জিহাদ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?আল্লামা সাইদীকে নিয়ে বাংলাদেশে এখন অনেক কাজ কর্ম চলতেছে,, তারা এটাকে জিহাদ বলতেছে,, আশলে কুরান বা হাদিস কি বলে,, অর্থাৎ কুরান বা হাদিস কি এইটা সমর্থন,,করে ??
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

ইসলাম চির শান্তির ধর্ম। ইসলাম চায় মানুষের মাঝে পরস্পর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হোক। তারা দুনিয়ায় সুখে শান্তিতে থাকুক। ফিতনা ফাসাদ দাংগা হাংগামা মানুষকে কখনো কল্যাণ দিতে পারেনা। মানুষের জীবন চলার পথকে সুন্দর ও সুশৃংখল করার জন্য ইসলাম তাদেরকে দিয়েছে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা। নিশ্চিত করেছে তাদের যথাযথ স্বাধীনতা। আল্লাহ তায়ালা মানুষের উপর বিভিন্ন ধরণের বিধি-বিধান পালনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছেন। যেমন-নামাজ, রোজা, যাকাত, হজ্জ ইত্যাদি। সেগুলো যেমন একেকটি ফরজ তথা অত্যাবশ্যকীয় ইবাদাত, তেমনি জিহাদও একটি ফরজ বা আবশ্যক বিধান। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং রাসুল (সাঃ) এর বিভিন্ন হাদীসে জিহাদের নির্দেশ এসেছে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে জিহাদের আবশ্যকতা সম্পর্কে বলা হয়েছে- كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَكُمْ وَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَعَسَى أَنْ تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ (216) অর্থঃ াৎ, তোমাদেরকে যুদ্ধ করার হুকুম দেয়া হয়েছে এবং অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। হতে পারে তোমরা এমন কিছুকে অপছন্দ কর যা আসলে তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আবার এমনও হতে পারে কোন জিনিসকে তোমরা পছন্দ করো অথচ, তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আল্লাহ সবকিছু জানেন,কিন্ত তোমরা জানো না। (সুরা বাকারা: ২১৬) অন্য আয়াতে এসেছে: أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا وَإِنَّ اللَّهَ عَلَى نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ (39) الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ إِلَّا أَنْ يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا وَلَيَنْصُرَنَّ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ إِنَّ اللَّهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ (40) অর্থঃ াৎ, যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হলো তাদেরকে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে,কেননা তারা মজলুম এবং আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করার ক্ষমতা রাখেন। তাদেরকে নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বের করে দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র এ অপরাধে যে, তারা বলেছিল,“আল্লাহ আমাদের রব।” যদি আল্লাহ তায়ালা লোকদেরকে একের মাধ্যমে অন্যকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা না রাখতেন,তাহলে যেখানে আল্লাহর নাম বেশী করে উচ্চারণ করা হয় সেসব আশ্রম,গীর্জা,ইবাদাতখানা ও মসজিদ ধ্বংস করে ফেলা হত। আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন যারা তাঁকে সাহায্য করবে। আল্লাহ তায়ালা বড়ই শক্তিশালী ও পরাক্রান্ত। (সুরা হজ্জ: ৩৯-৪০) কিন্তু, অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হল-জিহাদ নামক পবিত্র শব্দটিকে এখন কলঙ্কৃত করে ফেলা হচ্ছে। কুরআন শরীফের বহু স্থানে এ শব্দটি এসেছে। অথচ, এখন একে কলঙ্কৃত করে এর দ্বারা সন্ত্রাসকে বুঝানো হচ্ছে। বর্তমানে “জিহাদ” শব্দটি সাধারণ মানুষের নিকট আতংকজনক হিসেবে চিত্রিত হয়েছে। এমনভাবে একে উপস্থাপন করা হয় যে, জিহাদ মানেই যেন সন্ত্রাস কিংবা অস্ত্রবাজি ইত্যাদি। অথচ, ইসলাম সন্ত্রাসকে কঠোরভাষায় ঘৃণা করেছে। সন্ত্রাসীর জন্য গুরুতর শাস্তির বিধানও ইসলাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। হয়তবা, ইসলাম বিদ্বেষীরা মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে জিহাদকে বিকৃত করে উপস্থাপন করার পথকে বেছে নিয়েছে। আর একে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। আসুন! আমরা জিহাদ সম্বন্ধে জেনে নিই। ইসলাম কি আসলেই যুদ্ধ করতে বলেছে? নাকি তা শান্তির ধর্ম সেটা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। এ ছাড়া জিহাদ সম্বন্ধে আমাদের মাঝে পরিস্কার একটা ধারণার সৃষ্টি হবে ইনশাল্লাহ। আসুন! তাহলে শুরু করা যাক। জিহাদের সংজ্ঞা: জিহাদ আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থঃ হল- ১. কোন বিষয়ের চুড়ান্ত সাফল্যে পৌছানোর লক্ষ্যে কথা ও কাজ দ্বারা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালানো। ২. কষ্ট স্বীকার করা। ৩. শত্রুকে প্রতিরোধ করতে সাধ্যমত চেষ্টা করা। (তাজুল উরুস,কামুসুল ফিকহী) জিহাদের পারিভাষিক অর্থঃ বুখারী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাতা আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন: بَذْل الْجَهْد فِي قِتَال الْكُفَّار ، وَيُطْلَق أَيْضًا عَلَى مُجَاهَدَة النَّفْس وَالشَّيْطَان وَالْفُسَّاق . فَأَمَّا مُجَاهَدَة النَّفْس فَعَلَى تَعَلُّم أُمُور الدِّين ثُمَّ عَلَى الْعَمَل بِهَا ثُمَّ عَلَى تَعْلِيمهَا ، وَأَمَّا مُجَاهَدَة الشَّيْطَان فَعَلَى دَفْع مَا يَأْتِي بِهِ مِنْ الشُّبُهَات وَمَا يُزَيِّنهُ مِنْ الشَّهَوَات ، وَأَمَّا مُجَاهَدَة الْكُفَّار فَتَقَع بِالْيَدِ وَالْمَال وَاللِّسَان وَالْقَلْب ، وَأَمَّا مُجَاهَدَة الْفُسَّاق فَبِالْيَدِ ثُمَّ اللِّسَان ثُمَّ الْقَلْب অর্থঃ াৎ, কাফেরদের সাথে সংগ্রাম করতে গিয়ে শক্তি ক্ষয় করা। এর (জিহাদ শব্দ) দ্বারা নিজের প্রবৃত্তি, শয়তান এবং দুরাচার সকলের সাথে সংগ্রাম করাকেও বুঝায়। এখানে প্রবৃত্তির সাথে জিহাদ বলতে দ্বীন শিক্ষাগ্রহণ করা, শিক্ষাদান করা ও নিজের জীবনে তা বাস্তবায়ন করা, শয়তানের সাথে সংগ্রাম বলতে তার আনীত সংশয় ও অযাচিত লোভ লালসা প্রতিরোধ করাকে বুঝায়। আর কাফেরের সাথে জিহাদ হাত (শক্তি প্রয়োগ), সম্পদ, কথা কিংবা অন্তর যে কোনটার মাধ্যমেই হতে পারে। এছাড়া দুরাচারীদের সাথে জিহাদ হাত দ্বারা(শক্তি প্রয়োগ) অতঃপর জবান তারপর অন্তর দ্বারা হতে পারে। (ফাতহুল বারী: জিহাদ ও সিয়ার অধ্যায়) ইমাম জুরজানী (রহঃ) বলেন: জিহাদ হল-সত্য দ্বীন তথা ইসলামের দিকে মানুষকে আহবান করা। (আত-তা’রীফাত) আল্লামা কাসানী (রহঃ) বলেন: আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের অর্থঃ হল- প্রচেষ্টা ও শক্তি ব্যয় করা কিংবা কোন কাজে সফল হওয়ার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মুখের কথা, সম্পদ ও জীবন ইত্যাদি ক্ষয় করে সফলতার মানদন্ডে পৌছার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার নামই জিহাদ। (আল বাদায়েউস সানায়ে) জিহাদের স্তর: জিহাদের বেশ কিছু স্তর রয়েছে। জিহাদ বললেই অস্ত্র ব্যবহার করা বুঝায় না। জিহাদের স্তর সম্বন্ধে ইমাম ইবনুল কায়্যেম (রহঃ) বলেছেন: *প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদের স্তর চারটি। সেগুলো হল- ১. সত্য দ্বীন (ইসলাম) শিক্ষাগ্রহণ করা। কেননা, সত্য দ্বীন তথা ইসলাম ছাড়া অন্যত্র কোন কল্যাণ নেই। ২. দ্বীন শিক্ষাগ্রহণের পর তা নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করা। কেননা, বাস্তবায়ন ছাড়া শুধুমাত্র শিক্ষাগ্রহণ করলে তাতে ক্ষতি না হলেও কোন লাভ হয় না। ৩. যা শিক্ষাগ্রহণ করেছে তা অপরকে শিক্ষাদান করা। কেননা, দ্বীনের কোন কিছুকে গোপণ করলে আল্লাহ তায়ালার আযাব থেকে সে নিজেকে বাঁচাতে পারবেনা। ৪. ইসলামের বিধানকে তুলে ধরতে গিয়ে কোন বিপদ আসলে ধৈর্যধারণ করা ও কষ্ট স্বীকার করা। *শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদের রয়েছে দু’টি স্তর: ১. সংশয় দূর করা। ২. কু-প্রবৃত্তিকে প্রতিরোধ করা। * কাফের ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদের স্তর চারটি। ১. অন্তর দিয়ে কাজটাকে ঘৃণা করা, ২. মুখের কথা দ্বারা তা প্রতিরোধ করা, ৩. এ পথে সম্পদ ব্যয় করা ও ৪. নিজের জীবন আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ করা। * অত্যাচারী যালিম ও অবাধ্যদের বিরুদ্ধে জিহাদের স্তর তিনটি। ১. সক্ষম হলে(ক্ষমতাবান) শক্তি প্রয়োগ করে তা রুখে দেয়া। ২. শক্তি প্রয়োগে অক্ষম হলে মুখের কথা দিয়ে তা রুখবে। ৩. তাতেও সক্ষম না হলে অন্তর দিয়ে তাকে (কাজকে) ঘৃণা করবে এবং তা প্রতিহত করার চিন্তায় ব্যাপৃত থাকবে। এই হল জিহাদের ১৩ টি স্তর। কেউ যদি জিহাদ না করে কিংবা অন্ততঃপক্ষে জিহাদের কল্পনা মনের ভিতর না রেখে মারা যায় তাহলে, যেন সে মুনাফিকের একটা গুণাবলী নিয়েই মৃত্যুবরণ করল। (যাদুল মাআদ দ্রষ্টব্য) জিহাদের স্তরগুলো নিয়ে কেউ গবেষণা করলে সে দেখতে পাবে, যে সমস্ত নবীদেরকে যুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদেরকে প্রথমে ইসলামের দাওয়াত (ইসলামের দিকে আহবান) দিতে বলা হয়েছে। তাদের অবর্তমানে তাদের উম্মতের মধ্যকার যোগ্য ব্যক্তিদেরকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা যদি তাদের বাণীকে গ্রহণ না করে এবং এতে বাধা দেয় তবেই যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রথমেই যুদ্ধের নির্দেশ বা অনুমতি দেয়া হয়নি। বড় জিহাদ কোনটি? স্বভাবতই প্রশ্ন আসতে পারে কোন জিহাদ বড়? নাফস তথা প্রবৃত্তির সাথে জিহাদ নাকি কাফেরদের সাথে জিহাদ? আসুন দেখি হাদীসে এ সম্বন্ধে কি বলা হয়েছে-রাসুল (সাঃ) বলেছেন: الْمُجَاهِدُ مَنْ جَاهَدَ نَفْسَهُ لِلَّهِ أَوْ قَالَ فِي اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ অর্থঃ াৎ, (সত্যিকার) মুজাহিদ তথা জিহাদকারী ঐ ব্যক্তি যে তার নাফস তথা প্রবৃত্তির সাথে জিহাদ তথা সংগ্রাম করে। (মুসনাদে আহমাদ) নিজের প্রবৃত্তির সাথে জিহাদ করার পরই ব্যক্তি শত্রুর সাথে জিহাদ করার যোগ্যতা লাভ করে। কেননা, আল্লাহ তায়ালার আদেশ নিষেধকে পালন না করে কেউ শত্রুর সাথে যুদ্ধ করতে সক্ষম হয় না। (যাদুল মাআ’দ) অপর এক হাদীসে এসেছে- রাসুল (সাঃ) বলেছেন: إِنَّ أَفْضَلَ الْجِهَادِ كَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائِرٍ অর্থঃ াৎ, সর্বোত্তম জিহাদ হচ্ছে অত্যাচারী শাসকের সামনে হক কথা বলা। (তিরমীজি, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, দারেমী) জিহাদের একটা অংশ হল যুদ্ধ। জিহাদ বলতে প্রথমেই যুদ্ধকে বুঝানো হয়না। বরং, যুদ্ধ হচ্ছে এর চুড়ান্ত স্তর। এখানে আমরা জিহাদের চুড়ান্ত স্তর “যুদ্ধ” নিয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। যুদ্ধ জিহাদের একটিমাত্র অংশ হলেও এখানে আলোচনার খাতিরে আমরা যুদ্ধকে “জিহাদ” নামেই অভিহিত করব। আরও দেখতেঃ http://www.is lam.net.bd/content/view/211/27/

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
masumfarhad

Call

তোমরা যুদ্ধ কর ঐসকল লোকদের বিরুদ্ধে ,যারা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখেনা , আল্লাহ ও রাসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহন করে না সত্য ধর্ম , যতক্ষন না তারা করজোড়ে তারা জিজিয়া প্রদান করে । "[৯ :২৯ ]

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ