স্বপ্ন আসলে একটা স্থির ঘটনা। আমাদের যখন চাপ কিংবা অমিমাংশীত ঘটনা থাকে, তখন সেটা স্বপ্নে দেখে থাকি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা 10-15 মিনিটের মধ্যে স্বপ্ন ভুলে যাই। বিজ্ঞানীরা PETএর মাধ্যমে একজন ঘুমন্ত মানুষের উপর পরিক্ষা করে দেখেছে যে, মানুষের যখন REM sleep বা কক্ষিগোলক দ্রুত সঞ্চালন করে তখন স্বপ্ন দেকে। আর এসময় সেরোটোনিন এর পরিমাণ খুবই কম থাকে। যার কারনে আমরা স্বপ্ন ভুলে যাই। আর সেরোটোনিন এর পরিমাণ মোটামোটি থাকলে স্বপ্নটা মনে থাকতে পারে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

অনেকগুলো নিউরন কোষের সমন্বয়ে তৈরি হয় মানুষের মস্তিষ্ক। নিউরন কোষগুলো সংকেত প্রেরণ করে বিদ্যুত- তরঙ্গের মাধ্যমে । জেগে থাকা, আধঘুম -আধজাগরণ, গভীর ঘুম, উত্তেজিত ইত্যাদি অবস্থায় মস্তিষ্কের বিদ্যুত তরঙ্গের বিভিন্ন রকমফের দেখা যায়। মস্তিষ্ক সাধারণত চার ধরনের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ তৈরি করে – ডেল্টা, থেটা, আলফা ও বেটা। মানুষ ঘুমের একটা বিশেষ পর্যায়ে স্বপ্ন দেখে। ঘুমের একটা পর্যায় দেখা যায় মানুষের চোখের পাতা নড়ছে। এই পর্যায়কে বলে Rapid Eye Movement বা রেম ঘুম।এই রে ঘুমের সময় মস্তিষ্কের বিদ্যুতিয় তরঙ্গের কারণে ই মানুষ স্বপ্ন দ্যাখে। আদিমকালে মানুষ ভাবতো ঘুমের মধ্যে মানুষের আত্মা দেহ থেকে বের হয়ে আসে। তারপর ঘুরে বেড়ায় চারপাশের জগতে। তাই মানুষ স্বপ্ন দেখে। প্রাচীন গ্রীক-রোমানরা ভাবতো স্বপ্ন বিশ্লেষণ করলে হয়তো ভবিষ্যত সম্পর্কে জানা যাবে। শুধু গ্রীক- রোমানরাই নয়, প্রতিটি সভ্যতাই স্বপ্নের বিভিন্ন ব্যাখ্য দেয়ার চেষ্টা করতো। অবশ্য স্বপ্নের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয় জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে হয়েছে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত। এই শতাব্দীতে সিগমুন্ড ফ্রয়েড এবং কার্ল জাঙ প্রথম স্বপ্নের উপর বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নির্মান করেন। ফ্রয়েডের মতে, প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কিছু অবদমিত কামনা থাকে। স্বপ্নের মাধ্যমে আমাদের অবচেতন মন সেই অবদমিত কামনা নিয়ে নাড়াচাড় করে। ফ্রয়েডেরই ছাত্র কার্ জাঙ মনে করেন স্বপ্নের মনস্তাত্ত্বিক গুরুত্ব আছে। অবশ্ তিনি স্বপ্নের অর্থ সম্পর্কে ভিন্ন তত্ত্বের অবতারণা করেছিলেন।ফ্রয়েডের পরবর্তী সময়ে প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে স্বপ্ন নিয়ে অন্যান্য তত্ত্বও গড়ে ওঠে।“এক্টিভেশন- সিন্থেসিস” একটি তত্ত্ব বল যে স্বপ্নের আসলে কোন অর্থ নেই। ঘুমের সময় মস্তিষ্কে বিদ্যুৎ প্রবাহের কারণে আমাদের স্মৃতি থেকে বিভিন্ন চিন্তা এবং আবেগ উঠে আসে। এই চিন্তা এবং আবেগগুলো খাপছাড়া। অর্থাৎ এদের মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের মতে, স্বপ্নের কোন অর্থ থাকুক বা না থাকুক, জীবনধারণের জন্য স্বপ্নের একটি বিশেষ তাৎপর্য আছে। “থ্রেট স্টিমুলেশন”- তত্ত্ব অনুযায়ী জীবজগতে স্বপ্ন একটি প্রাচীন প্রতিরক্ষা পদ্ধতি।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ