শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

ঈদের নামাজ ২ রাকাত । ২ রাকাত নামাজে সাধারনত ৬টি তাকবির লাগে কিন্তু ঈদের নামাজে অতিরক্ত ৬টি তাকবির দিতে হয় তাই ঈদের নামাজে মোট ১২ তাকবিরে হয় ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

সহীহ হাদীস অনুযায়ী ঈদের নামায সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এবং তা ১২ তাকবীরে। সিহাহ সিত্তার ৬টি হাদীস গ্রন্থের মধ্যে বুখারী, মুসলিম ও নাসাঈতে ঈদের তাকবীর সম্পর্কে কোন হাদীস পাওয়া যায় না। অবশিষ্ট ৩টি গ্রন্থ, অর্থাৎ আবু দাঊদ, ইবনে মাজাহ ও তিরমিযীতে যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে নবী করিম (সাঃ) প্রথম রাকাতে ৭ ও দ্বিতীয় রাকাতে ৫ এই ১২ তাকবীরে ঈদের নামাজ পড়েছেন। মুসাদ্দাদ (রহঃ) আমর ইবনুল আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈদুল ফিতরের প্রথম রাকাতে সাত তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকাতে পাঁচ তাকবীর এবং উভয় রাকাতে তাকবীরের পরেই কিরাআত পড়তে হয়। সূনান আবু দাউদ ইফাঃ হাদিস নম্বরঃ- ১১৫১ হাদিসের মানঃ হাসান।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

সহীহ হাদীস অনুসারে ঈদের নামায ছয় তাকবীরে আদায় করতে হয়। উদাহরণ স্বরূপ কয়েকটি হাদীস নিম্নে পেশ করছি। ১নং হাদীস: ﺃﻥ ﺍﻟﻘﺎﺳﻢ ﺍﺑﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺣﺪﺛﻪ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﺑﻌﺾ ﺍﺻﺤﺎﺏ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﺻﻠﻲ ﺑﻨﺎ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻮﻡ ﻋﻴﺪ ﻓﻜﺒﺮ ﺍﺭﺑﻌﺎً ﻭﺍﺭﺑﻌﺎً ﺛﻢ ﺍﻗﺒﻞ ﻋﻠﻴﻨﺎ ﺑﻮﺟﻬﻪ ﺣﻴﻦ ﺍﻧﺼﺮﻑ ﻓﻘﺎﻝ ﻻ ﺗﻨﺴﻮﺍ ﻛﺘﻜﺒﻴﺮ ﺍﻟﺠﻨﺎﺋﺰ ﻭﺍﺷﺎﺭ ﺑﺎﺻﺎﺑﻌﻪ ﻭﻗﺒﺾ ﺍﺑﻬﺎﻣﻪ ـ ﻓﻬﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺣﺴﻦ ﺍﻻﺳﻨﺎﺩ ـ নির্ভরযোগ্য হাদীসগ্রন্থ তাহাবী শরীফের বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে যে, আবু আব্দুর রহমান বলেন, আমাকে কতিপয় সাহাবা রাযি. বলেছেন যে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের নিয়ে ঈদের নামায পড়ে ছিলেন। তাতে তিনি চার চার তাকবীর বলেন। অত:পর নামায শেষে হুযুর (সা.) আমাদের কে লক্ষ্য করে বললেন, ভুলে যেও না, ঈদের নামাযের তাকবীর জানাযার নামাযের তাকবীরের অনুরূপ। সাথে সাথে হুযুর (সা.) বৃদ্ধাঙ্গুলী মুষ্ঠিবদ্ধ করে অবশিষ্ট চার আঙ্গুল দ্বারা ইঙ্গিত করে দেখালেন (তাহাবী শরীফ, ২/৪০০পৃ । বর্ণিত হাদীসের সনদকে ইমাম তাহাবী রহ. হাসান বলেছেন। আর হাসান হাদীস গ্রহণযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে সহীহ হাদীসের মত (তাদরীবুর রাবী, ১/৯৬ পৃ । বর্ণিত হাদীসে দু’ রাকাতে চার চার তাকবীর বলা হয়েছে। এদ্বারা বুঝা যায় মোট আট তাকবীর। যথা: প্রথম রাকাতে তাকবীরে তাহরীমা সহ চার তাকবীর আর দ্বিতীয় রাকাতে রুকুর তাকবীর সহ চার তাকবীর। অর্থাৎ দুটি আসল ৬টি অতিরিক্ত বলা যেতে পারে। ২নং হাদীস: ﺃﻥ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺎﺹ ﺳﺄﻝ ﺃﺑﺎ ﻣﻮﺳﻲ ﺍﻻﺷﻌﺮﻱ ﻭﺣﺬﻳﻔﺔ ﺑﻦ ﺍﻟﻴﻤﺎﻥ ﻛﻴﻒ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻜﺒﺮ ﻓﻲ ﺍﻻﺿﺤﻲ ﻭﺍﻟﻔﻄﺮ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺑﻮ ﻣﻮﺳﻲ ﻛﺎﻥ ﻳﻜﺒﺮ ﺍﺭﺑﻌﺎ ﺗﻜﺒﻴﺮﺓ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﺠﻨﺎﺋﺰ ﻓﻘﺎﻝ ﺣﺬﻳﻔﺔ ﺻﺪﻕ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺑﻮ ﻣﻮﺳﻲ ﻛﺬﻟﻚ ﻛﻨﺖ ﺍﻛﺒﺮ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﺼﺮﺓ ـ বিশুদ্ধ হাদীসগ্রন্থ আবু দাউদ শরীফের এ হাদীসে বলা হয়েছে যে, সাঈদ ইবনে আস রাযি. একদা আবু মূসা আশয়ারী ও হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান রাযি. কে জিজ্ঞাসা করলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাযে কিভাবে তাকবীর বলতেন? জবাবে আবু মূসা রাযি. বললেন জানাযার নামাযের মত প্রতি রাকাতে চার চার তাকবীর বলতেন। হুযায়ফা রাযি. সমর্থন করে বললেন আবু মূসা সত্য বলেছে। আবু মূসা রাযি. বললেন আমিও বসরা দেশে এভাবেই তাকবীর বলতাম (আবু দাউদ, ১/১৬৩ পৃ:; মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, ৪/২১৩ পৃ । উভয় হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদের নামাযের তাকবীর প্রতি রাকাতে চার চার করে সর্ব মোট আট বলেছেন। অর্থাৎ দু’টি আসল ৬টি অতিরিক্ত। প্রশ্ন হতে পারে, হাদীসে তো তাকবীরে তাহরীমা ও রুকুর তাকবীরের কথা উল্লেখ নেই? তার জবাবে বলতে চাই যে, হুযুর (সা.) ঈদের তাকবীরকে জানাযার তাকবীরের সাথে তুলনা করেছেন। তা থেকে বুঝা যায় যে, যেমন জানাযার ৪ তাকবীরের মধ্যে প্রথম তাকবীরে তাহরীমা অপর ৩টি অতিরিক্ত তদ্রুপ ঈদের নামারের চার চার তাকবীরের মধ্যে ও একটি আসল অপর ৩টি অতিরিক্ত। এটা কোন মনগড়া ব্যাখ্যা নয় বরং বহু মাওকুফ হাদীস দ্বারা প্রমানিত সত্য। একথা বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে, হাদীসে মাওকুফ যদি ইজতেহাদী বিষয় না হয় এবং কুরআনের কোন আয়াত বা হাদীসে মারফুর সাথে সাংঘর্ষিক না হয় তখন হাদীসে মারফুর মত শরীয়তের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ যোগ্য হবে (জফরুল আমানী, ১/১৯০ পৃ । ২নং হাদীসের সনদের তাহকীক: বার তাকবীর সমার্থকগণ আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত হাদীসের সনদকে যয়ীফ বলতে চায়। কারণ উক্ত সনদে একজন রাবী হলেন আবু আয়শা তিনি মাজহুল। তাদের এই দাবী সঠিক নয়, কারণ আবু আয়শা হতে দু’ জন বর্ণনাকারী পাওয়া যায় একজন মাকহুল দ্বিতীয়জন খালিদ ইবনে মা’দান (তাহযীবুত তাহযীব, ১২/১৪৬ পৃ । আর রিজাল শান্ত্রের উসূল হল, যে রাবীর দু’জন ছেকাহ ছাত্র থাকবে সে কখনে মাজহুল থাকে না (মুকাদ্দামায়ে ইবনে সালাহ, ৯০ পৃ:; তাদরীবুর বাবী, ১/২২০ পৃ । হাফেজ আসকালানী রহ. আবু আয়শা কে মাকবুল বলেছেন, অতএব তার হাদীস গ্রহণযোগ্য হবে (তাকরীবুত তাহযীব, ১/৪২৬ পৃ । এ ছিল ৬ তাকবীরের সাথে ঈদের নামাযের সমর্থনে মারফু হাদীসের আলোচনা। এবার দেখা যাক, ৬ তাকবীরের সাথে ঈদের নামাযের প্রসঙ্গে হাদীসে মাওকুফ বা সাহাবায়ে কেরামের আমল কি ছিল? ﺃﻥ ﺇﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﺭﺿـ ﻛﺎﻥ ﻳﻜﺒﺮ ﻓﻲ ﺍﻟﻌﻴﺪﻳﻦ ﺗﺴﻌﺎ ﺍﺭﺑﻊ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻘﺮﺃﺓ ﺛﻢ ﻳﻜﺒﺮ ﻓﻴﺮﻛﻊ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻧﻴﺔ ﻳﻘﺮﺃ ﻓﺎﺫﺍ ﻓﺮﻍ ﻛﺒﺮ ﺍﺭﺑﻌﺎً ﺛﻢ ﺭﻛﻊ ـ আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) থেকে ঈদের নামাযের নিয়ম প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি ঈদের নামাযে ৯টি তাকবীর বলতেন। ৪টি কেরাতের পূর্বে। অর্থাৎ তাকবীরে তাহরীমা সহ ৪টি। অত:পর কেরাত পড়ে তাকবীর বলে রুকু করতেন। দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের পর ৪টি তাকবীর বলতেন এবং চতুর্থ তাকবীরের সাথে রুকু করতেন (তিরমিজী শরীফ, ১/১২০ পৃ:; ই’লাউস সুনান, ৮/১০৬ পৃ:; তাহাবী শরীফ, রায়াহ, ২/৪০১ পৃ: মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ৪/২১৬পৃ. নাসবুর রায়াহ, ২/২২২ পৃ.)। আল্লামা হাফেজ ইবনে হাযম জাহেরী (রহ.) এ হাদীসটি উল্লেখ করে বলেন যে, এটি অতীব সঠিক এবং এটিই ইমাম আবু হানিফা রহ. এর অভিমত (আল-মুহাল্লা, ৫/৮৩ পৃ । অনুরূপ হাফেজে হাদীস আল্লামা ইবনে হাযার আসকালানী রহ. বলেন যে, এ হাদিসটি হাফেজ আব্দুর রাজ্জাক সহীহ সনদে বর্ননা করেছেন (আদদিরায়াহ, ১/ ১৭৩ পৃ । ছয় তাকবীরের সাথে ঈদের নামাযের এই নিয়মটি হযরত ইবনে মাসউদ ব্যতীত হযরত ওমর, হুযায়ফ, আবু মূসা আশয়ারী, আনাস, জাবির, আবু মাসউদ আনসারী, ইবনে আব্বাস ও আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রাযি.) প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম থেকেও বর্ণিত আছে (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ৪/২১৪-২১৯ পৃ:; তাহাবী শরীফ, ২/৪০০ পৃ ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ