জীবিত ব্যক্তিগণ মৃত ব্যক্তির জন্য বেশি বেশি দুআ করবে। কারণ, মানুষ মারা যাওয়ার পর তার জন্য সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন দুআ। তাই তার জন্য আমাদেরকে দুআ করতে হবে আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে ক্ষমা করে দেন তার গুনাহ-খাতা মোচন করে দেন। যেমন আল্লাহ বলেনঃ যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এবং আমাদের পূর্বে যারা ঈমানের সাথে 'দুনিয়া থেকে' চলে গেছে তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং মুমিনদের ব্যাপারে আমাদের অন্তরে হিংসা- বিদ্বেষ রাখিও না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তো অতি মেহেরবান এবং দয়ালু। (সূরা হাশরঃ ১০) আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ মৃত্যু বরণ করলে তার আমলের সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায় তিনটি ব্যতীতঃ যদি সে সাদকায়ে জারিয়া রেখে যায়, এমন শিক্ষার ব্যবস্থা করে যায় যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে এবং এমন নেককার সন্তান রেখে যায় যে তার জন্য দুআ করবে। (বুখারী) মৃত ব্যক্তি পক্ষ থেকে দান-সদকা করা: মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে দান-সদকা করা হলে কবরে তার সওয়াব পৌঁছে। চাই মৃতের সন্তান, পিতা-মাতা অথবা অন্য কোন মুসলাম দান করুক না কেন। যদিও কতিপয় আলেমের মত হল, দান- সাদাকা শুধু সন্তানের পক্ষ থেকে হলে পিতা- মাতা কবরে সাওয়াবের অধিকারী হন। এ ব্যাপারে হাদীস হলঃ আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করল যে, আমার মা হঠাৎ মৃত্যু বরণ করেছে। আমার ধারণা মৃত্যুর আগে কথা বলতে পারলে তিনি দান করতেন। এখন আমি যদি তার পক্ষ থেকে দান-সাদাকাহ করি তবে তিনি কি সোওয়াব পাবেন? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। (সহীহ বুখারী) আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লামকে বললেনঃ আমার আব্বা মৃত্যু বরণ করেছেন। কিন্তু কোন ওসীয়ত করে যান নি। আমি তার পক্ষ থেকে দান করলে তার কি গুনাহ মোচন হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। (সহীহ মুসলিম) কুরআন ও হাদীসের আলোকে মুমিনগণের দায়িত্ব হলো মৃত মুমিনগণের জন্য দোআ ও ইসতিগফার করা। আর সন্তানদের দায়িত্ব হলো মৃত পিতামাতার জন্য দোআ ও ইসতিগফার ছাড়াও দান খয়রাত করা। দোআ ও ইসতিগফার করলেই মৃত ব্যক্তি উপকৃত হবেন এবং দোয়ার বিনিময়েই তাদের নাযাত দেওয়া হয়। কুরআন ও হাদীসে দোআ ও ইসতিগফারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে আজীবন অগণিত মুমিন-মুমিনার জন্য দোআ ও ইসতিগফার করেছেন, সাহাবীগণও মৃতদের জন্য দোআ-ইসতিগফার করেছেন এবং কবর যিয়ারত করেছেন। ঈসালুস সওয়াব এর আভিধানিক অর্থ সওয়াব পৌঁছে দেয়া। অনেকেই বলে থাকেন সওয়াব রেসানী। সওয়াব রেসানী করে দিলে আপনার সওয়াবের খাতা শুন্য হয়ে যাবে না। আমি যদি মৃত ব্যাক্তিকে আমার সব সওয়াব দান করি. কিভাবে মৃত ব্যাক্তিকে সওয়াব দান করতে পারবেন আপনি কি যানেন আপনার কতটুকু সওয়াব আছে? আপনি সওয়াব দান করতে পারবেন না। জীবিত ব্যক্তিগণ শুধু মৃত ব্যক্তির জন্য বেশি বেশি দোআ ইসতিগফার দান খয়রাত করতে পারবে। এর বদৌলতে আল্লাহ পাক মৃত ব্যাক্তিকে নাযাত দিবেন।