নবী কারিম(সাঃ) তাঁর প্রথম স্ত্রী হযরত খাদিজা (রাঃ) কে বিয়ে করেছিলেন যখন খাদিজা (রাঃ) বয়স ছিলো ৪০ বছর

কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় বিবি হযরত আয়েসা (রাঃ) কে বিয়ে করেছিলেন মাত্র ৯ বছর বয়সে

এত কম বয়সে বিয়ে করা তাঁর কি দরকার ছিলো এবং কেন??


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

মুহাম্মদ সাঃ আয়েশা রাঃ কে প্রাথমিক যে তিন কারণের জন্য বিয়ে করেছিলেনঃ  আবু বকর রাঃ সাথের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আত্মীয়তার মজবুত বাঁধনে পর্যবেশিত করে রাখা।  আয়েশা রাঃ ইসলামের বিধি বিধান শিক্ষা এবং তৈরী করা যাতে তিনি ইসলামের বিধি বিধানকে সংরক্ষণ, (বিশেষ করে নারীদের জন্য একান্ত বিষয়াদি) রাসুল সাঃ জীবন ইতিহাস, আল কোরআনের আয়াতের নাজিলের কারণ এবং মানুষকে তাঁর সঠিক শিক্ষাদান করতে পারেন।  উনাকে সে ভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল যাতে তিনি উনার সম্পূর্ণ সক্ষমতাকে ইসলামের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

বৈজ্ঞানিক এবং চিকিৎসাশাস্ত্র মতে বাল্যবিবাহের প্রকৃত সংজ্ঞা হলো, বয়ঃসন্ধিকালীন বয়সে পদার্পণের পূর্বেই বিবাহের সিঁড়িতে আরোহণ করা। সুতরাং ১৮ বছরের পূর্বকালীন বিবাহকে বাল্যবিবাহ নামে অভিহিত করা বৈজ্ঞানিক এবং শরয়ী নীতিমালা অনুসারে যথার্থ নয়। বিবাহের বিষয়টি বস্তুত সাবালকত্বের সাথে সম্পৃক্ত। সাবালকত্ব এমন একটি আবহ যেখানে মানুষ তার নাবালকত্বের পর্যায় পেরিয়ে সাবালকত্বের বয়সে পদার্পণ করে। আর এ সময়টায় মানুষের মাঝে ফিজিয়োলোজিক্যাল (শরীরবৃত্তিক) এবং সাইক্লোজিক্যাল (মনোবৃত্তিক) পরিবর্তন দেখা দেয়। আর সাবালকত্বের বয়স আন্তর্জাতিকভাবে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে ৯ থেকে ১৬ বছরের মাঝে ওঠানামা করে। (ড. হুসামুদ্দীন আফফানা, আয্যিওয়াজুল মুবকির ১/৪) ইসলামের দৃষ্টিতে বাল্যবিবাহের দু’টি অর্থ লক্ষগোচর হয়। (১) সংকীর্ণ অর্থ। অর্থাৎ বালক-বালিকা প্রজননক্ষমতা অর্জনের বয়সে কিংবা বয়ঃসন্ধিকাল বয়সে উপনীত হওয়ার পর থেকে বৈবাহিক বয়সের সূচনা হবে। এটি মূলত সাবালকত্ব ও নাবালকত্বের স্বভাবজাত মানদণ্ড। ইসলাম প্রকৃত নাবালকত্বের সীমারেখার উপর কোনোরূপ নিয়ন্ত্রণ বিধি আরোপ করেনি। একজন বালক কিংবা বালিকা যখন প্রজননক্ষমতা অর্জন করবে তখন থেকেই ইসলাম তার উপর সাবালকত্বের যাবতীয় বিধান আরোপ করবে। (২) মুক্ত অর্থ। অর্থাৎ সূচনা বয়স থেকেই নবজাতকের বৈবাহিক বয়সের ধারা সূচিত হবে। তবে ইসলামী শরীয়া আইনে অপরিপক্ব এবং অনুপযোগী বয়সে যৌন জীবন বিধিসম্মত করা হয়নি। ইসলামী শরীয়তে প্রজননক্ষমতা অর্জন তথা প্রাপ্তবয়সে উপনীত হওয়ার পূর্বে বালক-বালিকার বিবাহ বিধিসম্মত। পবিত্র কুরআনের ভাষ্য, তোমাদের যে সকল স্ত্রীর আর ঋতুমতী হবার আশা নেই তাদের ইদ্দত সম্বন্ধে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যারা এখনো রজঃস্বলা হয়নি তাদেরও (ইদ্দতকাল হবে তিন মাস)। (‘সূরা তালাক’- ৪) কুরআনিক ভাষ্যটিতে ঐসব কিশোরীদের ইদ্দতের কথা আলোচিত হয়েছে যারা এখনো রজঃস্বলা বয়সে উপনীত হয়নি। আর এটা স্বতঃসিদ্ধ কথা, ইদ্দত বিবাহোত্তর ডিভোর্স কিংবা স্বামী মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত একটি বিষয়। এতে সুষ্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়, কুরআনিক আইন মতে বয়ঃসন্ধিকালের পূর্বেকার বিবাহ বিধিসম্মত। হাদীসের ভাষ্য, (১) আয়িশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার যখন ছয় বছর বয়স হয় তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে নেন। আর আমার যখন নয় বছর বয়স হয় তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে বাসর যাপন করেন। (সহীহ বুখারী; হা.নং ৫১৩৪, সহীহ মুসলিম; হা.নং ৩৫৪৫) (২) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদরের কন্যা ফাতেমা রাযি. কে আলী রাযি. এর সাথে অল্প বয়সে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ করেন। (৩) উমর রাযি. আলী রাযি. এর অল্পবয়সী মেয়ে উম্মে কুলসূম রাযি. এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। (৪) যুবাইর ইবনুল আউয়াম রাযি. এর কন্যা যখন প্রাপ্তবয়সে উপনীত হন তখনই কুদামা ইবনে মাযউন রাযি. তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। (আবু হুসাম তারফাবী, আল-উনফ যিদ্দাল মারআহ ১/৪৯) (৫) ইবনে ইসহাক সূত্রে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সালামা রাযি. এর অল্পবয়স্ক ছেলে সালামার সাথে হামযা রাযি. এর ছোট্ট মেয়েকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দিয়েছিলেন। (আহকামুল কুরআন লিলজাসসাস ২/৩৪৪, মাকালাতুন ফিত তাশাইউ ৪৮/৩৬, আলমাবসূত লিস সারাখসী ৪/২১২) এছাড়াও বাল্যবিবাহ সম্বন্ধে সাহাবা তাবিয়ীদের আরো অসংখ্য উক্তি ও কর্মপন্থা- হাদীস, ফিকহ ও ইতিহাসের গ্রন্থগুলোতে বর্ণিত হয়েছে। ইসলামী শরীয়ার সূচনাকাল থেকে অদ্যাবধি উম্মাহর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হলো, অল্পবয়সী শিশু-কিশোরদের বিবাহ বিধিসম্মত। ইমাম আবু বকর জাসসাস রাহ. সূরা নিসার ৩ নম্বর আয়াতের অধীনে (আর যদি তোমরা ভয় করো যে, পিতৃহীন মেয়েদের অধিকার তোমরা যথাযথভাবে আদায় করতে পারবে না তবে সে সব মেয়েদের মধ্য হতে তোমাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি আশঙ্কা করো যে, তাদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না তবে একটিই; অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা বিদ্যমান।) বলেন, এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, পিতার জন্য তার ছোট্ট মেয়েকে বিবাহ প্রদান করা বিধিসম্মত। কারণ এ আয়াত দ্বারা সব রকমের অভিভাবকদের জন্য তাদের অধীনস্ত বালিকাকে বিবাহ দেয়া বিধিত হওয়া প্রমাণিত। তো পিতা নিকটস্থ অভিভাবক হিসেবে এ অধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় বেশি অগ্রগণ্য হবে। উপরন্তু বাল্যবিবাহ বৈধতার ব্যাপারে পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কোনো ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞের ব্যতিক্রম অভিমত আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। (আহকামুল কুরআন লিলজাসসাস ২/৩৪৬) সারকথা আমরা বাল্যবিবাহকে যেভাবে দেখে থাকি ইসলামী শরীয়তে বাল্য বিবাহকে সেভাবে দেখে না। ইসলামে বাল্যবিবাহ বৈধ। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়িশা রা.কে অল্প বয়সে বিবাহ করাতে কোনো সমস্যা মনে করেন নি। তিনি যেটাকে সমস্যা মনে করলেন না আমাদের সেটাকে সমস্যা মনে করা মারাত্মক ধরনের গর্হিত কাজ। আরো বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে যেতে পারেন। http://www.somewhereinblog.net/blog/hafizrahman/30228194

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ