শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

আমাদের দেশে দুই ধরনের মোবাইল নেটওয়ার্ক আছে। একটি জি.এস.এম (গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশান) অন্যটি সি.ডি.এম.এ কোড ডিভিশান মাল্টিপল এ্যাক্সিস)। গ্রামীন, বাংলালিংক, একটেল, ওয়ারিদ হল জি.এস.এম আর সিটিসেল, রাংকসটেল হল সি.ডি.এম.এ ক্যাটাগরির। মোবাইল ফোনকে টেকনিক্যালি সেল ফোন হিসেবে চিহিৃত করা হয়। আমরা যখন একটি সেল ফোন থেকে আরেকটি সেল ফোন থেকে কল করার চেষ্টা করি তখন সেল ফোন প্রথম বি.টি.এস বেস ট্রান্সসিভার স্টেশান) এ রিকোয়েষ্ট পাঠায়। বাংলাদেশে জি.এস.এম এর ক্ষেত্রে তা ৯০০ থেকে ১৮০০ ফ্রিকুয়েন্সী রেঞ্জের ভিতর হয়ে থাকে। বি.টি.এস এর কাজ হল ট্রান্সমিশান সেন্ড ও রিসিভ করা। মোবাইল নেটওয়ার্কে কোন দেশ বা এরিয়াকে হাজার হাজার সেলে বিভক্ত করা হয। প্রত্যেক সেলের জন্য বি.টি.এস থাকে। আবার বি.টি.এসকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য অনেক সময় অপারেটররা মাইক্রো বি.টি.এস ব্যবহার করে থাকে। বি.টি.এস কেবল এরিয়ার আয়তন হিসেবে বসানো হয়না। কোন স্থানে কতগুলো বি.টি.এস বসবে তা ওখানকার মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যার উপরও নির্ভর করে থাকে। বি.টি.এস কোন সেল ফোন থেকে আগত রিকোয়েষ্টকে তাদের এম.এস.সি-তে মোবাইল সুইচিং সিস্টেম) পাঠায়। এম.এস.সিতে ভি.এল.আর (ভিজিটর লোকেটর রেজিষ্টার) থাকে। সেই ভি.এল.আর এ ইউসারের ইনফরমেশান থাকে। অর্থাৎ কোন বি.টি.এস এর অধিনে কোন কোন ইউসার আছে। এটা টেম্পরারী থাকে। কোন ইউসার বি.টি.এস চেঞ্জ করলে ভি.এল.আর ও চেঞ্জ হয়ে যায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আমাদের দেশে নিম্নোক্ত দুই ধরনের মোবাইল অপারেটর আছেঃ

  • ১। GSM (Global System for Mobile Communication) (যেমনঃ টেলিটক, বংলালিংক, জিপি, রবি, এয়ারটেল)
  • ২। CDMA (Code Division Multiple Access) (সিটিসেল একমাত্র CDMA অ্পারেটর)

এই দুই প্রযুক্তিরই সুবিধা/অসুবিধা আছে যার আলোচনায় এখন যাচ্ছিনা। আমাদের চারপাশে প্রচুর মোবাইল এর টাওয়ার দেখি। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন BTV কিংবা বাংলাদেশ বেতার এর এতো টাওয়ার দরকার হয় না কেন? অথচ সারা দেশেই তো BTV দেখা যায়, রেডিও শোনা যায়।

তার কারণ, প্রথমত, BTV/Radio এর ক্ষেত্রে প্রতি Station থেকে কেবল একটা মাত্র Frequency/কম্পাংকেই বাতাসে Signal পাঠাচ্ছে এবং সবাই সেই একই জিনিস দেখছে/শুনছে। কিন্তু মোবাইল এর ক্ষেত্রে যদি একই Frequency তে সবার কথা আদান প্রদান হতো তাহলে কি ঘটত??? FM Radio এর RJ দের মত সবার কথা সবাই শুনতে পেত। যদিও প্রচুর Noise হতো যা কিনা সবার একসাথে চেঁচামেচির মত। আর এই সমস্যা দূর করার জন্য প্রথমত, অনেকগুলো Frequency ব্যবহার করা হয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যাপার তা হচ্ছে এই Frequency গুলোর পনরাবৃত্তি করে ব্যবহার। নিচের চিত্র থেকে কছুটা ধারনা পাবেন। মানে হচ্ছে, আপনার কথা যে Frequency তে পাঠানো হচ্ছে সেই Frequency টা আপনার টাওয়ার বা BTS এর চারপাশের BTS গুলো ছাড়া পরবর্তি কোনো BTS এ আবারো ব্যবহার করা হচ্ছে।

মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এর আর্কিটেকচারটা শুরুতে একটু দেখে নেয়া যাকঃ

GSM System Architecture এর বিস্তারিত

এর চাইতে একটু সহজ করে যদি দেখি তাহলে, আর্কিটেকচারটা নিচের মত দেখাবেঃ

মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এর আর্কিটেকচার

মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এর আর্কিটেকচার

চলুন দেখে নিই, মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এর প্রধান প্রধান অংশগুলো কী কী।

যে কোন মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক প্রধানত নিচের চারটি অংশের সমন্বয়ে গঠিতঃ

  • ১। Radio Access Network (RAN) --> মোবাইল ফোন সরাসরি এই নেটওয়ার্ক এর সাথে যোগাযোগ করে
  • ২। Switching Network বা Core Network --> যাকে কল করছেন তার কাছে সুইচিং করে দেয় বা সংযোগ স্থাপন করে দেয়
  • ৩। Intelligent Network (IN) এবং --> মোবাইল ইউজার এর সব তথ্য জমা রাখে এবং Verify করে
  • ৪। Transmission Network --> তথ্য আদান প্রদান এর মাধ্যম হিসেবে কাজ করে

১। Radio Access Network (RAN):

আমরা যখন কাউকে কল করি তখন তা আমাদের মোবাইল ফোন থেকে বাতাসের মধ্য দিয়ে সরাসরি নিকটস্থ কোন একটা BTS/টাওয়ার এ যায়। এই টাওয়ার বা BTS গুলোকে কন্ট্রোল করে BSC (Base Station Controller). এক একটা BSC প্রায় ১৫০-২০০ BTS কে কন্ট্রোল করতে পারে। আর এই BTS এবং BSC গুলো মিলেই গড়ে উঠে গোটা মোবাইল নেটওয়ার্ক এর সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক – Radio Access Network (RAN).

BTS Room এর ধারনা

২। Switching Network বা Core Network:

যারা পূর্বের T&T (বর্তমান BTCL) এর এক্সচেঞ্জ (Telephone Exchange) এর সাথে পরিচিত আছেন, তারা জানেন যে, T&T তে কল করলে প্রথমে একজন অপারেটর কল ধরত এবং আপনার কাছে এক্সটেনশন নাম্বার জিজ্ঞেস করত। এবং সে আপনার কাংখিত এক্সটেনশন নাম্বার এ সংযোগ দিয়ে দিত। অর্থাৎ সুইচিংটা সে করে দিত।
এখন একটু ভাবুন তো, প্রতি দিন মোবাইল টু মোবাইল এ যে পরিমান কল হয়, তা যদি অপারেটর দিয়ে এক্সচেঞ্জ করতে হত, তাহলে কত কোটি অপারেটর লাগত???
মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এ এই এক্সচেঞ্জ এর কাজটি করে দেয় Mobile Switching Center (MSC).

MSC Room এর ভিতরের ছবি

৩। Intelligent Network (IN):

এবার আসি Intelligent Network (IN) এ। আমাদের দুই ধরনের কানেকশন পাওয়া যায়

  • ক) প্রি-পেইড
  • খ) পোস্ট-পেইড

যারা প্রি-পেইড ইউজার তাদের মোবাইল এ balance/টাকা আছে কিনা, সে বৈধ ইউজার কিনা, সে যে Service টা ব্যবহার করতে চাচ্ছে তার জন্য Registration করা আছে কিনা এর সব জন্য সংরক্ষিত থাকে IN এ। আপনার কল সংযোগ দেয়ার আগেই এই সমস্ত খোঁজ খবর নিয়েই আপনাকে কল করার অনুমতি দেয়া হয়।

৪। Transmission Network:

Transmit করা মানে হচ্ছে কোন কিছু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানো। মোবাইল ফোন আমাদের কথা(Voice) অথবা Data (SMS/Internet/Multimedia Data) নিয়ে কাজ করে। আর আমাদের এই কথা (Voice) অথবা Data (SMS/Internet/Multimedia Data) স্থানান্তর অর্থাৎ যাকে কল করছেন তার কাছে পৌছে দেয়ার জন্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করে Transmission Network ।

এই Transmission Network এ মাধ্যম হিসেবে Micro Wave Link (মোবাইল এর টাওয়ার এ যে গোলাকার এন্টেনা দেখা যায় তাই হচ্ছে Micro Wave এন্টেনা) কিংবা Optical Fiber (সরু কাচ তন্ত) ব্যবহার করা হয়।

GSM & Microwave Antenna

GSM & Microwave Antenna

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ