রং ফর্সাকারী ক্রীম সম্পর্কে একটা ধারণা দিচি্ছ-

একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বাজার চলতি বেশিরভাগ ফর্সা হাওয়ার ক্রিমেই এমন সব উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে ত্বকের ভাল হওয়ার থেকে খারাপ হচ্ছে বেশি। সেই সঙ্গে কী নিয়ম মেনে এই সব ক্রিম মুখ লাগাতে হয়, সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। ফলে না বুঝেই ব্যবহার চলছে। ফলে ত্বকের ক্ষতির আশঙ্কা যাচ্ছে বেড়ে। যদিও এসব নিয়ে সাধারণ মানুষের কোনও হেলদোল নেই। তাই তো গত এক দশকে ভারত এবং আফ্রিকা মহাদেশে ফেস হোয়াইটনিং ক্রিমের ব্যবসা প্রায় মাল্টি মিলিয়ান ডলারে গিয়ে পৌঁছেছে। এখান নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে ঠিক নিয়ম না মেনে এইসব ক্রিম ব্যবহার করলে কী বিপদ হতে পারে? চলুন খোঁজ লাগানো যাক সেই উত্তর। ফর্সা হওয়ার ক্রিম মাত্রাতিরিক্ত হারে ব্যবহার করলে ত্বকের ৭ ধরনের ক্ষতি হতে পারে। যেমন...

১. স্কিন ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ে: ফর্সা হওয়ার ক্রিমে মূলত হাইড্রোকুইনান এবং মারকিউরি, এই দুটি ক্যামিকেল ব্য়বহার করা উচিত। সে জায়গায় বাজার চলতি বেশির ভাগ ক্রিমেই এই দুই উপাদানের পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত ভাবে স্টেরোয়েড এবং ট্রেটিনোইন নামে দুটি উপাদান মেশান হয়, যা কার্সিজেনিক। অর্থাৎ এই দুটি উপাদানের থেকে স্কিন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই সঙ্গে লিভারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

২.হাইপারপিগমেন্টটেশন: যে সব ফর্সা হওয়ার ক্রিমে ২ শতাংশের বেশি হাইড্রোকুইনান থাকে, সেইসব ক্রিম টানা ৩ মাস মুখে লাগালে মুখ ফর্সা হওয়ার পরিবর্তে কালো হয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে মুখের পাশপাশি সারা শরীরে হাইপারপিগমেন্টটেশনের মতো ত্বকের রোগ হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। 

৩.চামড়া শক্ত হয়ে যায়: একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে দীর্ঘদিন ধরে নানা ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি এইসব ক্রিম মুখে লাগালে ত্বক তার সৌন্দর্য হারাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া, স্ট্রেচ মার্ক সহ নানাবিধ ত্বকের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

৪.ত্বক তার ক্ষত সারানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে: সুস্থ ত্বকের নিজের ক্ষত সারিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এই কাজটি স্কিন চারটি ধাপে করে থাকে। যেমন- হেমোস্টেসিস (ব্লাড ক্লটিং), ইনফ্লেমেশন, প্রলিফেরেশন এবং মেটুরেশন। দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষতিকর ক্যামিকেল দেওয়া ফর্সা হওয়ার ক্রিম মুখে লাগালে ত্বকের ক্ষত সারানোর ক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে নানাবিধ ত্বকের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।

৫.চুলকানি: হাইড্রাকুউনানের প্রভাবে চুলকানি, কালো ছোপ, মুখ লাল হয়ে যাওয়া, ড্রাই স্কিন এবং প্রচন্ড জ্বালা হাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৬. ত্বকের সংক্রমণ বেড়ে যায়: ২০০৩ সালে ব্রিটিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজিতে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে যারা ব্রণ, ডার্মাটাইটিস এবং একজিমার মতো ত্বকের রোগে ভুগছেন তারা যদি ফর্সা হাওয়ার ক্রিম ব্যবহার করেন, তাহলে এই সব রোগের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পায়। ফলে মুখের সৌন্দর্য বাড়ার পরিবর্তে চোখে পরার মতো কমে যেতে শুরু করে।

৭. আরও নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়: মার্কারি রয়েছে এমন ক্রিম বেশি ব্যবহার করলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে চুলকানি, ত্বকের রং খারাপ হয়ে যাওয়া এবং সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

তাই পারতো পেক্ষে এধরনের ক্রীম ব্যবহার না করায় উত্তম। যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে কোনো স্কীন ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আশারাখি আপনার উত্তর পেয়েছেন।


Talk Doctor Online in Bissoy App