ফেসবুক হল সারা বিশ্বের একটি পরিবারের নাম। এই স্যোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রতি মাসে ২.২ বিলিয়নের বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী থাকে এবং সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
একদিকে ফেসবুক আপনাকে আত্মীয় এবং বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে দেয়, অপরদিকে এটা টাকা আয় করারও চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে। কিছু সরাসরি এবং পরোক্ষ উপায় আছে যা দ্বারা আপনি সহজেই ফেসবুক থেকে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনার শুধু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অথবা ফেসবুক পেজের প্রয়োজন হবে। যাইহোক আজকে আমরা জানবো কিভাবে ফেসবুকে টাকা আয় করা যায়।
যেভাবে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায়
ফেসবুক ভিডিও থেকে আয়
ফেসবুকে ভিডিও এবং লাইভ করে টাকা আয় করা যায়। ফেসবুকে টাকা আয় করার এই সুবিধাকে বলা হয় অ্যাড ব্রেকস। অর্থাৎ আপনার ভিডিওতে ফেসবুক অ্যাড দেখাবে, সেই অ্যাড থেকে আয়ের কিছু অংশ আপনাকে দিবে। অ্যাড ব্রেকস পেতে হলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। প্রথমত আপনার পেজটি আগে তাদের কাছে মনোনীত হতে হবে। এক্ষেত্রে শর্তসূমহ হল:
১ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে।
শেষ ৬০ দিনে ১৫,০০০ হাজার মানুষের নিকট আপনার পোস্ট পৌছাতে হবে।
শেষ ৬০ দিনে ১,৮০,০০০ মিনিট ভিউ হতে হবে এবং ৩০,০০০ মিনিট ভিউ হতে হবে ৩ মিনিটের ভিডিওতে।
এছাড়া লাইভ ভিডিও করে টাকা আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে লাইভ ভিডিও এর শর্ত:
ভিডিও ৪ মিনিটের বেশী হতে হবে।
কমপক্ষে ৩০০ জন ভিডিওটি দেখতে হবে।
বিষয়গুলো আপনার কাছে কঠিন মনে হলেও আসলে অনেক সহজ কাজে নামলেই বুঝতে পারবেন।
পণ্য বিক্রয়
কমবেশি অনেকেই ব্যবসা করে। এর মধ্যে অনেকে ই-কমার্স ব্যবসায়ের প্রতি আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইট তৈরি কিংবা এর প্রচার প্রসারে প্রচুর অর্থ লাগার ভয়ে অনেকে কাজ শুরু করতে পারছেন না। তাদের জন্য ফেসবুক সবচেয়ে সহজ উপায় ব্যবসা করার জন্য। পণ্য বিক্রয় এবং মানুষের কাছে পৌঁছানোর অনেক টুলস আছে ফেসবুকের।
শর্ট লিংক শেয়ার করে আয়
URL বা লিংকে ক্লিক করার মাধ্যমেই আমরা যেকোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারি। মজার ব্যাপার হল এই লিংকে ক্লিক করানোর মাধ্যমে টাকা আয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনার কাজ হল শর্ট লিংকে টাকা প্রদানকরী ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা। বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু ওয়েবসাইট হল। যথা:
ধরুন আপনি একটি মুভি ডাউনলোড লিংক শেয়ার করতে চাচ্ছেন এখন সেটাকে এই লিংক শর্টেন সাইট থেকে শর্ট করে ফেসবুকে প্রচার করলেন এখন কেউ যদি এই লিংকে ক্লিক করে তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল অন্যের পণ্য আপনি প্রচার করবেন এবং আপনার প্রচারে যদি কোন পণ্য বিক্রয় হয় তবে তার একটি অংশ আপনি পাবেন। মজার ব্যাপার হল এই কাজটি আপনি খুব সহজে একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে করে ফেলতে পারবেন। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট হল অ্যামাজন।
ডিজিটাল মার্কেটিং
যারা সাধারণত ডিজিটাল মার্কেটিং করেন, তাদের জন্য ফেসবুকের বিকল্প খুব কম ওয়েবসাইট রয়েছে। ফেসবুকের মাধ্যমে যেকোনো মানুষকে খুব সহজে প্রভাবিত করা যায়।
পেজ বিক্রি করে আয়
আপনার নিকট যখন একটি সক্রিয় এবং বেশী লাইকে পেজ থাকবে তখন আপনি নিজেকে ধনী বলে প্রচার করতে পারেন। কেননা অনেকেই এসব পেজ কেনার জন্য বসে থাকে। তাই এরকম পেজ তৈরি করেও বিক্রি করতে পারবেন।
ব্লগ বা ওয়েবসাইটের প্রচার
আপনার যদি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকে এবং সেখান থেকে টাকা আয় করে থাকেন। তাহলে সেই টাকা আয়ের পরিমাণ কয়েকগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম এই ফেসবুক। কেননা এর মাধ্যমে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট প্রচার করলে খুব ভাল মানের ভিজিটর পাবেন।
ফেসবুক লাইক বিক্রি করে আয়
যদি ফেসবুকে লাইক বিক্রি করাটা একটি বিতর্কিত বিষয় কিন্তু তারপরেরও অনেকেই ফেসবুকে লাইকে এনে দিলে টাকা দিয়ে থাকে। ফাইভারার মার্কেট-প্লেসে এরকম অনেক জব দেখা যায়।
অ্যাকাউন্ট পরিচালনা
অনেক সময় বিখ্যাত ব্যক্তি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজ বা অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করলে অর্থ প্রদান করে থাকে। এই কাজগুলো ঘরে বসেও কার সম্ভব।
ফেসবুক গ্রুপ
ফেসবুক গ্রুপ থেকেও টাকা আয় করা যায় তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। আর বর্তমানে অনেক বড় বড় গ্রুপের এডমিন ফেসবুক গ্রুপ থেকে টাকা আয় করছে।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন। বিস্ময়ে প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ। বিস্ময়ের সাথে থাকুন।