অনেক বড় লেখা তবুও পুরোটা পড়েছি এবং আমার নিজের মত করে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছি।
ছেলেটি শুরু থেকেই আপনাকে টার্গেট বানিয়ে এবং আপনাকে এক প্রকার বিরক্ত করে, একটা পর্যায়ে আপনাকে সফলভাবে পটিয়ে ফেলল। এবং আপনিও আবেগের বসে কিছু না বুঝেই সম্পর্ক টি চালিয়ে গেলেন। ছেলেটি এক দেখাতেই আপনার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো! হয়তো আপনি বেশ সুন্দরী। তাই এটাকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসাবে ধরে নিলাম। প্রথম পর্ব এখানেই শেষ।
এবার ২য় পর্বে দেখা গেলো আপনি তাকে ফেইসবুকের পাসওয়ার্ড দিয়ে দিলেন। আচ্ছা দিতেই পারেন কারণ, যেখানে মন দেওয়া নেওয়া হয়ে গেছে সেখানে ফেইসবুকের পাসওয়ার্ড দেওয়াটা দোষের কিছু নয়।
৩য় পর্বে দেখা গেল, ফেইসবুকে অন্য ছেলেদের সাথে কথা বার্তা বা চ্যাটিং নিয়ে আপনার বয়ফ্রেন্ডের মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গেল। চ্যাটিং এ নিশ্চয় আপত্তিকর বা সন্দেহজনক কোনো কথা বার্তা হত না তাই না? তারপরেও সে সন্দেহ করতো। হ্যাঁ, কাউকে ভালবাসলে তাকে হারানোর ভয় থাকতেই পারে তাই সেই দিক বিবেচনা করে কিঞ্চিৎ সন্দেহ করতেই পারে কিন্তু অতিরিক্ত সন্দেহ করা ভালো নয়। এখানে সব থেকে মজার ব্যাপার হল যে ছেলেটি ফেইসবুকে অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলে, আবার সেই ছেলেটিই আপনার অন্য ছেলেদের সাথে স্বাভাবিক কথা বলাকে দোষ হিসাবে ধরছে যা কিছুটা একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি হয়ে গেল।
ছেলেটি নামাজ ও রোজা রাখতেন না। একজন মুসলিম হিসাবে বলবো এটি একটি জঘন্যতম অপরাধ। একজন ধার্মিক মেয়ের উচিত একজন ধার্মিক ছেলেকে জীবন সঙ্গী হিসাবে বেছে নেওয়া। ছেলে পুরোপুরি ধার্মিক না হলেও তাকে সম্পূর্ণ ধার্মিক বানানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু যখন সে আপনার কথার অবাধ্য হচ্ছে তখন সেই ছেলেটি আপনাকে কতটুকু ভালোবাসে তা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। অবশ্য নামাজ এবং রোজা এগুলো আল্লাহ্র উপর ভয় করেই প্রত্যেক মুসলিমের পালন করা উচিত।
এখানে আপনি তাকে ঠকিয়েছেন বললে ভুল হবে বরং, সে আপনাকে ঠকিয়েছে। ভালোবাসার কথা বলে আপনাকে অনেক বেশি অবিশ্বাস করেছে। তার আগের গার্লফ্রেন্ড তাকে ছেঁকা দিয়েছে বলে সেই শূন্যস্থান পূরণ করতেই হয়তো আপনার সাথে আরেকটি সম্পর্কে জড়িয়েছে। কিন্তু সম্পর্কটা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেনি বা সম্পর্কটিকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারেনি।
এরকম সম্পর্ক শেষ করে দেওয়াই ভালো। আপনার বয়স কম এবং আপনাকে সামনে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। হয়তো দেখতে সুন্দরী তাই প্রচুর ছেলে এভবেই আপনার পিছনে লাগবে। কিন্তু এ সব কিছু এক দিকে সরিয়ে এবং অতীত ভুলে নিজের পড়াশুনা আর ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করাই ভালো। আমার মনে হচ্ছে আপনি এটাই করতে চাইছেন এবং আপনার লেখা পড়ে মনে হল যে, আপনার নিজের ভিতরেও সেই ইচ্ছেটা রয়েছে। এটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
যখন ক্যারিয়ার শেষ করে বিয়ে করার চিন্তা করবেন তখন না হয় এ সব প্রেম-ভালোবাসা করতে পারেন। অবশ্য প্রেম বলে কয়ে আসে না। এর আগেও আসতে পারে তবে যতদূর সম্ভব মনের ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ রাখবেন। যদি দরজা জানালা ভেঙ্গে প্রেম ভালোবাসা ভিতরে প্রবেশ করেই ফেলে তাহলে সেটা আলাদা বিষয়। তবে হুট করে কোনো সম্পর্কে না জড়িয়ে যথেষ্ট সময় নিবেন আগে ভালোভাবে বুঝার জন্য। তবে নিজের ক্যারিয়ারে বেশি ফোকাস করুন।
তারপর, একটা সময় পর হয়তো সেই ছেলেটিও আপনাকে ভুলে যাবে এবং শূন্যস্থান পূরণের জন্য নতুন কোনো মেয়ের বাসের সিটের পিছনে বসে নাম্বার অথবা ফেইসবুক আইডি জানার চেষ্টা করবে। একই ভাবে হয়তো পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন কোনো মেয়েকে পটাবে। এবং একই ভাবে হয়তো নতুন কোনো মেয়ে বোকার মত তার প্রেমে পড়বে। আবার এটাও হতে পারে ছেলেটি আজীবন আপনার জন্য অপেক্ষা করবে। যদিও এই সম্ভাবনা খুব কম।
এক পক্ষের কথা শুনে কোনো সিদ্ধান্তে আসা উচিত নয় তবুও আপনার লেখার উপর ভিত্তি করে নিজে একজন ছেলে হয়ে অন্য আরেকটি ছেলের বিপক্ষে বললাম। আপনার বয়ফ্রেন্ড আমাকে খুঁজে পেলে আস্ত রাখবে না, হা হা হা। তবে আমি নিরপেক্ষভাবে বলার চেষ্টা করেছি। অবশ্য ছেলেটি যদি সৎ এবং আদর্শবান হত তাহলে হয়তো তাকে শেষ বারের মতন একটি সুযোগ দিতে বলতাম। যদিও ছেলেটি আপনার সাথে বড় রকমের কোনো প্রতারণা করেনি। তবে আপনি তাকে কোনো সুযোগ দিবেন কিনা এটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত বিষয়, যেহেতু আপনি তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন।
তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, আপনার প্রেম ঘটিত এ সকল চাপ থেকে নিজেকে দূরে রেখে পড়াশুনা শেষ করে সফলভাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ুন। যদিও এখন আমার কথাগুলো আপনার কাছে কিছুটা তিতা লাগলেও এই পরামর্শ দেওয়ার জন্য একদিন নিশ্চয় আমাকে ধন্যবাদ দিবেন। যাই হোক, শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
না, আপনি তাকে ঠকাননি। বরং সেই আপনাকে বারবার অবিশ্বাস করে ঠকিয়েছে। তার অবিশ্বাসের মাত্রাটা এতটাই ভয়ংকর ছিল যে সে আপনার ফেসবুক পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আপনাকে দিতে বাধ্য করেছে। অথচ কিছু কিছু বিষয় মানুষের নিতান্তই ব্যক্তিগত। তেমনি ফেসবুক পাসওয়ার্ডও একটি। সে আপনাকে পছন্দ করে সম্ভবত আপনি দেখতে সুন্দর সে জন্য। বরং তার জীবনে আর একটি মেয়ে আসলে সে আপনাকে ভুলে যেতে সময় নেবে না। আবার সুযোগ পেলে আপনার বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়গুলি নিয়ে আপনাকে ব্লাকমিল করতেও পিছপা হবে না। আপনার সামনে রয়েছে সুন্দর ভবিষ্যত। সুতরাং আপনি এসব ভুলে যান এবং পরিপুর্ণভাবেই তাকে এড়িয়ে চলুন। ভালবাসার অন্যতম শর্ত হচ্ছে বিশ্বাস, সেটি তার মাঝে পরিপূর্ণই অনুপস্থিত। তার দিক থেকে যদি কোন ক্ষতির আশংকা করেন তবে আপনার পরিপূর্ণ তথ্য দিয়ে থানায় একটি জিডি করে রাখতে পারেন। আপনি সুযোগ দিলে সে বারবার আপনার দেয়া সুযোগের অসৎ ব্যবহার করবে। মনে করুন এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আর সে যা ইচ্ছে তাই মনে করুক, কিংবা ভাবুক আপনি প্রতারক তাতে কোন সমস্যা নেই। কেননা আপনি যার সাথে সারাটা জীবন কাটাবেন সে যদি আপনাকে বুঝতেই না পারে তাহলে এ সম্পর্কের এখানেই শেষ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আপনার হিস্টোরি পাঠ করে আমার কাছে যা মনে হয়েছে সে অনুযায়ি আমি মতামত দিলাম। এর মধ্যে যদি আরও কোন বিষয় থাকে সেগুলো আমার মতামতে বিবেচ্য হয়নি। আর বিয়ের পূর্বে ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা ধর্ম ও সমাজ কোনটাই সমর্থন করে না। মনে রাখবেন প্রত্যেক বাবা মা'ই তার সন্তানের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করেন। আপনার বাবা মা'র উপর আস্থা রাখুন। ধন্যবাদ