শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

সুরা নমলের মধ্যে হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর সময়কার হুদহুদ পাখি কর্তৃক রানী বিলকিস ও তার প্রজাদেরকে কালেমার দাওয়াত এর বিবরন দেয়া হয়েছে এভাবে, হুদহুদ পাখি ছোট একটি পাখি।  হযরত সোলায়মান (আঃ) এই হুদহুদ পাখিকে মাটির নিচে কোথায় পানি আছে, তা আবিস্কারের কাজে নিয়োজিত রেখেছিলেন। প্রত্যেক সভাসদেই হুদহুদ পাখীর উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল।


একদা হযরত সোলায়মান (আঃ) এক সভাসদ ডাকলেন। কিন্তু হুদহুদ পাখি অনুপস্থিত। ফলে, সভাকার্য পরিচালনায় বিলম্ব হচ্ছে। হযরত সোলায়মান (আঃ) রেগে গেলেন এবং বললেনঃ আজ হুদহুদ পাখি ফিরে আসলে তাকে চরম শাস্তি দেয়া হবে। বিলম্ব করে হুদহুদ পাখি হাপাতে হাপাতে সভায় উপস্থিত হলো।


হযরত সোলায়মান (আঃ) রেগে হুদহুদ পাখিকে বিলম্বের কারন জিজ্ঞাসাবাদ করলে হুদহুদ পাখি বললোঃ হে আল্লাহ পাকের নবী! আপনি আমাকে শাস্তি দিলে পরে দিবেন। প্রথমে আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তারপর আমার অন্যায় পেলে আমাকে শাস্তি দিবেন।

হযরত সোলায়মান (আঃ) বললেনঃ বল তোমার কথা, হুদহুদ পাখি বিস্তারিত বর্ণনা দিল। সে পানির খোঁজ করতে করতে হাজার হাজার মাইল দূরে এমন এক রাজ্যে গিয়ে পৌঁছালো, যেখানে গিয়ে রানী বিলকিস নামে এক রানী নিজেও এক আল্লাহ পাককে বাদ দিয়ে সূর্যের পুজা শুরু করেছে এবং তার সমস্ত প্রজাও সূর্যের পুজা করছে, এই সংবাদ নিয়ে আসতে আমার বিলম্ব হয়ে গেল।

হযরত সোলায়মান (আঃ) তার কথা শুনে রাগান্বিত না হয়ে বরং কালেমার দাওয়াত দিয়ে রানী বিলকিসের নিকট একটি পত্র লিখলেন এবং সাথে সাথে ঐ হুদহুদ পাখির মুখে করে সেই চিঠি যেভাবেই হোক রানী বিলকিসের নিকট পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়ে দিলেন এবং চিঠি প্রাপ্তি শেষে উহা কি প্রতিক্রিয়া তা পর্যবেক্ষন করে ফেরার নির্দেশ দিলেন।

যেমন হুকুম তেমন কাজ। হুদহুদ পাখি এত ক্লান্ত, তবুও দ্বীনের দাওয়াতের বিষয়ে কোন গরি-মষি না করে ক্লান্ত শরীরে পূনরায় হাজার হাজার মাইল সফরে রওয়ানা হয়ে গেল। সে রানী বিলকিসের রাজ্যে পৌঁছে খুঁজতে খুঁজতে রানী বিলকিসকে তার শয়নগৃহে পেল। হুদহুদ পাখি হযরত সোলায়মান (আঃ) কর্তৃক প্রেরিত কালেমার দাওয়াতের পত্রখানি ঘুমন্ত রানী বিলকিসের বুকের উপর রেখে ঐ গৃহের এক কোনে গিয়ে পর্যবেক্ষন করছে।

রানী বিলকিসের ঘুম ভাঙলে দেখে, তার বুকের উপর একখানা পত্র এবং তা হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর কালেমার একত্ববাদের দাওয়াত।  দেখে রানী বিলকিস ক্রোধে সভাসদ ও দাড়োয়ান সকলকে ডেকে বললোঃ কে এক অজানা এই পত্র সমস্ত পাহাড়াদারদের চক্ষু ভেদ করে তার বুকের উপর রেখে গেল? সকলেই বললোঃ আমাদের ডিউটিতে আমরা কোন অবহেলা করিনি। কিন্ত উক্ত পত্র খানা কে রেখে গেল তা আমরা কেউ দেখিনি।

যাহোক, সভাসদকে রানী বিলকিস হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর সূর্যপুজা বাদ দিয়ে কালেমার একত্ববাদকে গ্রহন করার কথা শুনালেন এবং পত্রে এটাও লেখা ছিল যে, যদি কালেমা গ্রহন না করে তবে রানী বিলকিস ও তার রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করা হবে।

শুনে রানী বিলকিস সহ সকলে বিচলিত হয়ে গেল এবং রানী বিলকিসের আহ্বানে তার প্রজাসকল কালেমা গ্রহন করে নিল। হুদহুদ পাখি উক্ত দাওয়াতের খবর হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর নিকট পৌঁছালে তিনি খুশী হন। আল্লাহ পাক হুদহুদ পাখীর এই কালেমার দাওয়াত নিয়ে সফর ও হিজরতকে এত পছন্দ করেছেন যে, পবিত্র কোরআনে এই হুদহুদ পাখীর ঘটনাকে উল্লেখ করে মহানবী (সঃ) কে এবং উম্মতি মোহাম্মদীকেও অবহিত করেছেন।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ