আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আমাদের বাসভূমি মানে হিন্দুস্থানের যুদ্ধ সম্পর্কে যে ভবিষ্যৎবাণী করে গিয়েছেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। অনুগ্রহপূর্বক যারা উত্তর দিবেন তারা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যাসহ বলবেন। 
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

আপনি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ নামে একটা বই আছে সেটা পড়তে পারেন।বাংলাবাজার বইটি পাবেন

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
AhammadMusa

Call


"কেমন হতে পারে গাজওয়াতুল হিন্দ; কি করব আমি?" [১ম পর্ব]

বিতাড়িত শয়তানের অনিষ্ট থেকে আশ্রয়দাতা প্রতিপালক আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। দয়াময় মহামহিম আল্লাহর নামে শুরু করছি। দুরুদ ও সালাম মুহাম্মাদ আরাবি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সত্যনিষ্ট অনুসারীদের ওপর।

গাজওয়াতুল হিন্দ। হিন্দুস্থানের গাজওয়া বা যুদ্ধ-জিহাদ। নামটি হাদীসের ভাষা থেকে নেয়া। হিন্দুস্থান অর্থাৎ ভারতীয় উপমহাদেশ। ভারতীয় উপমহাদেশের এই চূড়ান্ত যুদ্ধকে রাসূল (সল্লাল্লাহু আ'লাইহি) নামকরণ করেছেন "গাজওয়াতুল হিন্দ"। 
ইসলামের যুদ্ধকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। 
১) গাজওয়া
২) শিকওয়া বা সারিয়া( দুটিকে এক হিসেবে ধরা হয়েছে)

যে যুদ্ধ-জিহাদে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) নিজে অংশগ্রহণ করেছেন তাকে গাজওয়া বলে।
এবং যে যুদ্ধ-অভিযানে তিনি (সল্লাল্লাহু আলাইহি) অংশগ্রহণ করেননি তাকে ক্ষেত্র বিশেষে শিকওয়া বা সারিয়া বলে।

সুতরাং গাজওয়া রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) এর জন্যে খাস ও একটি বিশেষ পরিভাষা। যুদ্ধ-জিহাদের এক বিশেষ মাক্বাম।

রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) ভারত অভিযান ও বিজয়ের সুসংবাদ দিয়েছেন। এটি ছিল একটি ভবিষ্যদ্বাণী। আর এই অভিযান-যুদ্ধ যখন হবে তখন তিনি দুনিয়াতে থাকবেন না তিনি জানতেন। সুতরাং এই যুদ্ধ শিকওয়া হওয়ার কথা। অথচ তিনি এই যুদ্ধের নাম দিয়েছেন গাজওয়া- 'এমন যুদ্ধ যে যুদ্ধে স্বয়ং নবীজি উপস্থিত থাকেন।' এটি একটি সম্ভাষণ, গুরুত্ত্বের প্রাধান্য ও মর্যাদার মূল্যায়ন। এ যুদ্ধ যেন এমন - যারা এই যুদ্ধে শরীক হবে তারা যেন নিজেদের সাথে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) পেল। সুবহানাল্লাহ!
যুদ্ধটির নাম গাজওয়া হওয়ার সম্ভাব্য আরো কারণ থাকতে পারে। যেমন এটি মুশরিক/মালাউনদের সাথে মুসলিমদের চূড়ান্ত যুদ্ধ। যুদ্ধের প্রচন্ডতা, পরিবেশ, মুসলিম ও মুশরিকদের বৈষম্যমূলক অবস্থান, ঈমানদারদের স্বল্পতা, কঠিন পরীক্ষা, চূড়ান্ত বিজয় সহ ভারতীয় উপমহাদেশকে সার্বিকভাবে শিরকের মূলোৎপাটনের মাধ্যমে দারুল ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করার কারণেও হতে পারে।

একটি হাদীসে এসেছে- "হযরত সাওবান (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) কে বলতে শুনেছেন যে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন) এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) কে শামে (সিরিয়া) পাবে।”

সুতরাং "গাজওয়াতুল হিন্দ" হল ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের ভারতের মালাউনদের বিপক্ষে চূড়ান্ত ভবিতব্য যুদ্ধ যেখানে মুসলিমরা বিজয়ী হবে।

চলবে.......ইনশা আল্লাহ

"কেমন হতে পারে গাজওয়াতুল হিন্দ; কি করব আমি?"[২য় পর্ব]

হাদীসে বর্ণীত 'হিন্দ/হিন্দুস্থান' হল অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশ যা গ্রেটার খোরাসানের কিছু অংশ, পাকিস্থান, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা নিয়ে গঠিত।
এই যুদ্ধটি হবে মুসলমানদের সাথে মুশরিক মূর্তিপূজারি হিন্দুদের যুদ্ধ। মূলত আমরা যাদের হিন্দু বলে জানি- তারা হিন্দু নয় এবং তাদের ধর্মের নামও হিন্দু নয়। তাদের ধর্মের নাম হল সনাতন ধর্ম এবং আজকের হিন্দুরা হল ধর্ম পরিচয়ে সনাতনি। 
আর হিন্দুস্তানের অধিবাসি হিসেবে সবাই হিন্দুস্তানি বা হিন্দু যেমন বাংলাদেশের/বঙ্গের অধিবাসি হিসেবে বাংলাদেশি/বঙ্গীয়। সুতরাং সে হিসেবে আমরা সবাই হিন্দু। আমরা হিন্দের অধিবাসি।

হিন্দুস্তানের এই ভবিতব্য যুদ্ধটি সম্পর্কে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) তার পবিত্র জবান থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আমরা সেই যুদ্ধের রুপরেখা বা কেমন হতে পারে সেই যুদ্ধ- তা আলোচনার পুর্বে একটু কয়েকখানা হাদীস দেখে নেই।

১) আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
“আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব”।
(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)

২) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন,
“অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে । এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন)। এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম(আঃ) কে শাম দেশে(বর্তমান সিরিয়ায়) পাবে”।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,
“আমি যদি সেই গাযওয়া পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা (আঃ) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত । ও মুহাম্মাদ (সাঃ) ! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আঃ) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর একজন সাহাবী”।
বর্ণনাকারী বলেন যে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মুচকি হাসলেন এবং বললেনঃ ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন’।
(আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯)

৩) হযরত সাফওয়ান বিন উমরু (রাঃ)
তিনি বলেন কিছু লোক তাকে বলেছেন যে রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ
“আমার উম্মাহর একদল লোক হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ তাদের সফলতা দান করবেন, এমনকি তারা হিন্দুস্তানের রাজাদেরকে শিকলবদ্ধ অবস্থায় পাবে। আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন। যখন তারা সিরিয়া ফিরে যাবে, তখন তারা ঈসা ইবনে মারিয়ামকে (আঃ) এর সাক্ষাত লাভ করবে”।
(আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪১০)

হাদীসগুলো খুবই স্পষ্ট। হিন্দুস্থানের অধিবাসিদের জন্যে শিহরণ জাগানিয়া যে - রাসূলে আরাবি (সল্লাল্লাহু আলাইহি) আমাদের নিয়ে আলোচনা করেছেন, আমাদের হিন্দের নাম হাদীসে এসেছে এবং আমাদের বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 
এই যুদ্ধের মর্যাদা ও গুরুত্ত্ব অনুধাবন করে আবু হুরায়রা (রাঃ) কি বলেছেন?
তিনি আকাঙ্ক্ষা করে বলেছেন- " আমি যদি সেই গাযওয়া(গাজওয়াতুল হিন্দ) পেতাম, তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম । যখন আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম, তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম; যে কিনা সিরিয়ায় হযরত ঈসা (আঃ) কে পাবার গর্ব নিয়ে ফিরত । ও মুহাম্মাদ (সাঃ) ! সেটা আমার গভীর ইচ্ছা যে আমি ঈসা (আঃ) এর এত নিকটবর্তী হতে পারতাম, আমি তাকে বলতে পারতাম যে আমি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর একজন সাহাবী”।
বর্ণনাকারী বলেন যে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মুচকি হাসলেন এবং বললেনঃ ‘খুব কঠিন, খুব কঠিন’।
(আল ফিতান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০৯)
এই হাদীস থেকে বুঝা যায় যারা এই যুদ্ধে ইসলামের পক্ষে অংশগ্রহণ করবে তারা বিজয়ী হলে জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে যাবে এবং মৃত্যুবরণ করলে শ্রেষ্ঠ শহীদ হবে 
এই যুদ্ধের মুজাহিদীনদের প্রতি আল্লাহর করুণা ও মাগফিরাতের নমুনা বর্ণনা করতে গিয়ে নবীজি ঈসা (আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) এর বাহিনীর সাথে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন-
“আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে’।
(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)

সুতরাং এই যুদ্ধ একটি সুনির্ধারিত, সুনির্দিষ্ট, ও প্রতিশ্রুত চূড়ান্ত যুদ্ধ। ভারতের স

কল যুদ্ধই যেহেতু আম ভাবে গাজওয়াতুল হিন্দ তাই অনেকেই বলে গাজওয়াতুল হয়ে গেছে। অনেকে মুহাম্মাদ বিন কাসিমের সিন্ধু(ভারত) বিজয়ের অভিযানকেও গাজওয়াতুল হিন্দ বলে থাকেন।
এ ক্ষেত্রে তারা চরম। ভ্রান্তির শিকার। হ্যা,হিন্দুস্তানের সকল যুদ্ধই সাধারণভাবে গাজওয়াতুল হিন্দ(হিন্দের যুদ্ধ)। কিন্তু আমাদের আলোচিত গাজওয়াতুল হিন্দ খা'স ও পারিভাষিকভাবেই এটি আলাদা ও স্বতন্ত্র। এবং এটি অদ্যাবধি সংগঠিত হয়নি ।
প্রথমতঃ সমস্থ ভারতীয় উপমহাদেশ নিয়ে কখনোই একযুগে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি। এবং ভারতে কখনোই নিরঙ্কুশভাবে ইসলাম বিজয়ী হয়নি ও হিন্দত্ববাদও মিটে যায়নি।

দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে সমস্ত দুনিয়ার প্রতিটি কাঁচা-পাকা ঘরে ইসলাম পৌঁছাবে। এবং ইমাম মাহদী ও ঈসা (আলাইহিমুস সালাম) সমগ্র দুনিয়া বিজয় করবেন। সে হিসেবে ভারতীয় উপনহাদেশের প্রতিটি ঘরে তাওহীদের কালেমা পৌঁছাবে। হিন্দুরা পরাজিত হবে। কিন্তু ভারতে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ হল হিন্দুরা। কিন্তু সনাতনিদের ক্রমবর্ধমান হিন্দুত্ববাদের প্রতিষ্ঠা, বর্ধিষ্ণু গোঁড়ামিপূর্ণ পৌত্তলিকতা, ইসলাম বিদ্বেষভাব, মুসলিমদের উৎখাত, ভারত শুধুই হিন্দুত্ববাদের ভূমি এসব চিন্তাধারার প্রতিষ্ঠা এবং হাজার বছরের দ্বেষ, ক্রোধ, প্রতিশোধপরায়ণতা ক্রমেই হিন্দুবাদীদের ইসলামের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। এবং একটি সমূহ যুদ্ধের সূত্রপাত দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। এবং এসব হিন্দুদের ফায়সালার জন্যেও একটি যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে আছে । তাই হিন্দু-মুসলিমের এই পরস্পরবিরোধী স্রোতের সমাধানের জন্যে একটি যুদ্ধ হবে এবং তাই হবে ইনশা আল্লাহ "গাজওয়াতুল হিন্দ"।

তৃতীয়তঃ হাদীসে দুইটি দলের জন্যে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের সুসংবাদ এসেছেন। ১) শামের মুজাহিদীন ২) হিন্দুস্থান অভিযানকারী। 
"আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে’।
(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
এখানে একই হাদীসে শামের সাথে হিন্দুস্থানের যুদ্ধাদের আলোচনা থাকার কারণেও উভয় যুদ্ধটি সমসাময়িক হওয়ার সম্ভাব্যতা থাকে। 
চথুর্থতঃ আমাদের এই দলীলটি এতই স্পষ্ট ও সন্দেহাতীত এবং এর পরে আর কোন কিছুই লাগেনা। 
হাদীসে এসেছে যে- "গাজওয়াতুল হিন্দের যুদ্ধারা যুদ্ধ বিজয় করে হিন্দু রাজাদের বন্দী করে শামে(সিরিয়ায়) যাবে, এবং সেখানে পৌঁছে ঈসা (আঃ) পেয়ে যাবেন!
সুবহানাল্লাহ! তাহলে এটি হবে ঈসা (আঃ) এর সমসাময়িক। তখন শামে ঈসা (আঃ) আগমন করবেন ও যুদ্ধরত থাকবেন। আর ঈসা(আঃ) এর কয়েক বছর আগে যেহেতু ঈমাম মাহদী আসবেন। আর হিন্দের যোদ্ধারাও যুদ্ধ বিজয়ের পর অর্থাৎ বেশ কয়েক বছর যুদ্ধ করে বিজয়ী হবে তাই এ ব্যাপারে সংশয় থাকে না গাজওয়াতুল হিন্দের সময় শামে ঈমাম মাহদী থাকবেন। আর ঈমাম মাহদী হবে সম্মিলিত নেতা এবং মুসলিম উম্মাহ তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবে, তাই তিনি ঐ সময়ের সব ফ্রন্টেরই নেতৃত্ব দিবেন। ব্যতীক্রম হবে হিন্দের ক্ষেত্রেও! 
শাহ নিয়ামতুল্লাহ ৮০০ বছর আগে তার ক্বাসীদায়ও হিন্দকে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এনেছেন এবং মুসলিমদের নেতা মোনাফিক্ব হবে বলেছেন। সেই মোনাফিক্ব নেতা ভারতের সাথে পাপচুক্তি করবে। এবং তার নামের প্রথম অক্ষর হবে 'শ' এবং শেষ অক্ষর হবে 'ন'। 
অতএব "গাজওয়াতুল হিন্দ" হয়নি। তবে শীঘ্রয় হবে ইনশা আল্লাহ।

আমরা আমাদের মূল আলোচনায় প্রবেশ করছি এখন


গাজওয়াতুল হিন্দের মূল্যায়নঃ
পরিতাপের বিষয় এই সমস্ত তাওহীদপন্থী মুসলিম, মুজাহীদিনদের অধিকাংশই আবার গাজওয়াতুল হিন্দ নিয়ে আছে কল্পনায়, অজ্ঞতায়। অধিকাংশই জানে না কেমন হবে গাজওয়াতুল হিন্দ। কারা কারা অংশ নিবে এই যুদ্ধে। কে কেন অংশ নিবে! কিভাবে প্রস্তুত করবে নিজেকে! কবে? এবং এর বিস্তৃতি ও বিশালতা কত?
অনেকেই মনে করে গোটা কয়েক মুজাহিদীনদের সাথে ভারতের যুদ্ধই গাজওয়াতুল হিন্দ! 
কিন্তু না। বরং এর চেয়েও বেশি ও ভয়ংকর। মূলত গাজওয়াতুল হিন্দে মুজাহিদীনরা একটা ছোট্ট অংশ হিসেবে থাকবে (যদিও যুদ্ধের কলকাটি তাদের হাতেই ন্যস্ত হবে) এবং এই যুদ্ধ ধারণার চেয়ে আরো বিস্তৃত। তাই কেমন হবে গাজওয়াতুল হিন্দ জানতে আমাদের এই আলোচনা। ইনশা আল্লাহ এতে গাজওয়াতুল হিন্দ (ভারতের যুদ্ধ) কেমন হতে পারে ব্যাখ্যা করা হবে। ওয়ামা ত্বাওফিক্বি ইল্লা বিল্লাহ।
ইসলামের যুদ্ধকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। 
১) গাজওয়া
২) শিকওয়া বা সারিয়া(এ দুটিকে এক হিসেবে ধরা হয়েছে) 
যে যুদ্ধ-জিহাদে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) নিজে অংশগ্রহণ করেছেন তাকে গাজওয়া বলে।
এবং যে যুদ্ধ-অভিযানে তিনি (সল্লাল্লাহু আলাইহি) অংশগ্রহণ করেননি তাকে ক্ষেত্র বিশেষে শিকওয়া বা সারিয়া বলে।
সুতরাং গাজওয়া রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) এর জন্যে খাস ও একটি বিশেষ পরিভাষা। যুদ্ধ-জিহাদের এক বিশেষ মাক্বাম।
রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ভারত অভিযান ও বিজয়ের সুসংবাদ দিয়েছেন। এটি ছিল একটি ভবিষ্যদ্বাণী। এটি ছিল একটি মু'জিজা। 
আর এই অভিযান-যুদ্ধ যখন হবে তখন তিনি দুনিয়াতে থাকবেন না তিনি জানতেন। সুতরাং এই যুদ্ধ সারিয়া হওয়ার কথা। অথচ তিনি এই যুদ্ধের নাম দিয়েছেন গাজওয়া- 'এমন যুদ্ধ যে যুদ্ধে স্বয়ং নবীজি উপস্থিত থাকেন।' 
এটি একটি সম্ভাষণ, গুরুত্ত্বের প্রাধান্য ও মর্যাদার মূল্যায়ন। এ যুদ্ধ যেন এমন - যারা এই যুদ্ধে শরীক হবে তারা যেন নিজেদের সাথে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) পেল। সুবহানাল্লাহ!
যুদ্ধটির নাম গাজওয়া হওয়ার সম্ভাব্য আরো কারণ থাকতে পারে। যেমন এটি মুশরিক/মালাউনদের সাথে মুসলিমদের চূড়ান্ত যুদ্ধ। যুদ্ধের প্রচন্ডতা, পরিবেশ, মুসলিম ও মুশরিকদের বৈষম্যমূলক অবস্থান, ঈমানদারদের স্বল্পতা, কঠিন পরীক্ষা, চূড়ান্ত বিজয়সহ ভারতীয় উপমহাদেশকে সার্বিকভাবে শিরকের মূলোৎপাটনের মাধ্যমে দারুল ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করার কারণেও হতে পারে।

একটি হাদীসে এসেছে- "হযরত সাওবান (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু’আনহু) কে বলতে শুনেছেন যে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ ﷺ হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন) এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আলাইহি’ওয়াসাল্লাম) কে শামে (সিরিয়া) পাবে।”

সুতরাং "গাজওয়াতুল হিন্দ" হল ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের ভারতের মালাউনদের বিপক্ষে চূড়ান্ত ভবিতব্য যুদ্ধ যেখানে মুসলিমরা বিজয়ী হবে।

হাদীসে বর্ণীত 'হিন্দ/হিন্দুস্থান' হল অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশ যা গ্রেটার খোরাসানের কিছু অংশ, পাকিস্থান, ভারত, বাংলাদেশ, বার্মা ও শ্রীলঙ্কা নিয়ে গঠিত।
এই যুদ্ধটি হবে মুসলমানদের সাথে মুশরিক মূর্তিপূজারি হিন্দুদের যুদ্ধ। মূলত আমরা যাদের হিন্দু বলে জানি- তারা হিন্দু নয় এবং তাদের ধর্মের নামও হিন্দু নয়। তাদের ধর্মের নাম হল সনাতন ধর্ম এবং আজকের হিন্দুরা হল ধর্ম পরিচয়ে সনাতনি। 
আর হিন্দুস্তানের অধিবাসি হিসেবে সবাই হিন্দুস্তানি বা হিন্দু যেমন বাংলাদেশের/বঙ্গের অধিবাসি হিসেবে বাংলাদেশি/বঙ্গীয়। সুতরাং সে হিসেবে আমরা সবাই হিন্দু। আমরা হিন্দের অধিবাসি।
হিন্দুস্তানের এই ভবিতব্য যুদ্ধটি সম্পর্কে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) তার পবিত্র জবান থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আমরা সেই যুদ্ধের রুপরেখা অথবা কেমন হতে পারে সেই যুদ্ধ- তা আলোচনার পুর্বে কয়েকখানা হাদীস দেখে নেই।
১) আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
“আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হব। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাব”। (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
২) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন,
“অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফন্যেও একটি যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে আছে । তাই হিন্দু-মুসলিমের এই পরস্পরবিরোধী স্রোতের সমাধানের জন্যে একটি যুদ্ধ হবে এবং তাই হবে ইনশা আল্লাহ "গাজওয়াতুল হিন্দ"।
তৃতীয়তঃ হাদীসে দুইটি দলের জন্যে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের সুসংবাদ এসেছেন। ১) শামের মুজাহিদীন ২) হিন্দুস্থান অভিযানকারী। 
"আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা(শামে) ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে’।
(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
এখানে একই হাদীসে শামের সাথে হিন্দুস্থানের যুদ্ধাদের আলোচনা থাকার কারণেও উভয় যুদ্ধটি সমসাময়িক হওয়ার সম্ভাব্যতা থাকে। 
চথুর্থতঃ আমাদের এই দলীলটি এতই স্পষ্ট ও সন্দেহাতীত এবং এর পরে আর কোন কিছুই লাগেনা। 
হাদীসে এসেছে যে- "গাজওয়াতুল হিন্দের যুদ্ধারা যুদ্ধ বিজয় করে হিন্দু রাজাদের বন্দী করে শামে(সিরিয়ায়) যাবে, এবং সেখানে পৌঁছে ঈসা (আঃ) কে পেয়ে যাবেন!
সুবহানাল্লাহ! তাহলে গাজওয়াতুল হিন্দ হবে ঈসা (আঃ) এর সমসাময়িক। ঈমাম মাহদী আসার কয়েক বছর পরে ঈসা আলাইহিস সালাম দুনিয়াতে পুনরায় আসবেন। সুতরাং গাজওয়াতুল হিন্দের সময় শামে ইমাম মাহদীও থাকবে। বিইজনিল্লাহ। আল্লাহু আকবার! 
আর ঈমাম মাহদী হবে সম্মিলিত নেতা এবং মুসলিম উম্মাহ তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবে, তাই তিনি ঐ সময়ের সব ফ্রন্টেরই নেতৃত্ব দিবেন। ব্যতীক্রম হবে না হিন্দের ক্ষেত্রেও! আল্লাহর জন্যে কোন কিছুই অসম্ভব নয়!
তখন শামে দামেশকের কেন্দ্রীয় মসজিদের সাদা মিনারে দুইজন ফিরিশতার কাঁধে ভর করে ঈসা (আঃ) অবতরণ করবেন। অতঃপর যুদ্ধরত থাকবেন! দাজ্জালকে হত্যা করবেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

রাসুলুল্লাহ ( সাঃ) এর প্রতিশ্রুত “ গাযওয়াতুল হিন্দ ” কি অতি নিকটে ??? “গাযওয়াতুল হিন্দ” বলতে ইমাম মাহদি এবং ঈসা (আঃ) এর আগমনের কিছুকাল আগে অথবা সমসাময়িক সময়ে এই পাক-ভারত-বাংলাদেশে মুসলিম ও কাফিরদের মধ্যকার সংগঠিত যুদ্ধকে বুঝায়। “গাযওয়া” অর্থ যুদ্ধ, আর “হিন্দ” বলতে এই উপমহাদেশ তথা পাক-ভারত-বাংলাদেশসহ মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা,নেপাল,ভু টানকে বুঝায়। এবং বর্তমানে এই অঞ্চলের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আমাদেরকে সেই গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহু আ’লাম। একটা বিষয় মাথায় রাখা উচিত আর তা হলো রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর প্রতিটি কথা সত্য এবং গত ১৪০০ বছরের ইতিহাস সেই সাক্ষী বহন করে চলেছে। এবং ইন শা আল্লাহ্কিয়ামত পর্যন্ত সত্য হয়ে যাবেই। এটাই একজন মুসলিমের ঈমানের অন্যতম ভিত্তি যে সে রাসুলুল্লাহ(সঃ) এর সব কথা, ভবিষ্যৎবাণীকে বিনা বাক্যে বিনা দ্বিধায় মেনে নিবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ