কোন স্বার্থ হাসিলের জন্য বা খামখেয়ালিভাবে তওবা করলে সেটা কবুল হবার কোন সম্ভাবনা নেই। পরিষ্কার মনে কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা থেকে তওবার শর্তগুলি মেনে তওবা করলেই সেটা আল্লাহ কবুল করবেন। তওবা কবুল হওয়ার শর্তাবলি : ১. সংশ্লিষ্ট গুনাহের কাজটিকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করা। ২. কৃত অপরাধের কারণে লজ্জিত হওয়া। ৩. ভবিষ্যতে পুনরায় উক্ত অপরাধে লিপ্ত হবে না এ কথার ওপর দৃঢ় অঙ্গীকার করা। 4. কোন অন্যায় কাজট যদি মানুষের অধিকার সংশ্লিষ্ট হয়, তবে উক্ত অধিকার তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। যেমন কাউকে মনে কষ্ট দিলে ক্ষমা চাইতে হবে, পাওনাদারের টাকা পরিশোধ করতে হবে, কারো হক নষ্ট করলে সেটা তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। উপরক্ত শর্তগুলি স্বঠিকভাবে পালন করার পরই তওবা কবুল হবার আশা করা যায়।
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন যারা তাঁর কাছে তওবা করে, এবং তিনি তাদেরকে ভালবাসেন যারা নিজেদেরকে পবিত্র করে। —কুরআন, সূরা ২ (আল-বাকারা), আয়াত ২২২” “অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশত মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে, এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন;আল্লাহ মহাজ্ঞানী রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমনকি যখন মাথার উপর মৃত্যু এসে উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকে - আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফুরি (অবাধ্য) অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। —কুরআন, সূরা ৪ (আন-নিসা), আয়াত ১৭-১৮“ সুতরাং এখন ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই আল্লাহ কাছে তওবা করুন।
ভাই তাওবার প্রথম শর্ত হচ্ছে কৃত গোনাহ ছাড়তে হবে।তবেই
তাওবা কবুল হবে।আপনি গোনাহের কার্য ছাড়তে এগুলো
অনুসরণ করতে পারেনঃ-
(১) যখনই গোনাহ করতে যাবেন তখনি আল্লাহকে স্মরণ
করুণ, এবং ইস্তেগফার করুন।
আয়াতঃ واذا نزغ الشيطان فاستعذ بالله
(২) নফল বিশেষত তাহাজ্জুদের নামায আদায় করে দোয়া
করুন।
(৩) বেশী বেশী নামায পড়ুন। ان الصلوة تنهي عن الفحشاء والمنكر
(৪) তাবলীগে চলে যান।কেননা লোকসম্মুখে বা মসজিদে
অবস্থানরত অবস্থায় পাপ করা যায়না।
(৫) কোনো হক্কানী পীরের কাছে বাইআত গ্রহণ করুন।
তিনি step by step আমল দিবেন।আর তাতে আস্তে আস্তে
আপনি গোনাহ থেকে বিরত থাকতে পারবেন।কেননা এক
সাথে কোনো জিনিষ শিখা/ছাড়া যায়না।
আপনি ৪/৫ টি অবশ্যই গ্রহন করতে হবে।
তওবা করার জন্য জন্য কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে, তাহলেই আল্লাহ তাআ'লা সেই তওবা কবুল করবেন। |
১: পাপ কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এখন শুধু মুখে মুখে তোওবা করে নেই, কয়েকদিন পর থেকে পাপ কাজটা ছেড়ে দেবো – এরকম হলে তওবা কবুল হবেনা। |
২: অতীতের সমস্ত পাপ কাজ ও ভুল ত্রুটি আল্লাহর কাছে স্বীকার করে তাঁর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে। |
৩: অন্তরে ঐ কাজগুলোর প্রতি ঘৃণা রেখে সেইগুলোতে আর ফিরে না যাওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করতে হবে। তব কসম করবেন না, কসম না করে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবেন। |
৪. লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে সমস্ত গুনাহ-খাতার জন্য “ইস্তিগফার” করতে হবে (ক্ষমা চাইতে হবে) + “তওবা” করতে হবে (গুনাহ করা বন্ধ করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে হবে)। |
৫. কারো হক্ক নষ্ট করে থাকলে যে ভাবেই হোক তাকে তার পাওনা ফিরিয়ে দিতে হবে, সামর্থ্য না থাকলে অনুরোধ করে, ক্ষমা চেয়ে তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নিতে হবে। উল্লেখ্য, তওবা করলে আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন, এমনকি কারো পাপ জমীন থেকে আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে গেলেও আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন। কিন্তু বান্দার কোনো হক্ক নষ্ট করে থাকলে সেটা বান্দা মাফ না করলে আল্লাহও ক্ষম করবেন না। |
৬. অন্তরে আশা রাখতে হবে যে, আমি গুনাহগার কিন্তু আল্লাহ গাফুরুর রাহীম – অতীব ক্ষমাশীল ও দয়ালু। সুতরাং আমি যতবড় গুনাহগার হয়ে থাকিনা কেনো, তিনি আমার তওবা কবুল করবেন ইন শা’ আল্লাহ। |
৭. তওবা করার পরে প্রাণপণে চেষ্টা করতে হবে পাপ কাজ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে, এবং সাধ্য অনুযায়ী বেশি বেশি করে নেকীর কাজ করার জন্য। |
৮. যে পাপ কাজ থেকে তওবা করা হলো (সমস্ত পাপ কাজ থেকেই তওবা করা ফরয), কোনো ভুলে বা কুপ্রবৃত্তির কারণে পাপ কাজটা আবার করে ফেললে সাথে সাথে আবার তোওবা করে সেটা থেকে ফিরে আসতে হবে। এইভাবে যখনই কোনো পাপ কাজ সংঘটিত হবে, সাথে সাথেই তওবা করতে হবে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত। |
৯. কারো তওবা কবুল হয়েছে কিনা এটা কিভাবে বুঝবেন? অনেক আলেম এ সম্পর্কে বলেনঃ কারো যদি তওবা করার পরের জীবন আগের জীবন থেকে ভালো হয় অর্থাত পাপের কাজ অনেক কমে যায় ও ভালো কাজ বৃদ্ধি পায় তাহলে আশা করা যেতে পারে – তার তওবা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে। |
***আন্তরিক তওবা যদি আল্লাহর কাছে কবুল হয় – তাহলে তার আগের সমস্ত গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন। এমনকি যেই গুনাহগুলো মাফ করে দেন, কেউ যদি সেইগুলো থেকে ফিরে আসে – এইগুলোর বিপরীতে আল্লাহ তাকে সওয়াব দান করেন। যেমনটা আল্লাহ কুরানুল কারীমে উল্লেখ করেছেনঃ |