আজকালকার বিয়েতে মধুচন্দ্রিমা বিয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সবাই বিয়ের পর সামর্থ্য অনুযায়ী নববধূকে নিয়ে ঘুরতে যায়। একে অপরকে কাছ থেকে চেনা, বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে একে অপরের সঙ্গী হওয়ার প্রাথমিক মহড়া হয়ে যায় হানিমুনে গিয়ে। দাম্পত্য জীবনের বোঝাপড়া গড়ে তোলার মোক্ষম সুযোগ মধুচন্দ্রিমা। একান্তে সময় কাটানোর জন্য এর বিকল্প নেই। তবে কাছে কিংবা দূরে, যেখানেই হোক না কেন জায়গাটা হওয়া চাই সুন্দর, শান্ত ও নিরিবিলি

দেশে

কক্সবাজার কিংবা ইনানী

মধুচন্দ্রিমার জন্য দেশের মধ্যে কক্সবাজার সবচেয়ে জনপ্রিয় স্পট। যদি কক্সবাজার বিচকে কোলাহলপূর্ণ মনে হয় তাহলে যেতে পারেন ইনানী বিচে। নিরিবিলিতে থাকার জন্য ইনানী সৈকত খুব ভালো। কক্সবাজারে ইকো রিসোর্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মানের পাঁচতারা হোটেলও আছে।

সেন্ট মার্টিনস আর ছেঁড়া দ্বীপ

সেন্ট মার্টিনসের সৈকত বেশ মোহনীয়। টেকনাফ থেকে জাহাজে করে যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। যাওয়ার পথে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভক্তকারী নাফ নদের ওপর নানা ধরনের সামুদ্রিক পাখির ওড়াউড়ি আর দুই পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারবেন। সেন্ট মার্টিনসে গেলে দিনে দিনে ঘুরে আসতে পারবেন দেশের সর্বদক্ষিণের স্থান ছেঁড়া দ্বীপ থেকে। এখানে পর্যটন করপোরেশনের নিজস্ব রিসোর্ট ছাড়াও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন হোটেল-কটেজ গড়ে উঠেছে।

বান্দরবান কিংবা খাগড়াছড়ি

চট্টগ্রাম থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ি জনপদ বান্দরবান। পাহাড়ের বুকে ভাসা ভাসা মেঘের খেলা আর প্রিয়জনের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে চলে যেতে পারেন সেখানে। নীলগিরি ছাড়াও দেখতে পাবেন স্বর্ণমন্দির, মেঘালয়সহ অনেক কিছু। আর চান্দের গাড়িতে চড়ে শহর থেকে নীলগিরি যাওয়ার পথে অন্য রকম রোমাঞ্চ পাবেন। যেতে পারেন খাগড়াছড়ির সাজেক ভ্যালি, নাফাখুম ঝরনা কিংবা বগা লেকেও। পর্যটন করপোরেশনের নিজস্ব রিসোর্ট ছাড়াও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন হোটেল-কটেজ গড়ে উঠেছে এখানে। তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই বুকিং দিয়ে যাবেন।

রাঙামাটি

মধুচন্দ্রিমার আরেকটি গন্তব্য হতে পারে রাঙামাটি। এখানকার কাপ্তাই লেক, ঝুলন্ত সেতু, ঝরনা আপনার হানিমুনকে আরো মধুর করবে। থাকার জন্য পর্যটন করপোরেশনের মোটেলসহ অনেক রিসোর্ট রয়েছে। রাঙামাটিতে থাকার জন্য হোটেল প্রিন্স, হোটেল সুফিয়া, আরণ্যক কটেজ, পর্যটন মোটেলসহ বেশ কিছু হোটেল ও মোটেল আছে। যাওয়ার আগে বুকিং দিয়ে যেতে পারলে ভালো।

সুন্দরবন

বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী প্রশস্ত বনভূমি সুন্দরবন বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলাজুড়ে বিস্তৃত। তবে এখানে বেড়াতে অবশ্যই কোনো ট্রাভেল এজেন্সির (ভ্রমণ সংস্থা) সঙ্গে যেতে হবে। ঢাকা ও খুলনার বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি সুন্দরবনে নিয়মিত প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজন করে থাকে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই গাইডসহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেবে।

শ্রীমঙ্গল, সিলেট

আপনার মধুচন্দ্রিমার গন্তব্য হতে পারে একটি কুঁড়ি দুটি পাতার সিলেট। জাফলং, হালের বিছনাকান্দি আর রাতারগুল বন তো আছেই। ঘুরে আসতে পারেন চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গল থেকেও। এখানকার চা বাগান ছাড়াও ঘুরে বেড়াতে পারেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর হ্রদ ইত্যাদি জায়গায়। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে শ্রীমঙ্গলে বেশ কটি আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট রয়েছে।

কুয়াকাটা, পটুয়াখালী

সাগরকন্যা কুয়াকাটা। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সৈকত অন্যতম নৈসর্গিক জায়গা। এটিই বাংলাদেশের একমাত্র সৈকত, যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটিই দেখা যায়। মধুচন্দ্রিমার জন্য এ জায়গাটিও বেছে নিতে পারেন। থাকা-খাওয়ার জন্য বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রিসোর্ট পর্যটন হলিডে হোমস রয়েছে। আছে পর্যটন ইয়ুথ ইন। এ ছাড়া বেসরকারি কিছু হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে।

দেশের বাইরে

বালি, ইন্দোনেশিয়া

হানিমুনের জন্য ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ শুধু এশিয়ায় নয়, সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। বালি দ্বীপের সমুদ্রসৈকতগুলোর মধ্যে বিশেষ করে নুসাডুয়া, কুতা, পাদং পাদং, বালাঙ্গন, লভিনা ও নুসা লেম্বঙ্গান হানিমুনের জন্য বিখ্যাত। সূর্যাস্ত দেখার জন্য কুতা ও লভিনা সৈকতের অনেক নামডাক আছে। সারা বছরই বালিতে পর্যটক আসে।

দেখতে পারেন

উলুয়াটু, পুরা তানালথের মতো বিখ্যাত মন্দিরগুলো সমু্দ্র আর লেকের তীর ঘেঁষে। অসাধারণ সৌন্দর্যে ঘেরা। উবুদের পাথর আর কাঠের ভাস্কর্য দেখা এক বিরল অভিজ্ঞতা। এখানকার হস্তশিল্পের কাজ খুব নিখুঁত। কিনতামানির মাউন্ট বাটুর আগ্নেয়গিরি এবং সবুজ জলের লেকের পাড়ে মাউন্ট আগুংয়ের সৌন্দর্য দেখে চোখ ফেরানো কঠিন।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বালি যাওয়ার জন্য সরাসরি কোনো বিমান নেই। ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর বা কুয়ালালামপুর হয়ে যেতে হয়। সম্ভাব্য এয়ারলাইনস মালিন্দো, টাইগার, রিজেন্ট এয়ার, বাংলাদেশ বিমান, মালয়েশিয়ান এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস ইত্যাদি।

খরচ (আনুমানিক)

বিমানভাড়া ৪৫ হাজার টাকা (যাওয়া-আসা) থেকে শুরু। চারতারা মানের হোটেলের প্রতি রাতের ভাড়া সাত হাজার টাকা থেকে শুরু। যাতায়াত ও খাবারের খরচ জনপ্রতি প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু। অন্যান্য খরচ অর্থাৎ ওয়াটার স্পোর্টস বা অন্যান্য রাইডের খরচ আপনার পছন্দের ওপর নির্ভর করবে। জনপ্রতি অন্তত ১০ হাজার টাকা বাজেট রাখলে কিছু কিছু রাইড উপভোগ করা যাবে।

মালদ্বীপ

দ্বীপের দেশ মালদ্বীপ। হানিমুনের জন্য এক চমৎকার গন্তব্য। মাথার ওপর নীল আকাশ, দিগন্তবিস্তৃত জলরাশি। স্বচ্ছ নীল জলের গভীরে রংবেরঙের মাছ সাঁতার কেটে বেড়ায়। বিশেষ করে হানিমুনের জন্যই এখানে অনেক ভিলা, রিসোর্ট আর বাংলো আছে। দুই বা তিন দিনের হানিমুনের জন্য মালদ্বীপ এক আদর্শ গন্তব্য। আর হাতে পাঁচ-ছয় দিন সময় থাকলে মালদ্বীপের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাও ঘুরে দেখতে পারেন।

দেখতে পারেন

ইসলামিক সেন্টার, মালে ফ্রাইডে মসজিদ, সুনামি মনুমেন্ট, জাতীয় জাদুঘর, মালে ফিশ মার্কেট, লোকাল মার্কেটসহ হস্তশিল্পের অনেক কিছু দেখার আছে মালদ্বীপে। তবে এখানকার দ্বীপগুলোর সৌন্দর্য সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে সারা বিশ্বের পর্যটকদের। সময় পেলে হুলহুমালে, হুলহুলে, ভিলিঙ্গিলি আর মিধু দ্বীপের মতো কয়েকটি দ্বীপ ঘুরে দেখুন।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে মালদ্বীপ যাওয়ার জন্য সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। কলম্বো বা চেন্নাই হয়ে যেতে হয়। সম্ভাব্য এয়ারলাইনস শ্রীলঙ্কান এয়ার ও মালদিভানস।

খরচ (আনুমানিক)

বিমানভাড়া ৪৮ হাজার টাকা (যাওয়া-আসা) থেকে শুরু। চারতারা মানের হোটেলের প্রতি রাতের ভাড়া ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের পর্যটকদের বেশির ভাগই মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা একসঙ্গে ভ্রমণ করে। কারণ বিমানভাড়া প্রায় একই। শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস ঢাকা থেকে মালদ্বীপ যাওয়া-আসার সময় কলম্বোতে নামে। সুতরাং আপনি একই বিমানভাড়ায় শ্রীলঙ্কাও বেড়াতে পারছেন। মোটামুটি জনপ্রতি এক লাখ টাকা বাজেট রাখলে ৫ রাত ৬ দিনে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপে মাঝারি মানের হানিমুন সেরে আসতে পারবেন।

নেপাল

হিমালয়কন্যা নেপাল। মাউন্ট এভারেস্টসহ গগনচুম্বী সব পর্বতের দেশ। হিমহিম ঠাণ্ডা। হানিমুন হবে মেঘের রাজ্যে। নেপালের দুটি জায়গা—নাগরকোট আর পোখারা হানিমুনের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

দেখতে পারেন

নেপাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ। প্রকৃতিই এখানকার প্রাণ। আর কাঠমাণ্ডুতে দরবার স্কয়ার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। আশপাশেই আছে অনেক দৃষ্টিনন্দন মন্দির। কেনাকাটার জন্য থামেলে যেতে পারেন। প্রাচীন শহর পাটান আর ভক্তপুর দেখে নিতে পারেন অনায়াসেই। পোখারার ফেওয়া লেকে নৌকা চালানো এবং শরণকোটে সূর্যোদয় দেখা কোনোভাবেই মিস করা উচিত হবে না।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং ইউনাইটেড এয়ার কাঠমাণ্ডু যাতায়াত করে।

খরচ (আনুমানিক)

বিমানে ঢাকা থেকে কাঠমাণ্ডু যাওয়া-আসার ভাড়া ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু। তিনতারা মানের হোটেলের প্রতি রাতে ভাড়া ছয় হাজার টাকা থেকে শুরু। আনুমানিক জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা বাজেটে নেপালে হানিমুন করা সম্ভব।

ভুটান

ছোট্ট কিন্তু পৃথিবীতে একক অনন্য দেশ এই ভুটান। বলতে গেলে পুরো দেশটাই পার্বত্য এবং সংরক্ষিত। অনুমতি না নিয়ে রাজধানী পারো আর থিম্পু ছাড়া কোথাও যাওয়া যায় না। বাংলাদেশের অনেক পর্যটক অনুমতি নিয়ে বড়জোর ভুটানের প্রাচীন রাজধানী পুনাখা দেখতে যায়। পুরো দেশের ৬৮ শতাংশই অরণ্য এবং তা সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত। কেউ কাটতে পারবে না। পরিবেশ ও প্রকৃতিসচেতন এমন দেশ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশটিকে সুখী মানুষের দেশ বলা হয়।

দেখতে পারেন

ভুটানের মূল আর্কষণ এর প্রাকৃতিক দৃশ্য। থিম্পু ও পারোতে মন্দির, জাদুঘর, মনুমেন্টসহ স্থানীয় বাজার ও হস্তশিল্পের অনেক কিছু দেখার আছে। আছে চিড়িয়াখানা এবং সংরক্ষিত অভয়ারণ্য ও ন্যাশনাল পার্ক।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে শুধু ড্রুক এয়ার সপ্তাহে তিন দিন পারো যাতায়াত করে।

খরচ (আনুমানিক)

বিমানে ঢাকা থেকে ভুটান যাওয়া-আসার ভাড়া ২৩ হাজার টাকা থেকে শুরু। ভালো চারতারা মানের হোটেলের প্রতি রাতের ভাড়া ছয় হাজার টাকা থেকে শুরু। আনুমানিক জনপ্রতি ৪০ হাজার টাকা বাজেটে ভুটানে হানিমুন করা সম্ভব।

ভারত

ভারতে হানিমুন করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এখানে যেমন সমুদ্র আছে, তেমনি আছে পর্বত, মরুভূমি আর তুষাররাজ্য।

কোথায় এবং কেন যাবেন

সমুদ্রের অপার্থিব ছোঁয়া পেতে দক্ষিণের আন্দামান ও কেরালা দ্বীপের তুলনা নেই। ভূস্বর্গ কাশ্মীর অথবা হিমাচলের সিমলা-মানালিতে তুষারপাত দেখার জন্য বারবার ফিরে আসতে চাইবে মন। রাজস্থানের জয়সলমিরে গেলেই থর মরুভূমির দেখা পেয়ে যাবেন। মরুভূমিতে রাতে যারা ক্যাম্পিং করেছেন তাঁরা জানেন রাত কতটা স্বপ্নময় হতে পারে। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় যে মেঘালয়ে, সেটাও এই ভারতেই। আমাদের সিলেট থেকে চেরাপুঞ্জি যেতে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। তাই হানিমুনের জন্য কম বাজেটে ভারত এক আদর্শ গন্তব্য।

সেরা সময়

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—এই তিন মাস বাদ দিয়ে বছরের যেকোনো সময়ই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে যাওয়া যেতে পারে। সমুদ্রপথে জাহাজে চলে যান আর বিমানে ফিরে আসুন। মহাসমুদ্রে দুই দিনের জাহাজযাত্রা দারুণ রোমাঞ্চকর! হানিমুনের জন্য শীত-গ্রীষ্মের মাঝামাঝিই সেরা সময়। এ সময় কেরালায়ও যেতে পারেন। রাজস্থানে বেড়ানোর সেরা সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। সিমলা-মানালিতে তুষার দেখতে যাবেন জানুয়ারি মাসে। তুষারে স্কি করার দারুণ অভিজ্ঞতা! আছে স্নো বোর্ডিং, স্নো মোবাইল, স্নেডিং ইত্যাদি করার সুযোগ। তুষারক্রীড়ার সবচেয়ে ভালো আসর বসে সোলাং ভ্যালিতে। তবে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত (অর্থাৎ বর্ষার সময়টা) এড়িয়ে চলুন। মার্চ-এপ্রিল কাশ্মীরের জন্য সেরা সময়।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা বিমানে কলকাতা হয়ে ভারতের এই গন্তব্যগুলোতে যাতায়াত করতে পারেন। শুধু আন্দামান যেতে জাহাজে বা বিমানে যেতে হবে। ঢাকা থেকে প্রতিদিন বাস ও বিমান এবং সপ্তাহে তিন দিন ট্রেন কলকাতা যায়।

খরচ (আনুমানিক)

নানা জায়গার খরচ নানা রকম। সিমলা-মানালি (৮-১০ দিন) জনপ্রতি ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে (৬-৭ দিন) জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা লেগে যাবে। কেরালায় (অন্তত ১২ দিন) জনপ্রতি ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু। রাজস্থানে (অন্তত ১০-১২ দিন) জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু।

হোটেলের খোঁজ

হোটেল খোঁজার জন্য এই তথ্য-প্রযুক্তির যুগে আর কোনো ঝামেলাই নেই। ভিজিট করুন :

www.booking.com

www.agoda.com

www.tripadvisor.com

www.trivago.com এর মতো সাইটগুলোতে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুবিধার জন্য এখানে হোটেল রুমের ছবি, লোকেশন, দূরত্ব, মূল্যসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য দেওয়া থাকে। বেছে নিন আপনার পছন্দের হোটেলটি। আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড থাকলে আপনি নিজেই অনলাইন থেকে হোটলে রুম বুকিং নিতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে বুকিং বাতিল হলে বা পরিবর্তন হলে অনেক সময় ঝামেলায় পড়তে পারেন। বিস্তারিত তথ্য, পরামর্শ এবং ভালো সেবা পাওয়ার জন্য আপনার নিকটস্থ ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

হানিমুন প্যাকেজের নির্ভরযোগ্য কয়েকটি ট্যুর অপারেটরের ফোন নম্বর

বিয়ন্ড অ্যাডভেঞ্চার অ্যান্ড ট্যুরিজম : ০১৯১৪০৯৯৭০০

ট্রিপ মেকার : ০১৭১১৫২১২৩৯

বাংলাদেশ ভ্যাকেশন : ০১৭৪৪৬২৯৪২৯

স্কাই হলিডেজ : ০১৯২৬৬৯৪৫৬০

গ্রিন হলিডেজ : ০১৭৩০৪৫০০৯৯

আরো কিছু গন্তব্য

থাইল্যান্ডের ফুকেট বা কোসুমাই কিংবা মালয়েশিয়ার বোর্নিও বা কোটা কিনাবালু দ্বীপের মতো অনেক দ্বীপ আছে, যা হানিমুনের জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত। কাছেই আছে মিয়ানমারের বিখ্যাত নাপালি সৈকত। আছে শ্রীলঙ্কাও। যেতে পারেন সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন বা মরিশাসেও।

হানিমুনের পঞ্চমন্ত্র

♦ হানিমুনে দুজন নতুন মানুষ নিজেদের আরো ভালো করে জানার সুযোগ খুঁজে নেয়। তাই হানিমুন ট্যুরকে খুব বেশি ঝক্কি-ঝামেলার করতে নেই। সব সার্ভিস আগেই বুক করে নিন।

♦ ঘুরে বেড়ানোর চাপে দুজনের একান্তে গল্প করার সময়টা যেন আবার হারিয়ে না যায়। হানিমুনে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে যাতে ঝগড়া হতে না পারে সেদিকে দুজনই খেয়াল রাখবেন।

♦ হানিমুনের স্মৃতি আমৃত্যু স্মরণীয় হয়ে থাকে। তাই এ ভ্রমণকে স্মরণীয় করতে বিশেষ মুহূর্তগুলোর ছবি তুলুন।

♦ ভ্রমণে খরচ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু হানিমুনে খরচটাই প্রধান নয়। তাই যতটা সম্ভব আপনার ভ্রমণকে ঝামেলামুক্ত ও আনন্দময় করে তুলুন।

সতর্কতা

♦ সময় নিয়ে দুজনের মত নিয়ে একসঙ্গে পরিকল্পনা করুন। তাড়াহুড়া করবেন না।

♦ ভ্রমণ পরিকল্পনায় ব্যস্ত শিডিউল এড়িয়ে চলুন। এই কটি দিন কাজকর্ম বাদ দিয়ে নিজেকে ঝামেলামুক্ত রাখুন।

♦ যতটা সম্ভব কম লাগেজ রাখুন।

প্রয়োজনীয় তথ্য

ঢাকা থেকে সরাসরি বাসযোগে কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিনস, বান্ধরবান, রাঙামাটি ও সিলেটে যাওয়া যায়। শ্যামলী, সৌদিয়া, ডলফিন, হানিফ, সেন্ট মার্টিন পরিবহন, গ্রীন লাইন, স্টার লাইন, এনাসহ বিভিন্ন পরিবহন ঢাকা থেকে এসব জায়গায় নিয়মিত যাতায়াত করে। এ ছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, নভো এয়ার ও ইউএস বাংলার বিমান সার্ভিসও আছে।

দেশের মধ্যে ট্যুর আয়োজন করে এমন প্রতিষ্ঠান

সেন্ট মার্টিন ট্যুরিজম লিমিটেড

৩৭/বি পুরানা পল্টন লেন, ঢাকা।

ফোন : ০১৭১৫৭৫৪০০৪

হিল ট্যুরিজম

ফোন : ০১৮১৫৮৫৬৪৯৭

দ্য গাইড ট্যুরস লিমিটেড

বাড়ি-১৪২, রোড-১২, ব্লক-ই, বনানী, ঢাকা।

ফোন : ৯৮৬২২০৫

দ্য বেঙ্গল ট্যুরস লিমিটেড

বাড়ি-৪৫, রোড-২৭, ব্লক-এ, বনানী, ঢাকা।

ফোন : ০১৭৭৫১০৫৩৫১

ওয়ান্ডার লাস্ট

এ কে কমপ্লেক্স, স্যুট-৯, ১৯ গ্রিন রোড, ঢাকা।

ফোন : ০১৫৫২৪৮৪২০১

হাতিল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস

হাতিল টাওয়ার, ৮ শেওড়াপাড়া, বেগম রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা। ফোন : ০১৭১১৫৩৭৭০২

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ