পুরুষ এবং মহিলা দের নামাজের নিয়ম কি একই?? 

সহিহ হাদীস দিয়ে বিস্তারিত বলেন! 


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

মৌলিকভাবে মহিলার নামাজে পুরুষ থেকে চার ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে : ১. তাকবিরে তাহরিমার সময় হাত ওঠানো ২. হাত বাঁধার স্থান ৩. রুকুতে সামান্য ঝোঁকা ৪. সিজদা জড়সড় হয়ে করা ৫. বৈঠকে পার্থক্য। প্রথম পার্থক্য : তাকবিরে তাহরিমার সময় হাত ওঠানো। ১. 'ওয়ায়েল ইবনে হুজুর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এলাম, তিনি আমাকে বললেন : হে ওয়ায়েল ইবনে হুজুর! যখন তুমি নামাজ পড়বে তখন তুমি তোমার হাত কান পর্যন্ত ওঠাবে আর মহিলারা তাদের হাত বুকের ওপর বাঁধবে। হাইসামী (রহ.) বলেন, 'এই হাদিসের সমস্ত রাবী নির্ভরযোগ্য, উম্মে ইয়াহইয়া ব্যতীত। কিন্তু পরবর্তী মুহাদ্দিসগণের নিকট উম্মে ইয়াহইয়াও প্রসিদ্ধ। ২. 'ইমাম যুহরী (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : মহিলারা কাঁধ পর্যন্ত হাত ওঠাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ১/২৭০) দ্বিতীয় পার্থক্য : হাত বাঁধা। ইমাম তহাবী (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : মহিলারা তাদের উভয় হাতকে বুকের ওপর রেখে দেবে, আর এটাই তাদের জন্য যথোপযুক্ত সতর। (আসসিআয়া : ২/১৫৬, ফাতাওয়ায়ে শামী : ১/৫০৪, আল মাবসুত সারাখসী : ১/২৫) তৃতীয় পার্থক্য : রুকুতে কম ঝোঁকা। 'যখন মহিলা রুকুতে যাবে তখন হাতদ্বয় পেটের দিকে উঠিয়ে যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে, আর যখন সিজদা করবে তখন হাতদ্বয় শরীরের সাথে এবং পেট ও সিনাকে রানের সাথে মিলিয়ে দেবে এবং যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে। চতুর্থ পার্থক্য : সিজদা জড়সড় হয়ে করা। 'বিখ্যাত তাবেঈ ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব বলেন, একবার নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামাজরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্যে) বললেন, যখন সিজদা করবে তখন শরীর জমিনের সাথে মিশিয়ে দেবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মতো নয়। ' (কিতাবুল মারাসীল ইমাম আবু দাউদ হা. নং ৮০) আবু দাউদ (রহ.)-এর উক্ত হাদিস সম্পর্কে গায়েবে মুকাল্লিদদের বিখ্যাত আলেম ও মুহাদ্দিস নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান 'আউনুল বারী' ১/৫২০-এ লিখেছেন, এই মুরসাল হাদিসটি সকল ইমামের উসুল ও মূলনীতি অনুযায়ী দলিল হওয়ার যোগ্য। 'হজরত মুজাহিদ ইবনে জাবর (রহ.) পুরুষদের জন্য মহিলাদের মতো ঊরুর সাথে পেট লাগিয়ে সিজদা করাকে অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ১/৩০৩) 'হজরত হাসান বসরী ও কাতাদাহ (রহ.) বলেন, মহিলা যখন সিজদা করবে তখন সে যথাসম্ভব জড়সড় হয়ে থাকবে। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ফাঁকা রেখে সিজদা করবে না, যাতে কোমর উঁচু হয়ে থাকে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ১/৩০৩) পঞ্চম পার্থক্য : বৈঠকের ক্ষেত্রে মহিলাগণ উভয় পা বাঁ পাশ দিয়ে বের করে দিয়ে জমিনের ওপর নিতম্ব রেখে ঊরুর সাথে পেট মিলিয়ে রাখবে। 'হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, মহিলা যখন নামাজের মধ্যে বসবে তখন যেন এক ঊরু (ডান ঊরু) আরেক ঊরুর ওপর রাখে, আর যখন সিজদা করবে তখন যেন পেট ঊরুর সাথে মিলিয়ে রাখে, যা তার সতরের জন্য অধিক উপযুক্ত হয়। (সুনানে কুবরা বাইহাকী : ২/২২৩) 'হজরত খালেদ ইবনে লাজলাজ (রহ.) বলেন, মহিলাদেরকে আদেশ করা হতো তারা যেন নামাজে দুই পা ডান দিক দিয়ে বের করে নিতম্বের ওপর বসে, পুরুষদের মতো না বসে, আবরণীয় কোনো কিছু প্রকাশ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মহিলাদেরকে এমনটি করতে হয়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ১/৩০৩) 'ইবনে আব্বাস (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে মহিলারা কিভাবে নামাজ আদায় করবে? তিনি বললেন, খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামাজ আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ১/৩০২) উপর্যুক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা একটু মনোযোগের সাথে পাঠ করলে একজন ঠাণ্ডা মস্তিষ্কের পাঠক সহজে অনুমান করতে সক্ষম হবেন যে, মহিলাদের নামাজের পার্থক্যের বিষয়টি নবীজি (সা.) এবং সাহাবীদের যুগ থেকেই চলে আসছে এবং এর পক্ষে অনেক শক্তিশালী দলিল রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ইসলামী চিন্তাবিদ (?) সালাফ থেকে চলে আসা সুপ্রতিষ্ঠিত মত ও পথকে উপেক্ষা করে নিজের গবেষণালব্ধ মত ও পথকে জনগণের মাঝে চালিয়ে দেওয়ার ও জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
tusarmia80

Call

পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের মধ্য চারটা পার্থক্য আছে, হাদীসের বর্ণনা অনুসারে পার্থক্য গুলো নিচে দেওয়া হলো। দলীল ১ : হযরত খালীদ বিন আল লাহলাজ (রা:) বলেন “মহিলাদের সালাতে তারাব্বু করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে” । “তারাব্বু” হলো ডান দিকের পা ডান দিকে হেলিয়ে দেয়া এবং তারপর বাম দিকের পা তার নীচে রাখা । যেটা মহিলারা তাশাহুদে বসার সময় করে থাকেন । দলীল ২ : নামাজ শুরু করার সময় একজন মহিলা কাধ বরাবর হাত তুলবে এর বেশী নয় যেটা পুরুষরা করে থাকে। এটা উম্মে দারদা (রা:) এর অভ্যেস ছিল এবং এটার দলীল আপনারা পাবেন মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা কিতাবে । দলীল ৩ : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন “হিজাব/পর্দা ব্যতীত মহিলাদের নামাজ গ্রহনযোগ্য হবে না ” ( সুনানে বায়হাকী ) দলীল ৪ : রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন যেটার মুলভাব হলো পুরুষরা যেন এমনভাবে সেজদা না দেয় যেটা কুকুরের বসার মতো হয় ( মুসলিম, তাবরানি ) । কিন্তু এই নির্দেশ মহিলাদের ক্ষেত্রে নয় । ইয়াজিদ বিন হাবিব উল্লেখ করেন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম দুইজন মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা সেই মুহুর্তে নামাজ পড়ছিল । তিনি তাদের বললেন “যখন তোমরা নীচু হবে তখন তোমাদের শরীরের অংশ মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে, কেননা একজন পুরুষ ও মহিলার মধ্যে এইক্ষেত্রে ব্যবধান রয়েছে । ( মারাসিল আবু দাউদ ) ইমাম বায়হাকী (রহ:) বলেন “নামাজের নিয়ম কানুন যেটা পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায় সেটা আসলে মহিলাদের হিজাব/পর্দা ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ