জীবনে এত কষ্ট নিয়ে কিভাবে থাকা যায়?কষ্ট থেকে কিভাবে নিজেকে দুরে রাখা যায়?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
AbdulHalim

Call

স্বাভাবিকভাবে বলা যায় জীবনটা হলো একটি যুদ্ধক্ষেত্র,আর সুখ হলো একটি আপেক্ষিক বিষয়৤জীবনের প্রতিটি স্তরেই প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বেচে থাকতে হয়৤তাই মোটের উপর বলা চলে জীবনটা হলো কষ্টের সমাহার,তাই কষ্ট মুক্ত থাকাটা কষ্টের৤নিজেকে সবসময় পজেটিভ রাখুন আর যেকোন কিছু থেকে ভালো দিকটি খূজে বের করুন৤ছোট ছোট বিষয়গুলো উপভোগ করুন,বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন৤তাহলে মন ভালো থাকবে এবং আশা করি কষ্ট মুক্ত থাকবেন৤

Call

দুঃখ ও কষ্টবিহীন মানব জীবন কল্পনা মাত্র। অন্য কথায় দুঃখ-কষ্ট মানব জীবনের অন্যতম ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। পৃথিবীতে বড় ধরনের কোনো সাফল্য লাভের জন্য কষ্ট-সহিষ্ণুতা ও পরিশ্রম অপরিহার্য। বিনা পরিশ্রমে যেমন পাহাড়ের চূড়ায় উপনীত হতে পারেন না পর্বতারোহী তেমনি কষ্ট করা বা পরিশ্রম ছাড়া জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যগুলো অর্জন করা কারো পক্ষে সম্ভব নয় । অনেক মানুষ ব্যাপক দুঃখ- কষ্ট বা প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন বুদ্ধিদীপ্ত সংগ্রামের মাধ্যমে। আবার অনেকে সামান্য দুঃখ-কষ্টেই ভেঙ্গে পড়েন। সংকট মোকাবেলার অন্যতম এবং মোক্ষম পন্থা হল, সংকটের প্রকৃতি ও নানা দিক সম্পর্কে খুব ভালভাবে জ্ঞান অর্জন করা। যেমন,দুজন প্রতিদ্বন্দ্বী খেলোয়াড় প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার জন্য পরস্পরের ইতিবাচক ও নেতিবাচক বা দূর্বল দিকগুলো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেন। সংকট মোকাবেলার জন্য এর মূল কারণ বা মূল চালিকা শক্তিগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখাও জরুরি। যেমন, দাঁতে ব্যাথা দেখা দিলে এর প্রতিকারের সবচেয়ে ভাল উপায় হল ব্যাথার মূল কারণ উদঘাটন করে ওই কারণ দূর করার চেষ্টা করা। প্রথমে প্রতিরোধের প্রাথমিক ব্যবস্থা অনুযায়ী দাঁতে লেগে থাকা ময়লা দূর করতে হবে এবং ময়লা জমে থাকার ফলে সৃষ্ট গর্তগুলো ভরাট করতে হবে। কিন্তু দাঁতের ক্ষয় রোগ যদি স্নায়ু পর্যন্ত পৌঁছে যায় তাহলে ব্যথা দূর করার জন্য ক্ষয়কারী চালিকাশক্তিগুলোকে প্রতিহত করার পাশাপাশি দাঁতের সাথে স্নায়ুর সংযোগও ছিন্ন করতে হবে, আর তা না করলে দাঁত নষ্ট হবার পর মাড়িও নষ্ট হতে শুরু করবে। অন্য কিছু দুঃখ-বেদনা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। যেমন, যারা টাকা-পয়সা খুব ভালবাসেন তারা কিছু টাকা হারালে খুবই দুঃখিত হয়ে পড়েন। অথচ অন্য এক ব্যক্তি ওই অর্থের সমপরিমাণ অর্থ হারানোর কারণে কম দুঃখিত হন। কিংবা কোনো কোনো মানুষ খুব অল্প টাকা-পয়সা বা সম্পদে তুষ্ট থাকেন, আবার অন্য অনেক মানুষ ওই পরিমান অর্থের দ্বিগুণ অর্থ খর-পোষ ও বিনোদনের জন্য ব্যায় করা সত্ত্বেও জীবন সম্পর্কে সুখী নন। তাই অপেক্ষাকৃত বেশি দুঃখ পাওয়ার পেছনের মনস্তাত্বিক কারণ দূর করা হলে দুঃখের মাত্রা কমানো বা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব। পবিত্র কোরআনের সুরা ইউনুসে মহান আল্লাহ বলেছেন, َّﻥِﺇ ﺎَﻟَﺃ َﺀﺎَﻴِﻟْﻭَﺃ ﺎَﻟ ِﻪَّﻠﻟﺍ ٌﻑْﻮَﺧ ْﻢِﻬْﻴَﻠَﻋ ﺎَﻟَﻭ َﻥﻮُﻧَﺰْﺤَﻳ ْﻢُﻫ ‏[ ١٠:٦٢ ] ”মনে রেখ যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।” দুঃখ-কষ্টের ব্যাপারে ওলি-আওলিয়াদের দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই তারা কখনও ভীত হন না ও দুঃখিত বা চিন্তান্বিত হন না। আসলে এই মাটির পৃথিবীতে বস্তুগত ও প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট দুঃখ-কষ্ট এড়ানো সম্ভব নয়। যেমন, বার্ধক্য বা অসুস্থতার ফলে সৃষ্ট দুঃখ-কষ্ট এড়ানো সম্ভব নয়। তবে বস্তুগত কারণের সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং ভুল মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত- এমন সমস্যাগুলো আত্মসংশোধনের মাধ্যমে কমিয়ে ফেলা সম্ভব।