শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

কোরআনের আয়াত ও  তাফসীর ইবন কাসীর হতে দলীলঃ ১. নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আকাশ সমূহ এবং পৃথিবীকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন । (সুরা আরাফ: ৫৪) তাফসীরঃ ইমাম ইবন কাসীর বলেছেনঃ “আসমান ও জমিনকে আল্লাহ ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, এই ছয় দিনের ব্যস্ততার পর আল্লাহ তা’আলা আরশের উপর সমাসীন হন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

Call

1.         ইমাম আবু হানিফা রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আল্লাহ কোথায়? তিনি বললেন :

كان الله تعالى ولا مكان، كان قبل أن يخلق الخلق، كان ولم يكن أين ولا خلق ولا شىء، وهو خالق كل شىء

যখন কোনো স্থানই ছিল না, তখনো আল্লাহ ছিলেন। সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে তিনি ছিলেন। তিনি তখনো ছিলেন, যখন ‘কোথায়’ বলার মতো জায়গা ছিল না, কোনো সৃষ্টি ছিল না এবং কোনো বস্তুই ছিল না। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা।[1]  

2.         ইমাম আবু হানিফা রহ. আরও বলেন :

نقر بأن الله على العرش استوى من غير أن يكون له حاجة إليه واستقرار عليه وهو الحافظ للعرش وغير العرش، فلو كان محتاجا لما قدر على إيجاد العالم وتدبيره كالمخلوق ولو كان محتاجا إلى الجلوس والقرار فقبل خلق العرش أين كان الله تعالى! تعالى الله عن ذلك علوا كبيرا.

আমরা স্বীকার করি যে, আল্লাহ তাআলা আরশের ওপর ইসতিওয়া করেছেন। তিনি আরশের প্রতি কোনো ধরনের প্রয়োজন ও তার ওপর স্থিতিগ্রহণ ব্যতিরেকেই তার ওপর ইসতিওয়া করেছেন। তিনি আরশ ও আরশ ছাড়া অন্য সব সৃষ্টির সংরক্ষণকারী কোনো ধরনের মুখাপেক্ষিতা ব্যতিরেকে। তিনি যদি মুখাপেক্ষী হতেন, তাহলে সৃষ্টিজীবের মতো মহাবিশ্ব সৃষ্টি ও পরিচালনা করতে সক্ষম হতেন না। তিনি যদি আরশের ওপর সমাসীন হওয়া এবং স্থির হওয়ার দিকে মুখাপেক্ষী হতেন, তাহলে আরশ সৃষ্টির পূর্বে তিনি কোথায় ছিলেন? আল্লাহ এসব বিষয় থেকে সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বে।[2]  

3.        ইমাম ইবনু আবদুস সালাম রহ. ইমাম আবু হানিফা থেকে উদ্ধৃত করেন :

من قال لا أعرف الله تعالى في السماء هو أم في الأرض كفر، لأن هذا القول يوهم أن للحق مكانا ومن توهم أن للحق مكانا فهو مشبه

যে ব্যক্তি বলবে, আমি জানি না, আল্লাহ তাআলা আকাশে আছেন নাকি পৃথিবীতে, সে কাফির হয়ে যাবে। কারণ, এই কথাটি এ সংশয় সৃষ্টি করে যে, আল্লাহ তাআলার জন্য কোনো স্থান রয়েছে। যে ব্যক্তি এ ধারণা রাখবে যে, আল্লাহ জন্য কোনো স্থান রয়েছে, সে একজন মুশাব্বিহা।[3]  

4.         ইমাম মাতুরিদি রহ. লেখেন :

‘আল্লাহ তাআলার অবস্থানের ক্ষেত্রে মুসলমানদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

(ক) তাদের কেউ কেউ ধারণা করছে যে, আল্লাহ তাআলা আরশের ওপর অধিষ্ঠিত। তাদের নিকট আরশ হলো একটি সিংহাসন; ফেরেশতাগণ যা বহন করে এবং এর চারদিক প্রদক্ষিণ করে। কেননা, আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন, ‘সেদিন আপনার প্রতিপালকের আরশকে আটজন ফেরেশতা বহন করবে।’[4] ‘আপনি ফেরেশতাদের আরশ প্রদক্ষিণ করতে দেখবেন।’[5] অন্য আয়াতে রয়েছে, ‘যে সকল ফেরেশতা আরশ বহন করে এবং আরশের চারপাশ প্রদক্ষিণ করে।’[6]   

এরা পবিত্র কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছে। পবিত্র কুরআনের সুরা তহার ৫ নম্বর আয়াতে রয়েছে, ‘দয়াময় আরশের ওপর ইসতিওয়া করেছেন।’

এ ছাড়াও তাদের দলিল হলো, মানুষ দুয়ার সময় ওপরের দিকে হাত উত্তোলন করে এবং ওপর থেকে নিজেদের কল্যাণের প্রত্যাশা করে। এদের বক্তব্য হলো, আল্লাহ তাআলা পূর্বে আরশে ছিলেন না। পরবর্তীতে আরশে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তারপর তিনি আরশে ইসতিওয়া করেছেন।’[7]  

(খ) কেউ কেউ বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাআলা সব জায়গায় রয়েছেন। এরা পবিত্র কুরআনের কয়েকটি আয়াত দ্বারা দলিল দিয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তি যদি কথোপকথন করে, তবে আল্লাহ তাআলা হন চতুর্থজন।’[8] অপর আয়াতে রয়েছে, ‘আমি তাদের ঘাড়ের রগের চাইতেও অধিক নিকটবর্তী।’[9] অন্য আয়াতে রয়েছে, ‘আমি তোমাদের চেয়ে মৃত ব্যক্তির অধিক নিকটবর্তী। অথচ তোমরা দেখো না।’[10] অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘অথচ তিনি সেই আল্লাহ, যিনি আকাশেও প্রভু এবং পৃথিবীতেও প্রভু।’[11]  


তথ্যসুত্রঃ কুরআানের জ্যোতি

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আল্লাহ তায়ালা কোথায় থাকেন? এ প্রশ্নের উত্তরে মহান আল্লাহ তিনি নিজেই বলছেন, অর্থাৎ, পরম করুণাময় আরশের উপর আছেন। (সুরা তাহা, আয়াতঃ ৫)। এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, অর্থাৎ আর তিনিই আল্লাহ যিনি আসমানে আছেন। (সুরা আনআম, আয়াতঃ ৩) এ আয়াতে জানা যায়, আল্লাহ আসমানে আছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ যিনি আসমান সমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশের উপর উঠেছেন। (সূরা আরাফ, আয়াতঃ ৫৪)। তিনি আরো বলেনঃ নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমুন্নত হন। (সূরা ইউনুস, আয়াতঃ ৩)। তিনি আরো বলেনঃ আল্লাহ যিনি আসমান সমূহ উপরে স্থাপন করেছেন খুঁটি ছাড়া, তোমরা তা দেখছো। অতঃপর তিনি আরশের উপর উঠেছেন। (সূরা রাদ, আয়াতঃ ২)। উল্লেখিত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তায়ালা আরশে সমুন্নত আছেন। কিভাবে সমুন্নত আছেন, এ কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। ইমাম মালেক রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ কাইফিয়াত বা 'সমুন্নত হওয়ার' পদ্ধতি অজ্ঞাত আর ইসতাওয়া বা সমুন্নত হওয়াটা জ্ঞাত। এর প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব এবং এ বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদআত। (ইমাম বাইহাক্বীর আল আসমা ওয়াস সিফাত, পৃষ্ঠা ৪০৮, তামহীদঃ ৭/১৫১)। আল্লাহ তায়ালা আসমানের উপর আছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছো যে, যিনি আকাশের উপর রয়েছেন তিনি তোমাদের সহ ভূমিকে ধসিয়ে দিবেন না? আর তখন ওটা আকস্মিকভাবে থরথর করে কাঁপতে থাকবে। অথবা তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছো যে, আকাশের উপর যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথর বর্ষণকারী ঝঞ্ঝা বায়ু প্রেরণ করবেন না? তখন তোমরা জানতে পারবে কিরূপ ছিল আমার সতর্কবাণী। (সূরা মুলক, আয়াতঃ ১৬-১৭)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

সাত আসমানের উপর সিদরাতুল মুনতাহা নামক স্হানে আল্লাহর আরস আছে। এবং আল্লাহ সেখানেই থাকেন। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

এ প্রশ্নের ব্যাপারে আমি আপনাকে সেই উত্তরই দেব, যে উত্তর ইমাম মুহাম্মদ (রহঃ) দিয়েছিলেন। উনাকে কেউ একজন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, "আল্লাহ তায়া'লার বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে বিশ্বাস রাখা ফরয, কিন্তু প্রশ্ন করা বিদআত". নিশ্চয়ই সাহাবায়ে আকরাম(রাঃ) গণ জ্ঞানের দিক দিয়ে আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রগামী। কিন্তু উনারাও রাসূল (সাঃ) কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতেন বলে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। আর রাসুল(সাঃ) ও এ ব্যাপারে কিছু বলে যান নি। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ হলেন এমন এক স্রষ্টা, যার সবকিছু, যার প্রকৃতি আমাদের কল্পনার বাইরে। হাদিসে আছে, জান্নাতে যা যা নেয়ামত থাকবে তা নাকি আমাদের কল্পনার বাইরে। তাহলে জান্নাতের স্রষ্টা যিনি, তার ব্যাপারে কিভাবে আমরা না জেনে কল্পনা করতে পারি?? এ ব্যাপারে আমাদের আকীদা হওয়া উচিত, এ বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ পাকই সম্যক অবগত। আমরা শুনলাম এবং মানলাম।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ