শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

কোনো বিষয়ে আল্লাহর নামে কসম করলে সেই কসমের বিধানঃ

আল্লাহ তাআলার নাম ও সিফাতের শপথ করা এটি চার প্রকার।

১। শপথের ইচ্ছা ব্যতীত এমনিতেই لا والله (না, আল্লাহর কসম) بلى والله (হ্যাঁ, আল্লাহর কসম) মুখে উচ্চারণ করা।এ প্রকারের কসম নিরর্থক। এর কারণে কোন কিছু লাযিম হয় না।

তবে আল্লাহর মহত্ত্বের প্রতি লক্ষ্য করে এ থেকেও পরহেয করা উচিৎ। ইরশাদ হচ্ছে : আল্লাহ তাআলা কসমের ক্ষেত্রে নিরর্থক কসমের জন্য তোমাদের পাকড়াও করবেন না কিন্তু তিনি তোমাদেরকে ঐ কসমসমুহের জন্যে পাকড়াও করবেন যে গুলোকে তোমরা দৃঢ় কর। (সুরা মায়েদাহ : ৮৯)।

২। অতীতকালীন কোন বিষয়ের ব্যাপারে সত্য মনে করে কসম করা। পরে দেখা গেল বিষয়টি উল্টো। এটি নিরর্থক।

৩। অতীতের কোন বিষয়ে জেনে শুনে মিথ্যা কসম করা। এটি সম্পূর্ণ হারাম। এটিকে يمين غموس বলা হয়। এ ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এটি কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।

এ কসমের কোন কাফফারা নেই। এটি এমন অপরাধ যা তওবা ব্যতীত শুধুমাত্র কাফফারার মাধ্যমে মিটে যায় না। যে ব্যক্তি এমন করবে, তাকে তওবা করতে হবে।

৪। ভবিষ্যতের কোন সম্ভাব্য বিষয়ে ইচ্ছকৃতভাবে শপথ করা। একে يمين منعقدة বলা হয়। এ ধরণের শপথের ক্ষেত্রেই কাফফারা ওয়াজিব হয়। তবে তিনটি শর্ত সাপেক্ষে:

১। শপথকারী মুসলমান, বালেগ ও বিবেকসম্পন্ন হওয়া।

২। নিজ ইচ্ছায় কসম করা। অতএব, বাধ্য হয়ে কসম করলে কাফফারা দিতে হবে না।

৩। ইচ্ছা করে কসম ভঙ্গ করা। অতএব, বাধ্য হয়ে অথবা ভুলক্রমে কসম ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। উল্লেখিত তিনটি শর্ত পাওয়া গেলে কাফফারা ওয়াজিব হবে।

শপথ ভঙ্গের বিধান যে ব্যাপারে কসম করা হয়, সেটির উপর ভিত্তি করে কসম ভঙ্গের হুকুমও বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে।

১। কসম ভঙ্গ করা ওয়াজিব: যেমন কোন ব্যক্তি ওয়াজিব ছেড়ে দেয়া অথবা হারাম কাজ করার শপথ করলে তা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। এমতাবস্থায় সে ব্যক্তি শপথ ভঙ্গ করে ওয়াজিব পালন করবে এবং হারাম কাজ থেকে ফিরে থাকবে। এবং কসমের কাফফারা আদায় করবে।

২। কসম ভঙ্গ করা মুস্তাহাব: যখন কোন একটি মুস্তাহাব ছেড়ে দেয়ার অথবা মাকরূহ কাজ করার কসম করে, তখন কসম ভঙ্গ করে কাফফারা আদায় করা মুস্তাহাব। ল আর কসমের কাফফারা আদায় করা।

৩। কসম ভঙ্গ করা হারাম: কোন ওয়াজিব পালন করা অথবা হারাম ছেড়ে দেয়ার কসম করলে এমতাবস্থায় কসম ভঙ্গ করা হারাম।

৪। কসম ভঙ্গ করা জায়েয: কোন একটি জায়েয কাজ করা অথবা ছেড়ে দেয়ার কসম করলে এমন কসম ভঙ্গ করা জায়েয।

সর্বক্ষেত্রে নিজের জন্যে যেটা কল্যাণকর তা-ই করা উচিৎ। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : তুমি কোন বিষয়ে কসম করার পর যদি দেখ অন্যটি আরো উত্তম তখন কসম ভঙ্গ করে ভাল কাজটি করে নিবে। (বুখারীঃ ৬১৩২)।

আল্লাহ্‌ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ ও দয়ার ফলে কসমের কাফফারা নির্ধারিত হয়েছে। যার ফলে কসম করে যে কাজটি না করার কথা ছিল তা করা বৈধ হয় এবং যা করার কথা ছিল তা না করা জায়েয হয়।

কসমের কাফফারা নিম্নরূপ :

(১) দশজন মিসকীনকে খানা খাওয়ানো। প্রত্যেককে অর্ধ সা চাউল ইত্যাদি দেবে।

(২) দশজন মিসকীনকে সালাত আদায় করতে পারে এতটুকু পোশাক দেয়া।

(৩) ত্রুটিমুক্ত একজন মুমিন দাস মুক্ত করে দেয়া।

কাফফারা আদায়কারী তিনটির যে কোন একটি বেছে নিবে। যদি উল্লেখিত কোন একটি না পায় তাহলে একাধারে তিন দিন রোযা রাখবে।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ