শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের রাশ টানতে বিশ্বের বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি জরুরি। আর এর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হলো টিকা গ্রহণ। টিকা নেওয়ার পর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা করোনা ঠেকাতে কাজ করে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে টিকাদান শুরু হয়েছে।


কাদানের তোড়জোড় চলছে অনেক দেশে। এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিশ্বের সব মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়া। এদিকে নতুন নতুন টিকাও আসছে। বেশ কিছু টিকা আছে ট্রায়াল পর্যায়ে। শনিবার চীন তাদের দ্বিতীয় টিকার অনুমোদন দিয়েছে।


করোনার টিকার কোনো নির্ধারিত নাম নেই। এই টিকা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে প্রচলিত। নিচে কয়েকটি টিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :- 


টিকা তৈরিতে এগিয়ে থাকা তিনটি বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এর মধ্যে ফাইজার ও মডার্না আরএনএ প্রযুক্তির টিকা তৈরি করেছে। এ প্রযুক্তিতে এতে দ্রুত টিকা তৈরি করা সম্ভব। এতে ভাইরাসের জেনেটিক কোডের ক্ষুদ্র একটি অংশ দেহে প্রবেশ করানো হয়। এতে করোনাভাইরাসের একটি অংশ তৈরি করতে শুরু করে এবং শরীর এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ প্রযুক্তির টিকা যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেয়েছে। অন্যদিকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাটি আলাদা। এতে নিরীহ ভাইরাস ব্যবহার করে শরীরে জেনেটিক উপাদান প্রবেশ করানো হয়। এ টিকাটি যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে অনুমোদন পেয়েছে। অক্সফোর্ডের টিকাটি অন্য দুটি টিকার চেয়ে প্রয়োগ ও সংরক্ষণ করা সহজ। সব কটি টিকার দুটি ডোজ করে দিতে হয়। তবে যুক্তরাজ্য যতটা সম্ভব বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং দ্বিতীয় ডোজ দিতে দেরি করছে। নতুন আরও দুটি টিকা বাজারে আসার পথে। একটি নোভাভ্যাক্স আর অপরটি হলো জেনসেন। যুক্তরাজ্যে বৃহৎ পরিসরে নোভাভ্যাক্সের টিকার পরীক্ষা চালানো হয়। এই পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নোভাভ্যাক্সের টিকা ৮৯ দশমিক ৩ শতাংশ কার্যকর। নোভাভ্যাক্সের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়। আর জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি টিকা মাঝারি ও গুরুতর পর্যায়ের কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ৬৬ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করেছে। বিশ্বব্যাপী তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। তবে জনসন জানিয়েছে, শুধু গুরুতর পর্যায়ের কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকাটি ৮৫ শতাংশ কার্যকর। এই টিকা তৈরিতেও অক্সফোর্ডের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে জনসনের টিকা এক ডোজের।

ইউরোপীয় দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিভিন্ন দেশে উল্লেখ করার মতো টিকা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার দ্বিতীয় টিকার অনুমোদন দিল চীন। দেশীয় প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেকের তৈরি ‘করোনাভ্যাক’ এ অনুমতি পেয়েছে। সিনোভ্যাক জানিয়েছে, তাদের টিকা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের জন্য ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, উরুগুয়ে ও লাওসে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত ডিসেম্বরে চীন প্রথম টিকা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের তৈরি টিকা করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহারের অনুমতি দেয়। এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও দক্ষিণ আমেরিকার অনেকগুলো দেশের সঙ্গে চীনের চুক্তিও হয়েছে। এই মধ্যে দেশটির ১০ লাখ মানুষকে সিনোফার্ম টিকা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ২ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাশিয়ার তৈরি টিকা স্পুতনিক-ভি ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। করোনার উপসর্গ থাকা ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই কার্যকারিতা ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ। এই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এমন দাবি করা হয়। এর আগে টিকাটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন বিশ্লেষণে দাবি করা হয়েছিল এটা ৯৫ শতাংশ কার্যকর। চূড়ান্ত পরীক্ষার আগেই রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশে করোনা ঠেকাতে স্পুতনিক-ভি মানবদেহে প্রয়োগ শুরু হয়েছে।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

এই পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫-৬ টি ভ্যাকসিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে যে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হচ্ছে তা হলো ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি একটি ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিনটির ভারতের উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে সিরাম ইন্সটিটিউট। ভারতে স্থানীয়ভাবে যার নাম দেয়া হয়েছে 'কোভিশিল্ড (Covishield ), এছাড়াও এর আরো একটি নাম রয়েছে তা হলো Vaxzevria, তবে এটি অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা / ভ্যাকসিন নামে অধিক পরিচিত। বাংলাদেশ সরকার ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট এর কাছ থেকে ভ্যাকসিনটি কিনেছে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ