আজহিবিল বাসা রাব্বান নাসি, ওয়াশফি আংতাশ শাফি, লা শিফাআ ইল্লাহ শিফাউকা, শিফাআন লা ইউগাদিরু সুক্বামা। হে মানুষের প্রতিপালক! এ রোগ দূর করে দাও এবং আরোগ্য দান কর। তুমিই আরোগ্য দানকারী। তোমার আরোগ্য ব্যতিত কোনো আরোগ্য নেই, এমন আরোগ্য, যা কোনো রোগ বাকি রাখে না। রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঝাড়ফুকের মাধ্যমে রোগীর জন্য আল্লাহ তাআলার আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। আবদুল আযীয ইবনু সুহাইব (রাহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি ও সাবিত আল-বুনানী আনাস (রাঃ)-এর নিকটে গেলাম। সাবিত বললেন, হে আবু হামযা! আমি অসুস্থ অনুভব করছি। আনাস (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঝাড়ফুকের দুআ পাঠ করে ঝাড়ব না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আনাস (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ, মানবজাতির প্রভু! কষ্ট-ক্লেশ বিতাড়নকারী, রোগ হতে আপনি মুক্তি দিন, নিরাময়কারী তো আপনিই, আর কোন সুস্থতা দানকারী নেই আপনি ব্যতীত। এমন সুস্থতা আপনি দান করুন আর কোন রোগ যেন থাকতে না পারে। (তিরমিজীঃ ৯৭৩)
কুরআনে এমন কিছু আয়াত আছে যেগুলো বিভিন্ন রোগ-ব্যাধির জন্য শিফা স্বরূপ। তাই এ সব আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে রোগ থেকে মুক্তি চাওয়া উচিৎ।
রোগ থেকে মুক্তি লাভে পূর্ব শর্ত হচ্ছে আল্লাহর বিধানকে জানা এবং যথাযথ মানার পাশাপাশি পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস রাখা।
রোগ-ব্যাধি থেকে শিফা লাভে কয়েকটি আয়াত তুলে ধরা হলোঃ
ক. বিসমিল্লাহ সহ সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ - الرَّحْمـنِ الرَّحِيمِ - مَـالِكِ يَوْمِ الدِّينِ - إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ - اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ - صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ – اَمِيْن -
খ. সূরা তাওবার ১৪নং আয়াত
وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ- ওয়া ইয়াশফি ছুদু-রা ক্বাওমিম মু’মিনি-ন।
অর্থ : এবং মু’মিনদের (মুসলমানদের) অন্তরসমূহ শান্ত করে দেন।
গ. সুরা ইউনুসের ৫৭নং আয়াত
وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ : ওয়া শিফাউ’ল লিমা- ফিচ্ছুদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনি-ন।
অর্থ : এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।
ঘ. সুরা নহলের ৬৯ নং আয়াত
يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ
উচ্চারণ : ইয়াখরুঝু মিমবুতু-নিহা- শারা-বুম মুখতালিফুন, আলওয়ানুহু- ফি-হি শিফা-উ লিন্না-সি।
অর্থ : তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার।
ঙ. সুরা শুআরার ৮০ নং আয়াত
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
উচ্চারণ : ওয়া ইজা মারিদতু ফা হুয়া ইয়াশফি-নি।
অর্থ : যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।
চ. সুরা বনি ইসরাঈলের ৮২নং আয়াত
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ : ওয়া নুনাজ্জিলু মিনাল ক্বুরআ’নি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতিুল লিলমু’মিনি-ন।
অর্থ : আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত।
উপরোল্লিখিত আয়াতগুলো একবার তিলাওয়াত করে একটি পানিভর্তি পাত্রে দম করে পানিটি পান করলে আল্লাহ তাআলা জটিল ও কঠিন রোগ থেকে তার বান্দাদের হিফাজত করবেন।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কুরআনি আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন
রোগী দেখতে গেলে এ দুআটি পড়তে হয়৷ এটা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের শিফা৷
وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَ: « مَنْ عَادَ مَرِيضاً لَمْ يَحْضُرْهُ أَجَلُهُ، فَقَالَ عِنْدَهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ: أَسْأَلُ اللهَ العَظيمَ، رَبَّ العَرْشِ العَظِيمِ، أَنْ يَشْفِيَكَ، إِلاَّ عَافَاهُ اللهُ مِنْ ذَلِكَ المَرَضِ». رواه أَبُو داود والترمذي، وَقَالَ: «حديث حسن »، وَقَالَ الحاكم: «حديث صحيح عَلَى شرط البخاري »
বাংলা অনুবাদ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন কোন রুগ্ন মানুষকে সাক্ষাৎ করবে, যার এখন মরার সময় উপস্থিত হয়নি এবং তার নিকট সাতবার এই দোয়াটি বলবে, আসআলুল্লাহাল আযীম, রাব্বাল আরশিল আযীম, আঁই য়্যাশ্ফিয়াক’ (অর্থাৎ আমি সুমহান আল্লাহ, মহা আরশের প্রভুর নিকট তোমার আরোগ্য প্রার্থনা করছি), আল্লাহ তাকে সে রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন।’ [আবু দাউদ ৩১০৬, তিরমিযি৩০৮৩, আহমদ ২১৩৮, ২১৮৩, ২৩৮৮]
,রোগী দেখার দোয়া : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো বিপদগ্রস্ত বা রোগী দেখে এই দোয়া পাঠ করে সে কখনও এমন বিপদ কিংবা ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় না। اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ عَافَانِيْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِه وَفَضَّلَنِيْ عَلى كَثِيْرٍ مِّمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيْلًا দোয়া : আলহামদুলিল্লাহিল্লাজী আফিনী মিম্মাবতালাকা বিহী, ওয়া ফাদ্দিলনী আলা কাছিরীম-মিম্মান খালাকা তাফদিলা। অর্থ : ‘সমস্ত প্রসংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে যে ব্যাধিতে আক্রান্ত করেছেন তা থেকে আমাকে নিরাপদে রেখেছেন এবং তার বহু সংখ্যক সৃষ্টির ওপর আমাকে মর্যাদা দান করেছেন।’ –তিরমিজি।