শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

★ প্রয়োগের ভিত্তিতে ম্যাজিস্ট্রেট তিন শ্রেণীতে বিভক্ত, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট, দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এবং তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে প্রত্যেক জেলায় একজন ডেপুটি কমিশনার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে, এডিশনাল ডেপুটি কমিশনার এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে এবং জয়েন্ট ডেপুটি কমিশনার জয়েন্ট ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এঁরা প্রত্যেকেই প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ভোগ করেন। এঁদের পাশাপাশি মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে প্রত্যেক জেলায় প্রথম শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণী বা তৃতীয় শ্রেণীর আরও কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগপ্রাপ্ত হন। জেলায় নিয়োগপ্রাপ্ত অন্য সকল ম্যাজিস্ট্রেট কার্যত ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে থাকেন যদিও এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট এবং জয়েন্ট ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট কার্যত ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অধীনস্থ ম্যাজিস্ট্রেটদের মধ্যে কার্যবণ্টনও করতে পারেন। একজন প্রথম শ্রেণী বা দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট একটি উপজেলা/থানার দায়িত্বে বহাল থাকেন। এধরনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে উপজেলা/থানা ম্যাজিস্ট্রেট বলা হয়। তিনি ঐ থানার যেকোন অংশে সংঘটিত কোনো অপরাধ আমলে নিতে পারেন। সরকার যে-কোন ম্যাজিস্ট্রেটকে অতিরিক্ত ক্ষমতাও প্রদান করতে পারে। মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে এধরনের এলাকা বা তার যেকোন অংশে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, এডিশনাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। এডিশনাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্য সব মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে থাকেন এবং তিনিই অধীনস্থ ম্যাজিস্ট্রেটদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করেন। সরকার দেশের যেকোন নাগরিককে যেকোন স্থানীয় এলাকার জন্য জাস্টিস অব দি পিস (অবৈতনিক ম্যাজিস্ট্রেট) নিয়োগ করতে পারে। শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দানের ক্ষেত্র ব্যতীত সবধরনের অপরাধের বিচারকার্য সম্পাদনের জন্য সরকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, এডিশনাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অথবা যেকোন এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে এবং মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা দশ বছরের অধিক মেয়াদে কারাবাসের শাস্তিযোগ্য নয় এমন সব অপরাধের বিচারের জন্য যেকোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতা প্রদান করতে পারে। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট হচ্ছেন একটি জেলার প্রধান এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হচ্ছেন ওই এলাকার প্রধান প্রশাসক। প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে তারা কিছু অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। বর্তমানে যেকোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আইন দ্বারা স্বীকৃত নির্জন কারাবাসসহ অনধিক পাঁচ বছরের কারাদন্ড প্রদান, অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং বেত্রাঘাতে দন্ড প্রদান করতে পারেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর যেকোন ম্যাজিস্ট্রেট আইনে স্বীকৃত নির্জন কারাবাসসহ অনধিক তিন বছরের কারাদন্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারেন। কোনো তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট অনধিক দুই বছরের কারাদন্ড প্রদান এবং দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারেন। জরিমানার টাকা অনাদায়ে ম্যাজিস্টেট কারাদন্ড মেয়াদকালের অনধিক এক চতুর্থাংশ অতিরিক্ত মেয়াদের কারাদন্ড প্রদান করতে পারেন, যা অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের আওতাধীন। বড় ধরনের অপরাধসমূহের বিচারকার্য সম্পাদনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত একজন ম্যাজিস্ট্রেট সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদন্ড প্রদান করতে পারেন। প্রশাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথককরণের জন্য মাজদার হোসেন মামলার বিচারের রায় কার্যকর করার লক্ষ্যে কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ২০০৭ সংশোধন এবং ২০০৭ সালের ১ নভেম্বরে কার্যকর হওয়ার পর প্রশাসনিক সরকারি কর্মকর্তাদের বিচারকার্যে নিয়োজিত করার ব্যবস্থা পরিবর্তন করে বিচারিক কর্মকর্তাদের এক্তিয়ারে বিচারিক ক্ষমতা অর্পন করা হয়েছে। একজন অতিরিক্ত জেলা জজকে প্রথম শ্রেণীর বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে এবং তার পদবি করা হয়েছে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।  ★ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের সাধারণ ক্ষমতাসমূহঃ কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (১৮৯৮) এর তৃতীয় অধ্যায় অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাধারণ ক্ষমতাসমূহ: ১। ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে অপরাধ করলে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা অথবা হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা। (ধারা ৬৪) ২। কারও উপস্থিতিতে তাকে গ্রেপ্তার অথবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা। (ধারা ৬৫) ৩। অভিযুক্ত ব্যক্তির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুমোদন বা বাতিল করা। (ধারা ৮৩,৮৪,৮৬) ৪। পোস্টাল ও টেলিগ্রাফ বিভাগের দলিলাদি তল্লাসি ও জব্দ করার ক্ষমতা। (ধারা ৯৫) ৫। কোন ব্যক্তির অবৈধ সম্পদ যাচাই করার জন্য তল্লাসি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা। (ধারা ১০০) ৬। সরাসরি তল্লাসির ক্ষমতা, তার উপস্থিতিতে যে কোন স্থানে তল্লাসির পরোয়ানা জারির ক্ষমতা।(ধারা ১০৫) ৭। শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী দাবির ক্ষমতা।(ধারা ১০৭) ৮। ভবঘুরে ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সদাচরণ নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনী দাবির ক্ষমতা।(ধারা ১০৯) ৯। নিয়মিত অপরাধীদের সদাচরণ নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনী দাবির ক্ষমতা।(ধারা ১১০) ১০। জামিন খারিজ করার ক্ষমতা।(ধারা ১২৬) ১১। বেআইনি সমাবেশ ভঙ্গ করার ক্ষমতা। (ধারা ১২৭) ১২। ভঙ্গ করতে নাগরিক শক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা।(ধারা ১২৮) ১৩। বেআইনি সমাবেশ ভঙ্গে সামরিক বাহিনী দাবি করার ক্ষমতা।(ধারা ১৩০) ১৪। স্থানীয় সমস্যারোধে নির্দেশদানের ক্ষমতা।(ধারা ১৩৩) ১৫। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিতাদেশ জারির ক্ষমতা। (ধারা ১৪২) তথ্যসূত্রঃ বাংলাপিডিয়া+উইকিপিডিয়া।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ