁয়েছে। কিন্তু সন্দেহটা থেকেই যায়... তার শরীরের প্রতি আমার এই আকাঙ্ক্ষা সবসময় রয়েছে; এটা কি কোনোভাবে অন্যায়ের মাঝে যাচ্ছে, এটা কি আমার অন্যায় হচ্ছে। 
অথচ আমার প্রবৃত্তি সবসময় নিয়ন্ত্রিত। পথ চলার সময় আমি অবনত, সে ছাড়া অন্য কেউ বা অন্য কোনো কিছু আমার ভাবনাতে নেই। কারো প্রতি কোনো ইচ্ছাও নেই। রাস্তায় পচুর মেয়ে থাকে, খুব একটা চোখ পড়ে না কারো দিকে। সারাদিনে হাজার-হাজার মেয়ে রাস্তাদিয়ে হেটে যেতে পারে; হয়তো সারাদিন হাটার পরে ২-৩ টা মেয়ে আমার নজর কাড়ে; কারণ তাদের চারিত্রিক গুনটা আমার বেশ ভালো লাগে। অথচ আমি কাউকে নিয়েই ভাবি না; ভাবনায় শুধু একটা মেয়ে।
বিঃদ্রঃ এটা নিজের উপর বিশ্বাস করি; মেয়েটার অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই সে আমার কল্পনা, আমার কামনা, আমার আকাঙ্ক্ষা সবকিছু থেকে মুছে যাবে।

... আপনারা নিজেদের মতামত দিন...
১। আমি কি সত্যি সঠিক, না ভুল কিছু করছি?
২। আমি কি বাস্তবকে চিনতে ভুল করছি, না এটাই বাস্তব?
৩। আমি কি সাইকো, এবনর্মাল নাকি স্বাভাবিক?
৪। এগুলো কি আমার মানসিক সমস্যা, নাকি আমি সম্পূর্ণ সুস্থ?
৫। আমি কি আবেগ নিয়ে ডুবে আছি, নাকি ঠিক আছে এটা?
৬। আমার জীবনের সবকিছু একটা নিয়মের মাঝে নিয়ন্ত্রিত হয় কেন?
৭। ইসলামের বিষয়ে দেখেছি, উত্তর পেয়েছি আল্লাহ সবকিছু দেখছেন। অথচ কোনো নিষেধাক্কা বা অনুমতি দেখি নি।

কষ্ট করে ব্যাখ্যা সহকারে দিলে ভালো হয়...
এক লাইন বললেও বুঝে নেবো।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Shahid

Call

আমার মনে হয় আপনার ভেতরে কিছু মানসিক সমস্যা কাজ করছে। আর আপনার আবেগ অনেক বেশি কাজ করছে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তরে না গিয়ে আপনার বর্ণণা সম্পর্কে দুয়েকটি কথা বলব।আপনি যে কথাগুলো বলেছেন,তার প্রতিটি কথার পিঠেই সান্তনা খুঁজে নিয়েছেন।এবং অন্য ঘটনা উল্লেখ করে মূল বক্তব্যের প্রতি জোর দেখিয়েছেন বা মূল বক্তব্যের যৌক্তিকতা বাড়িয়েছেন।তাতে মনে হল আপনার বিশ্লেষণ ক্ষমতা অনেক ভাল,এবং যেকোন কথাকেই যুক্তি দিয়ে সঠিক প্রমাণিত করতে পারবেন।তারপরেও বলি,যৌনতা একটি জৈবিক চাহিদা।সেটা ঠিক আছে,কিন্তু সেটাকে অন্যায়ভাবে কল্পনা বা আশা করা ঠিক নয়।নিজের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।নিজের কামনাকে প্রবল হতে দেয়া যাবে না।আপনিই কিন্তু শুরুতে বলেছিলেন আপনাদের ভালবাসা পবিত্র।আসলে মানুষের শারীরিক চাহিদাকে প্রকৃতির নিয়ম বলা চলে।নিজেদের প্রজাতি রক্ষার্থে এটা প্রয়োজন।তাই বিয়ের আগের প্রেমকে কখনোই পবিত্র বলা যায় না।প্রেমের সম্পর্কে একসময় চাওয়া পাওয়ার হিসাব আসবেই।তাই ধর্ম ও সমাজ বিয়ের আগে প্রেম সমর্থন করে না।তবে এখন মেয়ের জীবন থেকে সরে দাঁড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা যথার্থই।কারণ ভোগে নয় ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।বেশি কিছু বললাম না,আশাকরি এতেই আপনি বুঝতে পারবেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ