অনেক মুসলিম আরবি কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন না। তাই তারা বাংলা উচ্চারণ দেখে কুরআন তেলাওয়াত করে থাকেন।  এখানে স্মরণীয় হলো, উচ্চারণ নীতিমালার ক্ষেত্রে প্রতিটি ভাষার একটি নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য আছে। যেমন, ইংরেজি বর্ণ ‘ঝ’-এর সরাসরি সঠিক উচ্চারণ নির্দেশক কোনো বর্ণ বাংলা ভাষায় নেই। প্রমিত উচ্চারণ নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত ব্যক্তি মাত্রই একথা স্বীকার করবেন। ঠিক তেমনিভাবে আরবি ভাষার অনেক বর্ণের সরাসরি ধ্বনি নির্দেশক বর্ণ বাংলা ভাষায় নেই। তাই অনেক আরবি উচ্চারণ বাংলা প্রতিলিপি দেখে করা যায় না। এর ফলে অনেক সময় ভয়ানক অর্থ বিকৃতির শিকার হতে হয়। এক্ষেত্রে স্মরণীয়, প্রতিবর্ণায়নের মাধ্যমে সঠিক উচ্চারণ অনেকটাই অসম্ভব। কারণ, এর সুনির্দিষ্ট কোনো মানদ- নেই। এক্ষেত্রে একাধিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এদের একের সাথে অপরের কাজের অমিল রয়েছে। যেমন : বাংলা একাডেমির প্রতিবর্ণায়নের সাথে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিবর্ণায়নের অমিল রয়েছে। প্রতিবর্ণায়নের এই সমস্যার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে, প্রতিবর্ণায়ন নির্দেশিকা, ইসলামি বিশ্বকোষ, ইসলামি ফাউন্ডেশনকৃত। প্রতিবর্ণায়নের কারণে অর্থ বিপর্যয়ের একটি উদাহরণ। পবিত্র কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরা হলো সুরা ইখলাস। এ সুরার প্রথম আয়াতের অর্থ হলো, ‘হে নবি আপনি বলে দিন, আল্লাহ এক।’ এবং আরবি প্রথম শব্দটি হল ‘ক্বুল’ (বড় কাফ)। কিন্তু সরাসরি এর প্রকৃত ধ্বনি নির্দেশক কোনো শব্দ বাংলা ভাষায় নেই এবং বাংলা প্রমিত উচ্চারণ নীতিমালার মাঝেও আরবি এই ধ্বনির মতো কোনো ধ্বনি নেই। তাই বাংলায় এর উচ্চারণ হবে ‘কুল’। অথচ আরবিতে এই ধ্বনিটির অর্থ সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং এর আরবি অর্থ প্রতিরূপ হল ‘কুল’ (ছোট কাফ)। এর অর্থ হলো খাও। তাই সুরা ইখলাসের প্রথম আয়াতের অর্থ হবে, ‘হে নবি! আপনি খেয়ে নিনৃ। এমন ভয়ানক অর্থ বিপর্যয়ের মূলে রয়েছে ভিন্ন ভাষায় অর্থ্যাৎ, বাংলা ভাষায় আরবি ধ্বনি উচ্চারণের চেষ্টা। অনেক প্রকাশনী তাদের বাংলা উচ্চারণের কুরআনের শুরুতে কিছু চিহ্ন দিয়েছেন। তাদের দাবি, কুরআনের বিশুদ্ধ উচ্চারণের জন্য এই ধ্বনি নির্দেশনাই যথেষ্ট। কিন্তু সমস্যা হলো সাধারণ পাঠক তো আর সব উচ্চারণের মাঝে ব্যবধান করতে পারেন না। তাই সৌদির সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘তিলাওয়াতকারীকে আরবি ভাষায় তিলাওয়াতের প্রতিই উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এছাড়া অন্যকোনো প্রতিবর্ণায়নের চেষ্টা বাতিল বলে গণ্য হবে।’

সূত্র : কনফারেন্স বুক। কিং আবদুল আজিজ ইউনিভার্সিটি। পৃ : ১৫৬

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

না, কুরআনের বাংলা উচ্চারণ পড়া 

জায়েজ নেই। কারণ, ভাষার ভিন্নতার 

কারণে হরফের উচ্চারণে ভিন্নতা এসে 

যায়। এতে কুরআনের মধ্যে বিকৃতি

ঘটে। তাই আরবি ছাড়া কোনো ভাষায়ই 

সরাসরি উচ্চারণ পড়া জায়েজ নেই।

এজন্য আপনাকে আরবি ভাষার 

কুরআন শিখতে হবে। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ