শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
RushaIslam

Call

শুধুমাত্র ডিম ফুটাতে চাইলে স্ত্রী এবং পুরুষ কোয়েল একত্রে রাখার প্রয়োজন। স্ত্রী কোয়েল প্রতিপালন অধিক লাভজনক। আশানুরূপ ডিমের উর্বরতা পেতে হলে ৩টি স্ত্রী কোয়েলের সাথে ১টি পুরুষ কোয়েল দেয়ার ৪ (চার) দিন পর থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করা উচিৎ। স্ত্রী কোয়েল থেকে পুরুষ কোয়েল আলাদা করার পর তৃতীয় দিন পর্যন্ত ফুটানোর ডিম সংগ্রহ করা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় কোয়েল ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে এবং ৮-১২ মাস পর্যন্ত ডিম পাড়া অপরিবর্তিত থাকে। উপযুক্ত পরিবেশে প্রথম বছর গড়ে ২৫০-৩০০টি ডিম পাড়ে। দ্বিতীয় বছরের ডিমের উৎপাদন প্রথম বছরের উৎপাদনের শতকরা ৪৮ ভাগ। কোয়েল ডিমের উর্বরতা শতকরা ৮২-৮৭ ভাগ। ডিমপাড়া শুরুর প্রথম দুই সপ্তাহের ডিম ফুটাতে বসানো উচিত নয়। কোয়েলের ডিমের গড় ওজন ১০-১২ গ্রাম। কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং এবং যত্ন সদ্য ফুটন্ত কোয়েলের বাচ্চা খুবই ছোট থাকে, ওজন মাত্র ৫-৭ গ্রাম। এ সময় যে কোনো রকম ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনার প্রভাব স্বাভাবিক দৈহিক বৃদ্ধি, ডিম উৎপাদন এবং বেঁচে থাকার ওপর পড়ে। এঅবস্থায় খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান এবং কাম্য তাপমাত্রা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বজায় রাখতে হবে। বাচ্চাকে ব্রুডিং বা তাপ দেয়া খাঁচায় এবং লিটারে করা যায়। বাচ্চার বয়স তাপমাত্রা। প্রথম সপ্তাহ ৩৫০ সেন্টিগ্রেড (৯৫ ডিগ্রি  ফারেনহাইট) তৃতীয় সপ্তাহ ২৯.৫০ সেন্টিগ্রেড (৮৫ ডিগ্রি  ফারেনহাইট)। দ্বিতীয় সপ্তাহ ৩২.২০ সেন্টিগ্রেড (৯০ ডিগ্রি  ফারেনহাইট) চতুর্থ সপ্তাহ ২৭.৬০ সে. (৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। ইনকুবেটরে বাচ্চা ফুটার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রুডিং ঘরে এনে প্রথমে গ্লুকোজ এবং এমবাভিট ডলিউ এস পানির সাথে মিশিয়ে পরপর তিনদিন খেতে দেয়া ভালো এবং পরে খাদ্য দিতে হবে। প্রথম সপ্তাহ খবরের কাগজ বিছিয়ে তার ওপর খাবার ছিটিয়ে দিতে হবে এবং প্রতিদিন খবরের কাগজ পরিবর্তন করতে হবে। এক সপ্তাহ পর ছোট খাবার পাত্র বা ফ্লাট ট্রে ব্যবহার করতে হবে। পানির পাত্রে বাচ্চা যাতে পড়ে না যায় সে জন্য মার্বেল অথবা কয়েক টুকরা পাথর খ- পানির পাত্রে রাখতে হবে। সর্বদাই পরিষ্কার পরিচছন্ন পানি সরবরাহ করতে হবে। বাসস্থান বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল পালনের জন্য লিটার পদ্ধতির চেয়ে কেইজে পালন অধিক লাভজনক। বাচ্চা অবস্থায় প্রতিটি কোয়েলের জন্য খাঁচায় ৭৫ বর্গ সেন্টিমিটার এবং মেঝেতে ১০০ বর্গ সেন্টিমিটার জায়গায় দরকার। অন্যদিকে বয়স্ক কোয়েলের বেলায় খাঁচায় প্রতিটির জন্য ১৫০ বর্গ সেন্টিমিটার এবং মেঝেতে ২৫০ বর্গ সেন্টিমিটার জায়গা প্রয়োজন। কোয়েলের ঘরে পর্যাপ্ত আলো  বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাপমাত্রা ৫০-৭০ ডিগ্রি  ফারেনহাইট হওয়া ভালো। স্ত্রী কোয়েল এবং পুরুষ কোয়েল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পৃথক পথৃকভাবে রাখতে হবে।   খাঁচায় কোয়েল পালন খাঁচায় ৫০টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১২০ সেমি. দৈর্ঘ্য, ৬০ সেমি. প্রস্থ এবং ৩০ সেমি. উচ্চতা বিশিষ্ট একটি খাঁচার প্রয়োজন। খাঁচার মেঝের জালিটি হবে ১৬-১৮ গেজি ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চার খাচার মেঝের জালের ফাঁক হবে ৩ী৩ মিলিমিটার এবং বয়স্ক কোয়েলের খাঁচায় মেঝের জালের ফাঁক হবে ৫ী৫ মিলিমিটার। খাঁচার দুই পার্শ্বে একদিকে খাবার পাত্র অন্যদিকে পানির পাত্র সংযুক্ত করে দিতে হবে। খাঁচায় ৫০টি কোয়েলের জন্য তিন সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ২৫ সেন্টিমিটার বা ১০ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট ২৮ বর্গ সেন্টিমিটার বা ৩ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন।   খাদ্য ব্যবস্থাপনা বাচ্চা, বাড়ন্ত অথবা প্রজনন কাজে ব্যবহৃত কোয়েলের জন্য স্ট্যান্ডার্ড রেশন বাজারে সহজলভ্য নয়। কোয়েলের রেশনকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। স্টার্টার, বাড়ন্ত, এবং লেয়ার বা ব্রিডার। ডিম পাড়া কোয়েলের প্রতি কেজি খাবারে ২.৫-৩.০% ক্যালসিয়াম থাকতে হবে। ডিমের উৎপাদন ধরে রাখার জন্য গরমের সময় ৩.৫% ক্যালসিয়াম প্রয়োজন।   খাবার পাত্র বাচ্চা অবস্থায় ফ্লাট ট্রে বা ছোট খাবার পাত্র দিতে হবে যেন খাবার খেতে কোনো রকম অসুবিধা না হয়। স্বাভাবিকভাবে প্রতি ২৮টি বাচ্চার জন্য একটি খাবার পাত্র (যার দৈর্ঘ্য ৫০ সেন্টিমিটার, প্রস্থ’ ৮ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ৩ সেন্টিমিটার) এবং প্রতি ৩৪ টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য একটি খাবার পাত্র (যার দৈর্ঘ্য ৫৭ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১০ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ৪ সেন্টিমিটার) ব্যবহার করা যেতে পারে। সকালে এবং বিকালে খাবার পাত্র ভালো করে পরিষ্কার সাপেক্ষে মাথাপিছু দৈনিক ২০-২৫ গ্রাম খাবার দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, প্রথম সপ্তাহ থেকে ৫ গ্রাম দিয়ে শুরু করে প্রতি সপ্তাহে ৫ গ্রাম করে বাড়িয়ে ২০-২৫ গ্রাম পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রতিটি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১.২৫-২.৫ সেন্টিমিটার (১/২ থেকে ১ ইঞ্চি) খাবার পাত্রের জায়গা দিতে হবে।   পানির পাত্র সর্বদাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পানি সরবরাহ করতে হবে। প্রতিটি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ০.৬ সেন্টিমিটার (১/৪ ইঞ্চি) পানির পাত্রের জায়গা দিতে হবে। অটোমেটিক বা স্বাভাবিক যে কোনো রকম পানির পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি ৫০টা কোয়েলের জন্য একটি পানির পাত্র দেয়া উচিত। নিপল ড্রিংকার বা কাপ ড্রিংকার ও ব্যবহার করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি ৫টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১টি নিপল বা কাপ ড্রিংকারও ব্যবহার করা যেতে পারে।   লিটার ব্যবস্থাপনা তুষ, বালি, ছাই, কাঠের গুড়া প্রভৃতি দ্রব্যাদি কোয়েলের লিটার হিসাবে মেঝেতে ব্যবহার করা যায়। অবস্থাভেদে লিটার পরিবর্তন আবশ্যক যেন কোনো রকম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি না হয়। মেঝেতে ডিপ লিটার পদ্ধতি অবলম্বন করা ভালো। প্রথমেই ৫-৬ ইঞ্চি পুরু তুষ বিছিয়ে দিতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যেন লিটার ভিজা না হয়। স্বাভাবিকভাবে শীতকালে লিটার পরিবর্তন এবং স্থ’াপন করতে হবে, অন্য ঋতুতে লিটার পরিবর্তন এবং স্থাপন করলে লিটারের শতকরা ১-২ ভাগ কলি চুন মিশিয়ে দিতে হবে যেন লিটার শুষ্ক এবং জীবাণুমুক্ত হয়।   আলো ব্যবস্থাপনা কাঙ্খিত ডিম উৎপাদন এবং ডিমের উর্বরতা বাড়ানোর জন্য দৈনিক ১৪-১৮ ঘণ্টা আলোর প্রয়োজন। শরৎকালে এবং শীতকালে দিনের আলোক দৈর্ঘ্য কম থাকে তাই কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা হয়। পুরুষ কোয়েল যেগুলো প্রজনন কাজে ব্যবহার করা হয় না এবং যেগুলো শুধু মাংস উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয় সেগুলোর জন্য দৈনিক ৮ ঘণ্টা আলোই যথেষ্ট।   রোগবালাই  কোয়েলের রোগবালাই নেই বললেই চলে। সাধারণত কোনো ভ্যাকসিন অথবা কৃমিনাশক ওষুধ দেয়া হয় না। তবে বাচ্চা ফুটার প্রথম ২ সপ্তাহ বেশ সংকটপূর্ণ। এ সময় অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কোয়েলের বাচ্চার যত্ন নিতে হয়। অব্যবস্থাপনার কারণে কোয়েলের বাচ্চা মারা যায়, তবে বয়স্ক কোয়েলের মৃত্যুহার খুবই কম।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি।

কোয়েল পালনের সুবিধাঃ
  • কোয়েল দ্রুত বাড়ে, ৬-৭ সপ্তাহে ডিমপাড়া শুরু করে এবং বছরে ২৫০-২৬০ টি ডিম পাড়ে ।
  • ডিমে কোলেস্টেরল কম এবং প্রেটিনের ভাগ বেশি ।
  • কোয়েল দৈহিক ওজনের তুলনায় ডিমের শতকরা ওজন বেশী।
  • ৮-১০ টা কোয়েল একটি মুরগীর জায়গায় পালন করা যায় এবং ১৭-১৮ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।
  • রোগ বালাই খুব কম এবং খাবার খুবই কম লাগে।
  • বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের উপযোগী।
  • অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে অল্প দিনে বেশী লাভ করা যায়।
কোয়েলের জাতঃ পৃথিবীতে বর্তমানে ১৭-১৮ জাতের কোয়েল আছে। অন্যান্য পোল্ট্রির মত ইহার মাংস এবং ডিম উৎপাদনের জন্য পৃক পৃক জাত আছে। পৃথিবীতে কোয়েলের বিভিন্ন জাতের মধ্যে ‘‘জাপানীজ কোয়েল’’ অন্যতম। উল্লেখ্য বিভিন্ন জাতের কোয়েলের প্রকৃত উৎস জাপানীজ কোয়েল।
প্রজননঃ শুধুমাত্র ডিম ফুটাতে চাইলে স্ত্রী এবং পুরুষ কোয়েল একত্রে রাখার প্রয়োজন। স্ত্রী কোয়েল প্রতিপালন অধিক লাভজনক। আশানুরুপ ডিমের উবর্রতা পেতে হলে ৩ টি স্ত্রী কোয়েলের সাথে ১টি পুরুষ কোয়েল দেওয়ার ৪ (চার) দিন পর থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করা উচিৎ। স্ত্রী কোয়েল থেকে পুরুষ কোয়েল আলাদা করার পর তৃতীয় দিন পর্যন্ত ফুটানোর ডিম সংগ্রহ করা যেতে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় কোয়েল ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে এবং ৮-১২ মাস পর্যন্ত ডিম পাড়া অপরিবর্তিত থাকে। উপযুক্ত পরিবেশে প্রম বছর গড়ে ২৫০-৩০০ টি ডিম পাড়ে। দ্বিতীয় বছরের ডিমের উৎপাদন প্রম বছরের উৎপাদনের শতকরা ৪৮ ভাগ। কোয়েল ডিমের উবর্রতা শতকরা ৮২-৮৭ ভাগ। ডিমপাড়া শুরুর প্রম দুই সপ্তাহের ডিম ফুটাতে বসানো উচিৎ নয়। কোয়েলের ডিমের গড় ওজন ১০-১২ গ্রাম।
কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং এবং যত্নঃ সদ্য ফুটন্ত কোয়েলের বাচ্চা খুবই ছোট থাকে, ওজন মাত্র ৫-৭ গ্রাম। এ সময় যে কোন রকম ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনার প্রভাব দৈহিক বৃদ্ধি, ডিম উৎপাদন এবং বেঁচে থাকার উপর পড়ে। এমতাবস্থায় খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান এবং কাম্য তাপমাত্রা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বজায় রাখতে হবে। বাচ্চাকে ব্রুডিং বা তাপ দেওয়া খাঁচায় এবং লিটারে করা যায় ।
 ব্রুডিংকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা
বাচ্চার বয়স
তাপমাত্রা
প্রথম সপ্তাহ
৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৯৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট)
দ্বিতীয় সপ্তাহ
৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৯০ডিগ্রী ফারেনহাইট)
তৃতীয় সপ্তাহ
৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৮৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট)
চতুর্থ সপ্তাহ
২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৮০ ডিগ্রী ফারেনহাইট)
ইনকুবেটরে বাচ্চা ফুটার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্রুডিং ঘরে এনে প্রমে গুকোজ এবং এমবাভিট ডলিউ এস পানির সংগে পর পর তিনদিন খেতে দেয়া ভাল এবং পরে খাদ্য দিতে হবে। প্রম সপ্তাহ খবরের কাগজ বিছিয়ে তার উপর খাবার ছিটিয়ে দিতে হবে এবং প্রতিদিন খবরের কাগজ পরিবর্তন করতে হবে। এক সপ্তাহ পর ছোট খাবার পাত্র বা ফ্লাট ট্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। পানির পাত্রে বাচ্চা যাতে পড়ে না যায় সে জন্য মার্বেল অথবা কয়েক টুকরা পাথর খন্ড পানির পাত্রে রাখতে হবে। সর্বদাই পরিস্কার পরিচছন্ন পানি সরবরাহ করতে হবে
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ