বাগদা চিংড়ি চাষ করে
বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে হলে সঠিক চাষ
ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি মেনে চলা আবশ্যক।
নিচে আপনার জন্য সম্ভব্য করণীয়
বিষয়াদি তুলে ধরা হলোঃ
১।উপযুক্ত স্থানে চিংড়ি ঘের বা খামার
নির্বাচন করা।
২।খামারের আয়তন নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে
রাখা (৫-২৫ হেক্টর)।
৩।খামারের প্রধান ভেড়ীবাঁধের উচ্চতা ৪-৬
ফুটের মধ্যে রাখা।
৪।খামারের আয়তন অনুসারে প্রয়োজনীয়
সংখ্যক পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন গেট
নির্মাণ করা।
৫।খামারের অভ্যন্তরে আড়াআড়ি বা
চারধারে ১০-২০ ভাগ এলাকায় ২০-৩০
সেন্টিমিটার গভীরতার জলাধার রাখা।
৬।প্রত্যেকটি খামারে পানি সরবরাহ ও
নিষ্কাশনের জন্য পৃথক জলাধার বা নালা
রাখা যার গভীরতা হতে হবে ৫-৬ ফুট।
৭।খামার প্রস্তুতের পূর্বে খামারের
তলদেশে জমাকৃত পচা দুর্গন্ধযুক্ত জৈব
পদার্থসহ কালো মাটি যতদূর সম্ভব সরিয়ে
ফেলা।
৮।ঘেরে তলদেশ এমনভাবে চাষ করা (৪
ইঞ্চির বেশী গভীর হবে না) যাতে করে
পানি ওঠানোর পর ঘেরের তলদেশ হালকা
কাদাযুক্ত থাকে।
৯।চাষের পরে খামারটি ৭-১০ দিন শুকানো
এবং কষযুক্ত মাটি হলে শুকানোর মাত্রা
কমিয়ে ২-৩ দিন রাখা।
১০।ঘেরের মাটির পিএইচ পরীক্ষা করে সঠিক
পরিমাণে চুন প্রয়োগ করা।
১১।নির্দিষ্ট পরিমাণে সার প্রয়োগ করা।
১২।প্রথম ২-৩ দিন ঘেরে ১০-২০ সেন্টিমিটার
পানি উঠিয়ে অপেক্ষা করা এবং পরে ৭-১০
দিনের মধ্যে ঘেরে ৫০-৭০ সেন্টিমিটার
পানি বৃদ্ধি করা।
১২।প্রাকৃতিক খাদ্যের উপস্থিতির উপর
ভিত্তি করে সঠিক পরিমাণে চিংড়ি
পোনা ঘেরে মজুদ করা।
১৩।চিংড়ি পোনা ছাড়ার এক সপ্তাহের মধ্যে
ঘেরের পানি ৩-৪ ফুট করে এই গভীরতা
চিংড়ি চাষ মৌসুম সময় পর্যন্ত তা ধরে
রাখা।
১৪।নির্ধারিত সংখ্যক সবল ও সুস্থ পোনা স্বল্প
সময়ের ব্যবধানে ঘেরে মজুদ করা।
১৫।উপযুক্ত লবণাক্ততা (১০-২৫ পিপিটি) এবং
অনুকূল তাপমাত্রায় (২৭-৩০ ডিগ্রী সে.)
পোনা মজুদ করা
ঘেরের পানির গুণাগুণ যথা পিএইচ,
তাপমাত্রা, লবণাক্ততা,স্বচ্ছতা এবং
পানির গভীরতা পরীক্ষা করে সে
অনুসারে পানি পরিবর্তন ও সার প্রয়োগ
করা।
১৬।কোনো অবস্থাতেই ঘেরের পানির
গভীরতা ৩ ফুটের নীচে না রাখা।
নদীর পানি সরাসরি ঘেরে প্রবেশ না
করানো এবং প্রয়োজনে ঘের সংলগ্ন
জলাধারের থিতানো পানি ঘেরে সরবরাহ
করা।
১৭।কমপক্ষে প্রতি সপ্তাহে ঘেরের চিংড়ির
স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী
ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৮।রোগ নিরাময়ের জন্য খামারে কোনো
ওষুধপত্র, ভিটামিন বলকারক খাদ্য বা অন্য
কোনো উপকরণ প্রয়োগ না করা।
খামার পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য
একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ করা
কিংবা নিজে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা
বৃদ্ধি করা।
১৯।খামারের চিংড়ি বিক্রির উপযোগী হলেই
তা ধরে বাজারজাত করা।
পরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষের সুফল
পাওয়ার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল চিংড়ি
চাষীকে একতাবদ্ধ হয়ে পরস্পরের মধ্যে
সহযোগিতা ও সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে
চিংড়ি চাষের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা।